আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রবাসের ডায়েরী-১১: ভেরার দেশে ৮ ঘন্টা

oracle.samu@googlemail.com
শীত শেষে বরফ বিদায় নিলেও শুভ্রতা আমার পিছু ছাড়ছে না। এর আগে লিখে ছিলাম স্কটল্যান্ড ভ্রমন নিয়ে 'প্রবাসের ডায়েরী-১০: বরফ সাদা স্কটল্যান্ড '। এবার লিখছি যুক্তরাজ্য বা United Kingdom(the UK or Britain) এর আরেক দেশ ওয়েলস নিয়ে। জানেন নিশচই যুক্তরাজ্য হল ৪ টি দেশের সমষ্টি England, Northern Ireland, Scotland and Wale আগেই বলেছি শীত শেষে ব্রিটেনে এখন সামার, চারদিক রংবেরঙ্গের ফুল আর নতুন গজানো পত্র-পল্লব শোভিত সবুজের সমারহ। দিন যত যাচ্ছে সৌন্দর্যের দেবী আফ্রোদিতি যেন শীতনিদ্রা থেকে আড়মোড় ভেঙ্গে সৌন্দর্যের মেলা বসাচ্ছে।

বরাবরের মত মার্কোপোলো স্টুডেন্ট ক্লাবের ৬১ মেমবারা দুই বাসে সাওয়ার হয়ে যাত্রা শুরু নর্থ ওয়েলসের উদ্দেশ্য। সকাল ৭ টার শুরু বলে ঘুম তখনও দু-চোখ জুড়ে। তবে সূর্য মামা আগের চেয়ে অনেক একটিভ আজ, ঘড়ির কাটা আটের ঘর ছুতেই চারদিক সোনালী আলোয় ঝকমকে; তাপমাত্রাও বেশ ২০ ! যেন বাংলাদেশের আবহাওয়া ফিরে পেলাম। যাচ্ছি নর্থওয়েলস, উদ্দেশ্য পাহাড় আর সমুদ্র দর্শন। ইংল্যান্ডের সীমা পেড়িয়ে ওয়েলসে ঢুকতেই উচু পাহারের সারি চোখে পড়ল; যেন হাত নেড়ে বলছে welcome to Wales! পাহাড় যুড়ে সবুজের সমারহ আর ফাকা প্রান্তর তবে নিরজীব নয়, গুটি গুটি পায়ে হেটে বেরাচ্ছে সাদা ভেরার পাল।

ভেরা আর ভেরা যত দূর চোখ যায় সবুজের গালিচায় সাদার রাজত্য যেন এটা ভেরারই দেশ এ কারনেই লেখার শুরুতে বলছিলাম বরফ বিদায় নিলেও সুভ্রতা আমার পিছু ছাড়ছে না। ভেরা দেখতে দেখতে যখন তেক্ত-বিরক্ত তখনই শুরু হল পাহাড়ের রাজত্য, সগর্ভে মাথা উচু করে যেন আকাশ ছুতে চাইছে। চুড়ায় জমা সফেদ বরফ যেন রাজ মুকুট হয়ে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। গাড়ি এই বাঁক ঘোরার সময় আত্তারাম প্রায় খাচা ছাড়া হবার যোগার হয়ে ছিল পাহাড়ের রুখ্যতার মাঝে মমতার পরশ বুলিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছরা আর চোট-বড় হ্রদ। ইচ্ছে করছিল বাস থামিয়ে নেমে পড়ি, ঝাপ দেই হ্রদের সচ্ছ রুপালী জলে।

আমাদের প্রথম যাত্রা বিরতী ওয়েলসের ছোট্ট শহর লেংগোফল্যান্ড। এখানে এসে পরিচয় ঘটল ওয়েলশিয়ান ভাষার সাথে। ইংলিশের অত্যাচারে ভাষাটা হারিয়ে যায়নি। স্কুলে ওয়েলশিয়ান শেখা বাধ্যতামূলক। আমিও শিখেছি ২-৪ টা দিওয়খখ দিইই ভাওর মানে ধন্যবাদ।

ও হ্যা এখানে রেলের স্টিম ইন্জিনের দেখা পেয়েছি। স্টিম ইন্জিনে টানা টুরিস্ট কোচে চেপে শহর দেখতে টিকেট কাটতে হয় কম্পিউটার চালিত অটমেটেড সিসটেমে ঐতিয্য আর প্রযুক্তির কি অপূর্ব সমন্বয় পড়ের যাত্রা বিরতী কেনর্ফন কেসেল। কেসেল, পোর্ট, সুভিনির শপে ঘোরাঘুরি খাওয়া দাওয়া করে টেরই পাইনি কোথা দিয়ে ৩ ঘন্টা পার হয়ে গেছে। শেষ গন্তব্য সমুদ্রতীরবর্তি ইটালিয়ান শহর পোর্টমেরিওন। কি অবাক হচ্ছেন নিশচই, ব্রিটেনে আবার ইটালিয়ান শহর আসল কোথা থেকে? পোর্টমেরিওন প্রকৃতি আর মানুষের সৃষ্টিশীলতার এক অপূর্ব নিদর্শন।

৬০ বছর আগে এক ইটালিয়ান স্থপতির নকশায় তৈরী নর্থওয়েলসের অন্যতম ব্যাস্ত টুরিস্ট রিসোর্টি দেখে বোঝাই যায়না এর অনেক নিছু কৃত্তিম; বিশেষ করে ইটালিয়ান কোস্টাল বৃক্ষরাজি দিন শেষে ফেরার পালা। বাসে বসে নর্থ সি দেখছি আর ছক কসছি পরবর্তি ট্রিপের। বাকি রইল শুধু নর্দান আয়ার্ল্যান্ড; ব্রিটেন দেখার চক্র পূর্ন হবে তাহলে। স্লেট পাহাড়। স্লেট মানে ছোটবেলার সেই লেখার চক -স্লেট।

ওয়েলসের প্রধান রফতানী পন্য। সব ছবি এখানে Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।