ভাগ্নেকে নিয়ে মার্কেটে গেলে সাধারণত এমন কোথাও যাওয়া হয় যেখানে হাঁটাচলার জায়গা থাকে অনেক। বেশির ভাগ সময় সে বসুন্ধরা সিটিতেই গিয়েছে, ওখানে বাচ্চাদর খেলার জায়গাও আছে বলে সময়টা ভালো কাটে।
আজকে আমি আর ছোট বোন নিউমার্কেট গেলাম, কিছু কেনাকাটা ছিল দুজনেরই। ভাগ্নেকেও সাথে নেয়া হল। সে এইবারই প্রথম নিউমার্কেট গেল।
প্রথমেই নিউমার্কেট দেখে সে ঘাবড়ে গেল। বলল, এই রোদের মধ্যে এইখানে হাঁটতে হবে? বললাম, জ্বী, খালি এসি মার্কেটে ঘুরলেই চলে না, আজকে এভাবেই হাঁটতে হবে।
নিউমার্কেটের কাজ শেষ করে ওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হলাম। ভাগ্নে খুব বিরক্ত হয়ে বলল, এভাবে সিড়ি দিয়ে খালি উঠলাম আর নামলাম, এটার মানেটা কী? সে বুঝতেই পারেনি যে আমরা রাস্তা পার হয়ে গাউছিয়া মার্কেটে চলে এসেছি। সেটা বলার পর অবাক হয়ে বলল, এখানে পাশাপাশি দুইটা মার্কেট? আমরা বললাম, দুইটা না, আরও আছে, দেখবা সবই।
চাঁদনী চকে গিয়ে ওর মাথাই খারাপ হয়ে গেল, এত এত জামা? হাঁটতে হাঁটতে গান ধরল, জামা জামা কত জামা।
এখানকার কেনাকাটা শেষ করে আবার ওভারব্রিজ পার হয়ে গেলাম দুবাই মার্কেটে। আরেকটা মার্কেট দেখে ভাগ্নে আবারও অভিভূত। একসাথে এত মার্কেট থাকতে পারে ও বিশ্বাসই করতে পারছে না। ফেরার সময় একটা সিএনজি অটোরিক্সা নিলাম।
মাঝরাস্তায় এসে দেখি ভাগ্নের চোখ ছলছল করছে। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে থমথমে গলায় বলল, কিছু হয়নি। কি হল বুঝলাম না, হয়ত বেশি হাঁটাহাঁটি করে শরীর খারাপ লাগছে। বাসায় পৌঁছে সিএনজি থেকে নামার পর দেখি সে আমার দিকে তাকিয়ে সবগুলো দাঁত বের করে হাসছে। এখন আবার কি হল বুঝলাম না।
বেশ কিছুক্ষণ ওভাবেই থাকল। এরপর বলল, আন্টিমনি তুমি তাহলে আমাদের বাসায় থাকবা? বেচারা এতক্ষণ এই মনে করে কাঁদছিল যে আমি মাঝরাস্তায় নেমে যাব।
শেষ করি ভাগ্নের অনেক পুরনো কাহিনী দিয়ে, যদিও এটা অপ্রাসঙ্গিক। ভাগ্নে আরেকটু ছোটবেলায় নিজেকে মেয়ে মনে করতে চাইত। মেয়েদের মত সাজতে পছন্দ করত।
ওর মা একবার ওকে কথায় কথায় বলেছিল যে বাবুরা যখন মামের পেটে থাকে তখন আলট্রাসনো করে বোঝা যায় ছেলে না মেয়ে, অনেক সময় মেয়ে হলে সনোলজিস্ট মিথ্যে করে বলে যে বোঝা যাচ্ছে না, যাতে মামের মন খারাপ না হয়। এই কাহিনী শুনে ভাগ্নে তার মাকে বলে, মাম, আমি আসলে মেয়ে, তোমাকে ডাক্তার মিথ্যা করে বলেছে যে ছেলে, যাতে তুমি মন খারাপ না কর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।