সবাইকে সাথে নিয়ে এগুতে চাই।
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রভাব
কমিউনিজমের পতনের পর বর্তমানে পাশ্চাত্যের প্রধান প্রতিপক্ষ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ। ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহকে নির্মূল করার জন্য পাশ্চাত্য শুরু করেছে নতুন ক্রুসেড, যার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে কথিত সন্ত্রাসী হামলার নাটক মঞ্চস্থ করার মধ্য দিয়ে। এটিকে অজুহাত বানিয়ে তারা ধ্বংস¯তূপে পরিণত করেছে আফগানিস্তানকে। রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়া হয়েছে ইরাকে।
না জানি কতদিন চলবে মুসলিম দেশ জবরদখলের এ ধারা। আর এ ক্রুসেডে তাদের অগ্রসেনানী হলো বিশ্ববি¯তৃত ইহুদী নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমা মিডিয়া নেটওয়ার্ক। বর্তমান যুগকে আমরা মিডিয়ার যুগ বলতে পারি। এ যুগে সমরাস্ত্র ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে মানুষ হত্যার পরিবর্তে মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এটাকে আমরা সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক লড়াই বলতে পারি।
বলতে পারি øায়ুযুদ্ধ। এ যুগ মানুষকে শারীরিকভাবে গোলাম বানানোর পরিবর্তে মেধা-মনন ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে গোলাম বানানোর যুগ। আর মনস্তাত্ত্বিক দাসত্ব শারীরিক দাসত্বের তুলনায় অনেক বেশি ভয়াবহ। মিডিয়ার শক্তি আণবিক শক্তির চেয়েও বেশি ভয়াবহ। মিডিয়া কোটি কোটি মানুষের মেধা-মনন ও চিন্তা-চেতনা যখন যেদিকে ইচ্ছা সেদিকেই ঘোরাতে পারে।
মিডিয়ার মাধ্যমে গোয়েবলসীর কায়দায় মিথ্যা, ধোকা, প্রতারণা ও বাস্তবতা বিকৃতির কাজ এমনভাবে চলছে যে, অনেক ক্ষেত্রে মানুষ মিথ্যাকে সত্যহিসেবে গ্রহণ করে নিচ্ছে। ১১ই সেপ্টেম্বরের টুইন টাওয়ার ধ্বংস নাটক যে স্বয়ং আমেরিকার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র,অথচ তা মুসলমানদের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে মিডিয়ার মাধ্যমেই। পাশ্চাত্য ভালকরেই জানে, যদি তাদের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক আধিপত্য বজায় রাখতে হয় এবং গোটা বিশ্বকে তাদের বলয় রাখতে হয়, তাহলে ধর্মনিরপেক্ষ জীবনব্যবস্থাকে আদর্শ ও অনুসরণীয় বানাতে হবে। ফাঁদ পেতে মানুষের বিবেক স্বীয় প্রভাব বলয়ে নিয়ে আসতে হবে। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সবচে মোক্ষম অস্ত্র হলো, মিডিয়া ও প্রচার মাধ্যম।
এছাড়া মুসলিম বিশ্বের সেক্যুলার রাষ্ট্রগুলো ধর্মহীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান টেলিভিশনের পর্দায় দেখানোর মাধ্যমে মুসলিম সংস্কৃতির উপর চরম আঘাত হানছে। বিশ্বের অধিকাংশ মিডিয়া, সাংবাদিক ও কলামিস্ট ইহুদীদের অধিনে। তারা ইসলামকে মূলোতপাটিত করা এবং মুসলমানদের সন্ত্রাসী জাতি হিসেবে চিহ্নহিত করার একদিকে পাঁয়তারা চালাচ্ছে, অপরদিকে মুসলমানদের ঘরে অনৈক্যের বিষবাষ্পে প্রজ্জ্বলিত করছে। মুসলিম নামধারী ধ্বজাধরা শাসক ও রাষ্ট্র প্রধানগণ তাদেরই শিষ্যত্ব গ্রহণ করে মুসলিম রাষ্ট্রে প্রচার করছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের জয়গান। তারা পশ্চিমা প্রভুদের ক্রীড়নকে পরিণত হয়ে জাতিকে ধর্মহীন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।
জাতীয় জীবন থেকে ইসলামী ভাবধারা ও সংস্কৃতি নির্বাসনের জন্য বিজাতীয় সংস্কৃতি প্রচার ও প্রসারে মিডিয়া টেকনোলজীকে ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশী । ইসলাম পুত ও পবিত্র জিনিস। এটিকে রাজনীতির অঙ্গনে নিয়ে অপবিত্র করা মোটেই সমীচীন নয়। এ চিন্তা চেতনায় প্রভাবিত আজ গোটা মুসলিম সমাজ।
