আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একদিন গ্যাস নামক সোনার ডিম পাড়া হাঁসটি মরে যাবে > আমাদের যথেচ্ছা গ্যাস ব্যবহার বিলাসীতার পাপ বহন করবে ২৫ কোটি মানুষ

যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি
সরকার নির্ধারিত সামান্য কয়েকজন ডিলারের একটি ডিপোতে লম্বা লাইন! লাইনের মানুষগুলো সেই কাকভোরে উঠে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছে! সবাই পাবার আগে শেষ হয়ে গেলে খুনোখুনি লেগে যেতে পারে মনে করে নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া প্রহরা! তারই মধ্যে সিরিয়াল বিক্রি হচ্ছে শত শত টাকায়! পর পর দুইদিন না পেয়ে আজ পাওয়ায় এক জন সেই প্রাপ্য বস্তুটি বুকে আগলে দৌড় দিয়েছে! ওদের তো অন্য ধরণের সামর্থ নেই তাই আজ পাওয়ায় বাড়িতে অসুস্থ বাবার জন্য গরম ভাতের ব্যবস্থা হবে! এটি ভেবেই লোকটির চোখের কোণে জমে উঠেছে এক ফোঁটা আনন্দাশ্রু............. এই মহার্ঘ বস্তুটির নাম কেরোসিন! ২০৩০ কিংবা ২০৪০ সালের কোন এক দিনের ঢাকায় ঠিক এমনই একটি দৃশ্য দেখা যেতে পারে! ফেনানো গল্পের মত মনে হলেও এই বাস্তবতা হয়ত আমাদের অনেককেই ‘নিয়তি’ বলে মেনে নিতে হবে। মাটির তলেকার পাইপ লাইনগুলো যেখান দিয়ে চলে গেছে, সেখানকার মানুষেরা মাটি খুঁড়ে সেই পাইপ তুলে ভাংড়ি দোকানে বিক্রি করবে। খুব সকালে ঢাকা শহরের সব ইলেক্ট্রিক বাতিগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সন্ধ্যের একটু আগে আবার জ্বলে উঠবে পাওয়ার হাউসের মাধ্যমে। অ্যামুজমেন্ট বা বিলাসী শিল্প পণ্যের কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

তিন বেলা মাছে-ভাতে বাঙালির খাদ্যাভ্যাস বদলে যাবে। অধিকাংশ বাড়িতে দিনে মাত্র একবেলা রান্না হবে। ঢাকার রাজপথে এখনকার তুলনায় চল্লিশ বছর পরে যে হারে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবার কথা না না হয়ে ম্যানুয়াল যানবাহনে ছেয়ে যাবে ঢাকা। ঢাকার আসে-পাশে এখন যেমন ফিলিং স্টেশনের সংখ্যা গুণে শেষ করা যায়না, তখন এই জায়গা দখল করবে লাকড়ির দোকান। শত শত লাকড়ির দোকানে হাজার হাজার কাঠ চেরাই করার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে।

গভীর রাতেও শোনা যাবে হেহ্ শব্দে কাঠ চেরাই করছে আধুনিক মানুষ। রিকসা করে চ্যালা কাঠ নিয়ে বাড়ি ফিরছে আধুনিক রমণী! ঢাকার আশেপাশের গ্রাম আর মফস্বলের জেলা থেকে ট্রাক বোঝাই হয়ে আসছে চ্যালা কাঠ। ঝাঁ চকচকে মার্বেল-মোজাইকের ফ্ল্যাট বাড়িতে ‘অত্যাধুনিক কায়দায়’ মাটির চূলো তৈরি হয়েছে। বাড়ি বাড়ি কেরোসিনের স্টোভ বসে গেছে! অবস্থাসম্পনদের বাড়িতে কেরোসিনের মওজুদ নিয়ে এন্তার কাগজে লেখালেখি হচ্ছে! কোরোসিন মওজুদের বিরুদ্ধে সরকারি প্রজ্ঞাপনও জারি হচ্ছে! নাগরিক জীবনে যে দুটো বস্তু প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগে বিলিন হয়ে গেছিল সেই লাকড়ি আর কেরোসিন ফিরে এসেছে পুরোদমে। মানুষের জীবন কেরোসিন আর লাকড়িময় হয়ে ওঠায় সে সব ব্যবহারের উপর কর্মশালাও নিয়মিত হতে থাকছে....................... এই এতসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যে বস্তুটির অভাবে তার নাম গ্যাস।

