oracle.samu@googlemail.com
লেখাটা ড্রাফটে ছিল অনেক দিন, পড়া-শোনা আর অন্য বিষয়ে লেখা-লেখির কারনে শেষই হচ্ছিল না। তার উপর সামুতে ছবি আপলোড করার পেইন!
স্কটল্যান্ডে গেলাম ফেব্রুয়ারীর ২৬ তারিখ আর তা নিয়ে পোস্ট লেখা শুরু করি এই এপ্রিলে ! তাই শুরুতেই সৃতিশক্তির চরম পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে লিখতে বসেছি।
৩ দিনের শর্ট-টুর তাও আবার বাসে যেতে আসতেই সাত দুগুনে ১৪ ঘন্টা গায়েব। শীত তখনও শেষ হয়নি, এই সময়ে স্কটল্যান্ড যাত্রা তাই আমার মত উষ্ণদেশের পাবলিকের জন্য মরার উপর খরার ঘাঁ । পরিচিত সবাই ডিসকারেজ করছিল এই বলে যে, গ্রীষ্মের স্কটল্যান্ড আর শীতের স্কটল্যান্ডের মধ্যে নাকি প্রাসাদের রাজকুমারী আর পথের ধুলায় মলিন পাতাকুড়ানির মত পার্থক্য।
কিন্তু কি আর করা ৯০ পাউন্ডে স্কটল্যান্ড দর্শন আর রিসার্চ ল্যাবের আতঁলাম থেকে মুক্তির হাত ছানি সহজেই বরফ ঢাকা স্কটল্যান্ড জয়ের সাহস যোগাল।
২৬ তারিখ দুপুর আড়াইটায় শুরু হল যাত্রা, দেশি-বিদেশী ভাষার কিচির-মিচিরে প্রথম দুই-আড়াই ঘন্টা কিছু টের না পেলেও শীত যেন রাস্তার মাইলস্টোনগুলর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল। শেষ দিকে অনস্থা এমন হল যে কথা বলা ত দূরে থাক জানালা দিয়ে স্কটিশ রাত দেখতেই বিরোক্তি এসে যাচ্ছিল।
রাত সাড়ে ৯ টায় আমরা পার হলাম গ্লাসগো; স্কটল্যেন্ডের সব চেয়ে বড় শহর। মানুষ জন ও বেশী এখানে যদিও এডিনবার্গ হল স্কটল্যান্ডের রাজধানী শহর।
হায়! ঢাকা যদি এমন হত! রাত প্রায় ১১ টায় আমরা ১০০ স্টুডেন্ট বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উঠলাম এডিনবার্গের স্থানিয় ই্উথ হোস্টেলে। নাম ই্উথ হোস্টেল হলেও সুযোগ-সুবিধায় আমাদের দেশী ২-৩ তারা হোটের সাথে পাল্লা দিতে পারবে অনায়াসে সুতরাং সাথে আনা খাবার-দাবার পেটে পুড়ে দে ঘুম
সকালে উঠেই রেডি হলাম ব্যাস্ত দিনের প্রত্যাশায়। আজ আমরা দেখতে যাব স্কটিশ পর্লামেন্ট ও এডিনবার্গ ফোর্ট। ৮ টায় ব্রেকফাট শেষে আশ-পাশে একটা চক্কর দিলাম, বেশ শান্ত শহর এডিনবার্গ। ১০ টায়া যাত্রা শুরুর মথা থাকলেও পৌনে ১০ টায় হোস্টেলে এসে দেখি গাইড বেটা আমাদের ৬ বংগ সন্তানকে ফেলেই ছুট দিয়েছে সদল বলে ।
ভাগ্যিশ হেটে যাবার প্লেন ছিল তাই রক্ষে। কামাল ভাইয়ের নেতৃত্বে আর মেপ দেখে শুরু হল দিনের কর্ম সূচি। আমাদের কামাল ভাই আবার দারুন পথ প্রদর্শক
যেতে যেতে যা দেখলাম
এডিনবার্গ অনেকটা ইতালির রোমের মত, ৫-৭ টা পাহাড় ঘিরে আছে ইংল্যান্ডের রোম খ্যাত এডিনবার্গকে।
মূল দলের দেখা পেলাম এখানে
এর পর এসে হাজির হলাম স্কটিশ পার্লামেন্টে। বেশ ছিমছাম গোছান।
বেশ কয়েকটি ভাষায় অনুদিত বুকলেটের রেকে খুজে পেলার প্রিয় বাংলা বর্ণমালাকেও। আচ্ছা আমাদের জাতীয় সংসদকে ও কি এভাবে উন্মুক্ত কারা যায় না ? না হয় হাজার টাকার টিকেট কেটেই ঢুকলাম
এর পরে ঢু মারলাম পাশের মুউজিয়ামে, ছোট তবে বেশ সমৃদ্ধ।
এইটা একটা ঘরি !
শেষ গন্তব্য এডিনবার্গ কেসেল । বেশ পুরন ও শহরের সর্বোচ্চ পাহারের চুড়ায় অবস্থিত। এক কথায় অপুর্ব এক স্থাপত্য শিল্প।
কেসেল থেকে দেখা এডিনবার্গ শহর.........
টিপু সুলতানের তলোয়ার ও শিরনাস্ত্র। তাকে হত্যকারী ব্রিটিশ সৈন্যদলটি ছিল একটি স্কটিশ কনটিনজেন্ট।
পরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট শেষেই চড়তে হল ফিরতি বাসে মাঝে ৩ ঘন্টার যাত্রা বিরতি রাজকিয় ইয়ট রয়েল ব্রিটানিয়া দর্শনের জন্য। এইটা ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রিয় একটি নৌযান। প্রিন্স চার্লস ও লেডি ডায়ানার হানিমুনের সৃতি আকড়ে আছে এই ইয়ট।
হানিমুন কেবিন
ডিউক অফ এডিনবরার ব্যবহৃত কেবিন
রানীর কেবিন
ইয়টের আপারডেক ডাইনিং রুম
শেষ বিরতি ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের সীমান্ত শহর গেটেনা গ্রীন (নাম ভুলে গিয়েছিলাম। সবজান্তা গুগল মামুরে প্রশ্ন করতেই টেলেন্ট এক খান )। বেশ ছোট শহর তবে বিখ্যাত। আগেকার দিনে বাবা-মার অনুমতি ছাড়া বিয়ে করতে পারত না স্কটিশ প্রেমিক যুগল তাই পালিয়ে এই শহরে এসে বিয়ে করত স্কটিশ তরুন-তরুনিরা। আজও অনেক প্রেমিক যুগল বিয়ে করতে আসে এই শহরে যদিও বিয়ের ব্যাপারে স্কটিশ বাবা-মার খররদারির মৃত্যু ঘটেছে বেশ আগে।
এবার শুরু হল বাড়ি ফেরার পালা.......
আর ৫ ঘন্টা পরেই যাচ্ছি ওয়েলসে। আশা করি এটিও একটি ভাল টুর হবে। দোয়া করবেন।
কৃতজ্ঞতা: ব্লগার দাসত্য সহজে আপলোড করার একটা বুদ্ধি দেয়াতেই এতগুল ছবি শেয়ার করতে পারলাম। ধন্যবাদ দাসত্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।