ধর্ম ও রাজনীতির সহাবস্থান ভোগবাদী অসৎব্যক্তিদের গা জ্বালার বিষয়। তাই তারা ধর্মকে যথাস্থানে রেখে রাজনীতির ক্ষেত্রে নিজেদের দাপট ও স্বেচ্ছাচারিতার পথ সুগম করার জন্য এ মতবাদকে মুখ্য হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছে। ইসলাম মানবজাতির সামনে যে রাজনৈতিক মতবাদ পেশ করেছে তা যদি রাজনৈতিক পরিমন্ডলে মডেল হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং এর চর্চা ও লালন যদি সক্রিয় হয়ে উঠে তাহলে তথাকথিত সাম্প্রদায়িকতা ও মুক্ত বুদ্ধির চর্চা নামে মুসলমানদেরকে ধোকা দেয়ার যে পলিসি জন্ম দেয়া হয়েছে মুসলমানদের কাছে তা স্পষ্ঠ হয়ে উঠবে। ফলশ্র“তিতে তাদেরকে আর প্রবৃত্তির দাসে পরিণত করা যাবে না। তাই ইসলামকে রাজনীতির ময়দান থেকে সব সময় বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।
একমাত্র ধর্মনিরপেক্ষতাবাদই এই বিচ্ছিন্নতার পথকে সুদৃঢ় করতে পারে। এরই ধারাবাহিকতায় মুসলিম রাষ্ট্রে মুসলিম নামধারী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আজ মেতে উঠেছে ইসলামবিমুখ রাজনীতিতে। এমনকি তারা ধর্মনিরপেক্ষতা বাদের তপ্লিবাহক সেজে ইসলামকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় দিতে চাইছে। এরফলে শিক্ষা, মিডিয়া প্রচার এবং রাজনীতির পাশাপাশি দেশের আইন -কানুনে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের বিরাট প্রভাব বিস্তারলাভ করেছে।
ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা প্রকৃত ইসলাম ও ইসলাম পন্থীদের সহ্য করতে পারেনা
ইসলাম থেকে ভিন্ন ধর্মী যে কোন পথই জাহেলিয়াতের পথ।
আর জাহেলিয়াতের অন্যতম ভিত্তিই হলো ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে নাম থাকবে মুসলমানের বিরোধীতা করবে ইসলামের। যারা ইসলামের কথা বলে, ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে ধর্মনিরপেক্ষ বাদীদের দৃষ্টিতে তারাই প্রধানতম শক্রু। এমন কোনো মিথ্যা নেই যা বলতে এদের মুখে আটকায়। মুসলমানদের ইসলামী আন্দোলন থেকে দূরে রাখার জন্যই এরা এই সব কথা বলে বেড়ায়।
ওদের প্রচার মাধ্যমগুলো তা ফলাও করে প্রচার করে। আর আমরা সাধারণ মুসলমানরা কিছু চিন্তা ভাবনা না করেই ওদের মিথ্যা প্রচারণার ফাঁদে পা দিই। আল্লাহকে স্রষ্টা মানতে ফেরাউন-নমরুদের ও আপত্তি ছিলনা। কিন্তু জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর আইন মেনে নিতে তারা রাযী ছিলনা। মুহাম্মদ (সঃ)-এর সময় আবু লাহাব ও আবু জেহেল ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীই ছিলো।
যখনই মানব সমাজে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে তখনই এ চক্রের মাধ্যমে প্রবল বিরোধীতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সত্য মিথ্যার দ্বন্ধ এ পৃথিবীর চিরন্তন নীতি। যেখানে সত্য তার নিজস্ব আলো প্রজ্জলিত করেছে, সেখানেই অন্ধপুরীর অধিবাসীগণ মিথ্যা শক্তির প্রবল ঝাপটা দিয়ে সত্যের সে আলো নির্বাপিত করতে চেয়েছে। অতীত থেকে শুরু করে আজ অবধি এর ধারা অব্যাহত আছে। পাশ্চাত্যের পূঁজিবাদী চক্র,সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও অভিশপ্ত ইহুদীদের নির্মম অত্যাচার, শোষণ ও ষড়যন্ত্রের কারণে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান আজ দিশে হারা।