জ্বালানী গ্যাস। যা এখন মুড়িমুড়কির মত আমরা ফেলে-ছড়িয়ে খাচ্ছি, বিলাচ্ছি, অপচয় করছি। আগামী ২০৩০ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার শেষ হয়ে যাবে। তখনকার নাগরিক জীবনের যে কল্পিত চিত্রটি আঁকা হলো সেটি ঠিক এই মুহূর্তে কল্পরাজ্যের কাশুন্দি মনে হলেও প্রকৃত অবস্থা এর চেয়ে খুব একটা উন্নততর কিছু হবে না হয়ত। বর্তমানের কনজাম্পশন, আগামী ৩০/৪০ বছর পরের বৃদ্ধি পাওয়া কনজাম্পশন যোগ করলে মাটির তলে যে মওজুদ আছে তা নিঃশেষ হয়ে যাবে।

হয়ত আমাদের আশঙ্কার চেয়েও দ্রুত নিঃশেষ হবে। ২৮ টি ব্লকের যে আশার বাণী শোনানো হচ্ছে তার সব কয়টি থেকেও যদি উত্তোলন করা হয় তবুও তা মোট চাহিদা মেটাতে পারবেনা, কারণ আজ থেকে ৩০/৩৫ বছর আগে যেসব খাতে গ্যাসের ব্যবহার ছিল তা বেড়ে শতগুণ হয়ে গেছে। একসময় যে সব কলকারখানা ফার্নেস ওয়েল, ডিজেল-এ চলত এখন তা গ্যাসে চলে। দেশে হাজার হাজার বয়লার জ্বলে গ্যাসে। উত্তরাঞ্চলের সামান্য কিছু বয়লার হাস্ক-এ চললেও সারা দেশে হাজার হাজার বয়লার রাতদিন গ্যাসে জ্বলছে।

বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে পাইপ লাইনে বাড়িতে গ্যাস দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার কত রকম কত ভাবে হতে পারে তার জ্বলন্ত নিদর্শন এই বাংলাদেশ। দেশের মোট বিদ্যুতের প্রায় ষাঁট ভাগই উৎপাদন হয় গ্যাসে। মোট কলকারখানার নব্বই ভাগ চলে গ্যাসে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, টাঙ্গাইল এবং ঢাকার আশেপাশে প্রায় ষাঁট থেকে সত্তর ভাগ যানবাহন গ্যাসে চলছে।

মাত্র বছর পাঁচেকের মধ্যে এই ঢাকায় দুই থেকে তিনশ’ গ্যাস কনভার্শন কারখানা গড়ে উঠেছে। প্রাইভেট কারগুলো রাতারাতি গ্যাসে কনভার্ট হয়ে গেছে। তিন থেকে সাড়ে তিন লাখে রিকন্ডিশন গাড়ি কিনে একশ’কুড়ি টাকার গ্যাস চার্জ কের বাবুরা দিব্বি হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছেন। সিএনজি কনভার্শন চালু হওয়ার পর দেশে গাড়ির সংখ্যা হু হু করে বেড়ে ঢাকার রাস্তার ধারণক্ষমতা অনেক আগেই শেষ করে দিয়েছে। এখন পুরোটা রাজপথ গাড়ির দখলে।

বিএনপি আমলে নাজমুল সাহেব ভারতের বাজাজ আর ইটালির কোম্পানীর সাথে যখন চুক্তি করলেন তখনই ইতালী বুঝে গেছিল ওই দেশে রাতারাতি লাখ লাখ গ্যাস সিলিন্ডারের দরকার পড়বে। ঠিক যেমন অংক করে ইউনূস সাহেব বুঝে নিয়েছিলেন বাঙালিকে একবার মোবাইল খাওয়াতে পারলে সে তো খাবেই, তার চোদ্দগুষ্ঠিও খাবে। শুধু খাবে না, খাবে আর ছড়াবে। সারা গায়ে মোবাইল মাখবে! মোবাইলময় জীবনে অভ্যস্থ হয়ে মোবাইল ম্যানিয়ায় আক্রান্তও হবে। ইউনূস সাহেব এলেমদার মানুষ, বাঙালির স্বভাব চেনেন! গ্যাস যে শেষ হবেই তাতে কারো সন্দেহ নেই, তবে ঠিক কবে থেকে শেষ হবে, কোন কোন খাতে আগে রেশনিং হবে, কোন খাত থেকে আগে তুলে নেওয়া হবে, কোন খাতে আর গ্যাস দেওয়াই হবেনা সেটি আমরা এখনো আন্দাজ করতে পারছিনা।

