গত দুই বছরে এক রতি সোনা আমদানিরও শুল্ক পায়নি সরকার। অথচ বাজারে সরবরাহে কমতি নেই। স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের আট থেকে ১০ হাজার গয়নার দোকানে প্রতিদিন প্রায় ২৫ কোটি টাকার স্বর্ণালংকার কেনাবেচা হয়। এই বিপুল পরিমাণ সোনা কোত্থেকে, কীভাবে আসছে, তা নিয়ে কোনো জবাবদিহি নেই। নেই যথাযথ নজরদারি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে এ বছরের প্রথম আট মাসে (২০ আগস্ট পর্যন্ত) আটক হয়েছে ২৩৪ কেজির বেশি সোনা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শুল্ক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিনই সোনা চোরাচালানের ঘটনা ঘটছে। ধরা পড়ছে কালেভদ্রে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), গোয়েন্দা বিভাগ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও শুল্ক কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেছেন, সোনা চোরাচালানে বিমান ও বিমানবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ সরাসরি জড়িত। তবে সোনা চোরাচালানে বিমানের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত আছেন কি না, সে ব্যাপারে মন্তব্য করতে চায়নি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সোনা আমদানির ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, তা তাঁদের জন্য ‘জটিল’ ও ‘অলাভজনক’। এ কারণে তাঁরা অবৈধ পথে আসা সোনার ওপর নির্ভর করেন। দেশের আইন অনুযায়ী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে সোনার বার বা ‘বিস্কুট’ আমদানি করা যায়। তবে এ আমদানি বাবদ প্রতি ভরির দাম ৪০ হাজার টাকা ধরে (১১ দশমিক ৬৬ গ্রাম) এর ভ্যাট/ট্যাক্স দিতে হয় চার হাজার টাকার বেশি। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই পরিমাণ ভ্যাট/ট্যাক্স দিয়ে গয়না আমদানি করে ব্যবসা করাটা অলাভজনক।
তবে কোনো ব্যক্তি বিদেশ থেকে আসার সময় ২০০ গ্রাম সোনা বা সেই ওজনের সোনার গয়না সঙ্গে নিয়ে আসতে পারেন। ঢাকা কাস্টম হাউসের শুল্ক কমিশনার জাকিয়া সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই বছরে এক রতি সোনা আমদানিরও শুল্ক পায়নি সরকার। তবে ২০১৩ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত ২১০ কেজি স্বর্ণ আটক করা হয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দরে। ২০১২ সালে একই বিমানবন্দর থেকে পাঁচ কোটি টাকার সমপরিমাণ ১১ দশমিক ৬৯ কেজি সোনা উদ্ধার করেছিল শুল্ক কর্তৃপক্ষ। তিনি আরও জানান, উদ্ধার করা সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়ে থাকে।
চট্টগ্রাম শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার শফিউর রহমান জানান, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত ২৪ দশমিক ৩৯ কিলোগ্রাম সোনা আটক করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুরোনো গয়না, প্রবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংক নিলাম করলে সেখান থেকে সোনা কেনেন তাঁরা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।