মুসলমানদের হত্যা, তাদের সম্পদ লুন্ঠন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব জবর দখল করে মুসলমারদের নিজের দেশেই নিজেদের পরাধীন করা হচ্ছে। আর এদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে মুসলিম নাম ধারী ধর্মনিরপেক্ষমতবাদীরা। কেন আমরা সহজেই ইতিহাস ভুলে যাই। ১০৯৯ সনে বায়তুল মাকদাসের ভিতরে এবং তার চতুরপার্শ্বে হাজার হাজার মুসলিম নর-নারী ও শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। স্পেনের বিপুল সংখ্যক মুসলমানদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হলো।
মার্কিন নির্লজ্জ নীতির কারণে-বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, চেচনিয়া, কাশ্মীরে মুসলিম হত্যাযজ্ঞ, ফিলিস্তিন, ইরাক ও আফগানিস্তানসহ গোটা বিশ্বব্যাপী মুসলিম নিধন যজ্ঞে অবতীর্ণ হয়েছে যারা তাদের সাথে হাত মিলিয়ে সহযোগিতা করছে কারা? তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের অনুসারী। ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের দৈনন্দিন জীবনধারা দেখলে বুঝা মুশকিল যে এরা কোন ধর্মের লোক। মুসলিম দেশ গুলোতে এ সকল এজেন্টদের ক্ষমতায় বসিয়ে তাদের ঘাড়ে ছওযার হয়েই গোটা মুসলিমজাহান ঘ্রাস করার পায়তারা করছে। এদের কারণে মুসলমানদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলার সুযোগ পাচ্ছে
বিজাতীয় হায়েনার দল। কাজেই ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদীদের সমর্থন দেয়া ও তাদের প্রশংসা করা হারাম।
এদেরকে যারা সমর্থন দিবে তাদের দুনিয়া ও আখেরাত বরবাদ হয়ে যাবে। । যেমন, ফেরাউনের সমর্থন কারীদের হয়েছিলো আল্লাহর বাণী,
وَلاَ تَرْكَنُواْ إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُواْ فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ اللّهِ مِنْ أ َوْلِيَاء ثُمَّ لاَ تُنصَرُونَ
“তোমরা যালিমদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না, অন্যথায় তোমাদের জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে। (হুদ-১১৩)। গোটা পৃথিবীর মুসলমানের রক্ত নিয়ে হোলি খেলছে যারা তারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের ধুঁয়া তুলে মুসলমানদের বিভক্ত করার সুযোগ পেয়েছে।
ওরা সত্যের বাহকদের কন্ঠনালী চেপে ধরতে চায়। মহাসত্য যেখানে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় সেখানে মিথ্যে শক্তি গর্জন করবে এটাই স্বাভাবিক। পক্ষান্তরে সত্যের বাহকদেরকে যদি মিথ্যের অনুসারীরা পুষ্পমাল্যে বরণ করে স্বাগত জানায় তাহলে বুঝতে হবে ওটা সত্য নয়-সত্যের আবরণে মিথ্যের সহযোগী শক্তি। অবশ্যই মনে রাখতে হবে-মুসলমানদের ঈমান-আকীদা ও আদর্শ বিক্রয় যোগ্য কোন পণ্য নয়। আরো মনে রাখতে হবে যে, মিথ্যা শক্তি সাময়িকের জন্যে প্রভাব বিস্তার করলেও চিরস্থাযী হয় না।
সত্য তার ঐতিহ্য অনুযায়ী মাথা চির উন্নতই থাকবে। আর মিথ্যা ধ্বংস হবেই এবং আল্লাহর وَقُلْ جَاء الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا , গজবে পড়বে। আল্লাহর বাণী
“আর বলঃ সত্য এসেছে আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে: মিথ্যাতো বিলুপ্ত হয়েই থাকে। ”(বানী ইসরাইল-৮১)। এর পরেও তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির তোষামোদ করতে গিয়ে সঠিক ইসলাম ও এর ধারক বাহকদের মোটেই সহ্য করতে পারে না।
ইসলামের পক্ষে যারা কাজ করেন তাদেরকে ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা চরম শক্র মনে করে। কুরআনের কথা শোনলেই তাদের গায়ে জ্বালা ধরে যায়, তাদেরকে আছাড় দিয়ে মারতে চায়।
وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَارِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُ لَمَجْنُونٌ আল্লাহর বাণী,