একটা পরিসংখ্যান দেওয়া যাকঃ Yearly Gas Sales 12,239.47 MMCM (2007-2008) Yearly Revenue Tk. 4,410.17 crores (2007-2008) Payment to the National Exchequer Tk. 285.67 crores No. of Customer (Upto 30th June, 2008) Total 13,50,187 nos. Power – 10 nos. IPP & SPP - 8 nos CIPP - 10 nos Fertilizer – 4 nos. Industrial – 4,184 nos. CNG - 169 nos Seasonal - 12 nos Captive Power - 750 nos Commercial – 9,831 nos. Domestic – 13,35,196 nos. Domestic Generator - 13 nos. কমার্শিয়াল উইজার্স সিনারিও! টোটাল কনজাম্পশনের ঘরটা খেয়াল করুন! এটা শুধু (BGFCL)তিতাস গ্যাস কোম্পানীর হিসাব। এ ছাড়াও আছে SGFL, BAPEX, IOCs- এর মধ্যে আছে কেয়ার্ণ, শেভরণ, নিকো, টাল্লো। এদের সবার সম্মিলিত প্রডাকশন এবং কনজাম্পশন এর হার দিন দিন মোটা দাগে কমে যাচ্ছে। ক্যাপাসিটি যা থাকার কথা কখনো তার অর্ধেক কখনো সাঁট-সত্তর ভাগ উৎপাদন হচ্ছে। সিস্টেম লসের ব্যাপারটা বরাবরই আমাদের দেশে গোপন করা হয়! মনে করা হয় এই তথ্য বাইরে পাচার হলে তাদের কিছু একটা ‘মহাক্ষতি’ হয়ে যাবে! তাই নাম কা ওয়াস্তে একটা রিপোর্ট দেওয়া হয়, যাকে ঘটা করে বলা হয়-‘এই হলো আমাদের সিস্টেম লস, যা প্রতি বছর কমে আসছে’।

এই কমে আসাকেই এরা এদের কৃতিত্ব বলে জাহির করে থাকেন। এটি শুধু এই গ্যাস সেক্টরেই নয়, সমগ্র দেশের সকল সেক্টর করপোরেশনে এই একই চিত্র! শীতকালে অত্যধিক শীতে পাইপ লাইনে বালু উঠে আসে বলে প্রডাকশন কমে যায়। এটা প্রতি বছরের চিত্র। কিন্তু এবার শীত একটু বেশী পড়তেই ঢাকার প্রায় ৪০ ভাগ অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। লোডশেডিং করেও কুলোনো যাচ্ছে না।

মিরপুর থেকে শুরু করে প্রায় সমগ্র ঢাকায় গ্যাস রেশনিং হচ্ছে। গুলিস্তানের দক্ষিণে পুরো পুরান ঢাকায় সারা দিন গ্যাস থাকেনা। রাত বারটার পরে গ্যাস আসে এমন অঞ্চলের হার এখন প্রায় পঞ্চন্ন ভাগ। এ নিয়ে বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় মিছিল-ঘেরাও হয়েছে, কাগজে প্রায় প্রতিদিনই খবর হচ্ছে, কিন্তু সুরাহা হচ্ছেনা। পেট্রো বাংলার প্রডাকশন চার্টে দেখা যাচ্ছে রাত ১২ টার পরে একটু প্রডাকশন বাড়লে তখন সাপ্লাই দেওয়া হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকার গ্যাস ফিলিং স্টেশনগুলোতে সারাদিন নোটিশ টাঙ্গানো থাকে-‘গ্যাসের স্বল্পতায় স্টেশন বন্ধ’। এই বন্ধ বা রেশনিং অথবা লোডশেডিংয়ের একটা তুলনামূলক চিত্র ধরলে দেখা যাবে গত বছর এই সময়ে ঢাকার পঁচিশ থেকে ত্রিশ ভাগ অঞ্চলে গ্যাসের হাহাকার ছিল। এবার সেখানে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ভাগে দাঁড়িয়েছে। এই ক্রমবর্ধমান সংকট মাথায় রাখলে নিঃসন্দেহে বলা যায় আগামী বছরে এই লোডশেডিং বা রেশনিং ছড়িয়ে যাবে ষাঁট-সত্তর ভাগ অঞ্চলে। পেট্রো বাংলা কি করবে? প্রডাকশন না থাকেলে কি ভাবে দেবে? এটা খুব সহজ বিষয়।

