দেশে তীব্র গ্যাস সংকটের মধ্যে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বলেছেন, ২০১৬ সালের মধ্যে প্রতিদিন অতিরিক্ত ৬৮ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হবে। পেট্রোবাংলা এ গ্যাস উত্তোলন করবে। এর মধ্যে এ বছরের শেষ নাগাদ দিনে ১২ কোটি ঘনফুট এবং ২০১২ সালের মধ্যে দিনে ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। গত বছর শীতের শুরু থেকেই দেশে গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করলেও এই প্রথম পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এমন আশাবাদী বক্তব্য দিলেন।
কূপে পানি ওঠা, চাপ কমে যাওয়াসহ নানা কারণে পেট্রোবাংলার অধীনে থাকা ১২টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ আছে। দেশে তীব্র গ্যাস সংকট মোকাবিলার জন্য পেট্রোবাংলা তার অধীন সংস্থাগুলো দিয়ে এসব কূপ থেকে পুনরায় গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ২০১৬ সালের মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে ৯টি ওয়ার্কওভার এবং ২১টি উন্নয়ন কূপ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের জন্য পাঁচটি নতুন কূপও করবে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানটি। এগুলো হলো_শ্রীকাইল, কাপাসিয়া, নেত্রকোনা, সুন্দলপুর ও মোবারকপুর।
বিদেশি কম্পানিগুলোর হাতে থাকা ক্ষেত্রগুলোর বিষয়ে হোসেন মনসুর বলেন, জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের সম্প্রসারিত অংশ শেভরনকে দেওয়া হয়েছে। কম্পানির প্রাথমিক অনুসন্ধানে ওই এলাকা থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চয়তা মিলেছে। তিনি বলেন, সঞ্চালন লাইনের সংস্কারকাজ শেষ হলে বিবিয়ানা থেকে দিনে অতিরিক্ত ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।
চলতি বছর মেঘনা ঘাট-১ নম্বর কূপে রিগ স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকে দিনে দেড় কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া তিতাস-৪ নম্বর কূপ ওয়ার্কওভার করা হয়েছে। শিগগিরই সাড়ে তিন থেকে চার কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হবে। ইতিমধ্যে এ কূপ থেকে এক কোটি ঘনফুটের বেশি গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। হবিগঞ্জ-১১ নম্বর কূপ থেকে আগামী দুই মাসের মধ্যে সাড়ে তিন থেকে চার কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে দেশে প্রতিদিন ২৩০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ১৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
ঘাটতি ৪০ কোটি ঘনফুট। প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে চাহিদা বাড়তে থাকলে দিনে ২০১২ সালে ২৭৮ কোটি এবং ২০১৬ সালে ৪০৪ কোটি ঘনফুট গ্যাস দরকার পড়বে। সে ক্ষেত্রে দেশে বড় কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার না হলে এই বিপুল চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না।
এ প্রসঙ্গে হোসেন মনসুর বলেন, বাপেক্স যে পাঁচটি নতুন ক্ষেত্রে অনুসন্ধান চালাচ্ছে তার মধ্যে অন্তত তিনটিতে গ্যাস পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে নেত্রকোনায় খুব বড় মজুদ পাওয়ার আশা করছেন বলেও তিনি জানান।
(সংকলিত: কালের কণ্ঠ ,২১.০৪.১০)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।