গ্যাস নেই তো সাপ্লাই নেই। প্রতিদিনের ওভারঅল প্রডাকশন চার্ট। এই লিঙ্কে আরো তথ্য পাওয়া যাবে। তাহলে বিকল্প কি? এই বিকল্প নিয়ে বিশেষজ্ঞরা এন্তার ভাবাভাবি করেছেন। করে একটা সিদ্ধান্তে এসেছেন যে আমাদের কয়লা উত্তোলন করে এর বিকল্প ভাবতে হবে।

কয়লা নিয়ে কি হচ্ছে বা আগামীতে কি হবে সেটা এখানে আলোচনায় আনা হলো না। সে অধ্যায়টি আরো হতাশাজনক। এখন যেমন মহার্ঘ প্রাকৃতিক গ্যাস চূলোয় জ্বালয়ে কাঁথা শুকোনো হচ্ছে, পানি গরম করা হচ্ছে, ম্যাচের কাঠি বাঁচানো হচ্ছে, গার্মেন্টে কাপড় ইস্ত্রি করার জন্য বয়লারে পানিকে বাষ্প বানানো হচ্ছে, প্রাইভেট গাড়িকে সিএনজি করে বাবুগিরি দেখানো হচ্ছে, আগামীতে ক্রুড অয়েল কিনে রিফাইন করে জ্বালানির জন্য কেরোসিন বানানো হবে, পাওয়ার প্লান্ট চালানোর জন্য ডিজেল ইম্পোর্ট দশগুণ বাড়াতে হবে। জাতীয় আয়ের সিংহ ভাগ চলে যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে, কারণ বিদ্যুৎ ছাড়া সবই অচল। এখন যেমন বৃক্ষ বৃক্ষ করে আমরা তড়পাচ্ছি, যেন বৃক্ষই আমাদের গ্লোবাল ওয়ামিং থেকে বাঁচাতে পারে! সেই ওয়ামিং থেকে বাঁচানোর বৃক্ষই তখন আমাদেরকে কেটে কেটে চূলো জ্বালাতে হবে! তাহলে সবুজ বনায়ন বা উপকূলীয় বৃক্ষবেষ্টনীর কি হবে? সিডর-আইলা থেকে কে বাঁচাবে? যদি গাছ কেটে রান্না করতে হয় তাহলে বৃক্ষহীন বাংলাদেশ নিজেই গ্লোবাল ওয়ামিংকে নিজের বাড়িতেই প্রতি বছর বাড়িয়ে দেবে।

তাতে করে শুরু হবে সংকটের নতুন মাত্রা! সেই সংকটের হাত ধরে চলে আসবে নোনা পানি। মিঠা পানির নদীগুলো নোনা পানিতে সয়লাব হয়ে যে ডিজাস্টার ঘটাবে তা কল্পনারও অতীত! বাংলাদেশের প্রায় চল্লিশ শতাংশ অঞ্চলে ধান ফলবে না। সেচের জন্য হাজার ফুট খুঁড়েও পানি মিলবে না! শুধু মাত্র খাবার পানির জন্যই শুরু হবে কারবালার মত হাহাকার! মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের তেল ফুরিয়ে গেলে কি করবে তা তারা ভেবে রেখেছে। জ্বালানী তেল শেষ হয়ে গেলে কি দিয়ে গাড়ি চলবে ইউরোপ-আমেরিকা তা ভেবে রেখেছে। এমন কি ভারত তার খনিজ গ্যাস, তেল, কয়লা শেষ হলে কি করবে তাও ভেবে রেখেছে।

তার তো সম্পদের অভাব নেই,তারপরও তারা পাইপ লাইনে রান্নার গ্যাস সাপ্লাইয়ের বিলাসীতা করেনি। কিন্তু আমাদের সবেধন নীলমনি গ্যাস ফুরিয়ে গেলে আমাদের কি হবে সেটা কি আমাদের ভাবনেঅলারা ভেবেছেন? আমরা জানিনা।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.