“কাফিররা যখন কুরআন শ্রবণ করে তখন তারা যেন তাদের তীক্ষè দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়িয়ে ফেলে দিবে এবং বলেঃ এতো এক পাগল। ” (সূরা কলম-৫১)। এটা তাদের চরম শক্রতার বহি প্রকাশ।
আল্লাহ পাক আরো বলেন,
وَإِن كَادُواْ لَيَفْتِنُونَكَ عَنِ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ لِتفْتَرِيَ عَلَيْنَا غَيْرَهُ وَإِذًا لاَّتَّخَذُوكَ خَلِيلاً
“হে মুহাম্মাদ ! তোমার কাছে আমি যে অহী পাঠিয়েছি তা থেকে তোমাকে ফিরিয়ে রাখার জন্য এ লোকেরা তোমাকে বিভ্রাটের মধ্যে ঠেলে দেবার প্রচেষ্টায় কসুর করেনি, যাতে তুমি আমার নামে নিজের পক্ষ থেকে কোন কথা তৈরী করো। যদি তুমি এমনটি করতে তাহলে তারা তোমাকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করতো। ”বানী ইসরাইল-৭৩। অর্থাৎ তারা চাচ্ছিলো তিনি তাদের বাতেল নীতির সাথে কিছু না কিছু সমঝোতা করে নেবেন। এ উদ্দেশ্যে তারা তাঁকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দেবার চেষ্টা করলো।
তাঁকে ধোঁকা দিল, লোভ দেখালো, হুমকি দিল এবং মিথ্যা প্রচারণার তুফান ছুটালো। তারা তাঁর প্রতি জুলুম নিপীড়ন চালালো ও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করলো। তাঁকে সামাজিকভাবে বয়কট করলো। তাঁকে দেশ ছাড়া করা হলো। তাঁর ছাহাবীদের ওপর চালানো হলো বর্বর নির্যাতন।
এমনি ভাবে বিগত যুগে সঠিক ইসলাম পন্থিদের ওপর যে নির্মম জুলুম ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তা যে কোন মানুষের আত্মাকেই ব্যথিত করে, হৃদয়-মন কেঁপে ওঠে। ইসলামের বাতি
গুঁড়িয়ে দেবার জন্য যা কিছু করা যেতে পারে তা সবই তারা করতে থাকলো। তা সত্বেও বাতিলের সাথে কোন আপোষ তিনি করেন নী। উদ্ভাবন করেন নী কোন নতুন মতবাদের। কারণ, ইসলাম শুধু একটি ধর্মই নয় আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত পরিপূর্ণ জীবন বিধান।
এখানে অন্য কোন নীতিমালা উদ্ভাবন করা বা গ্রহণ করা মানেই নিশ্চিত ধ্বংসের পথে পা দেয়া। আল্লাহর বাণী,
وَلَوْلاَ أَن ثَبَّتْنَاكَ لَقَدْ كِدتَّ تَرْكَنُ إِلَيْهِمْ شَيْئًا قَلِيلاً
إِذاً لَّأَذَقْنَاكَ ضِعْفَ الْحَيَاةِ وَضِعْفَ الْمَمَاتِ ثُمَّ لاَ تَجِدُ لَكَ عَلَيْنَا نَصِيرًا
“আর যদি আমি তোমাকে মজবুত না রাখতাম তাহলে তোমার পক্ষে তাদের দিকে কিছু না কিছু ঝুঁকে পড়া অসম্ভব ব্যাপার ছিল না। কিন্তু যদি তুমি এমনটি করতে তাহলে আমি এ দুনিয়ায় তোমাকে দ্বিগুণ শাস্তির মজা টের পাইয়ে দিতাম এবং আখেরাতেও, তারপর আমার মোকাবিলায় তুমি কোন সাহায্যকারী পেতে না। ” (বানী ইসরাইল-৭৪,৭৫)। অর্থাৎ জুলুম-নির্যাতন যতই হোক, ইসলামের নীতিমালাকে বিসর্জন দিয়ে কোন বাতেলের সাথে আপোষ করা যাবে না।
মোসলমানরা শাহাদাত বরণ করতে জানে কিন্তু বাতিলের কাছে মাথানত করতে জানেনা। তাদের দেহকে বোমার আঁঘাতে ক্ষতবিক্ষত করতে পারলেও কালজয়ী আদর্শ ইসলামকে কেউ ক্ষতবিক্ষত করতে পারবে না। মোসলমানদের ঈমানের নূরে তোমাদের শক্তি দূর্গের ভিত্তি চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে পড়বে। আর সেই ধ্বংস স্তুপের উপরে উড়বে মহাসত্য ইসলামের বিজয় পতাকা। অতএব রাসূল (সঃ) এর অবর্তমানে এ-আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা এবং তা অব্যাহত ভাবে কায়েম বাখা প্রতিটি মুসলমানের ওপর ফরজ।
আমাদেরকে অবশ্যই মনে বাখতে হবে যে, এ আদর্শ বাস্তবায়নে আমরা কিভাবে কতটুকু আঞ্জাম দিচ্ছি তার ওপরই নির্ভর করবে আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের মুক্তি। যদি আমরা যথার্তই এ আদর্শ বাস্তবায়নের সেবক হতে পারি তাহলেই আমাদের জীবন সার্থক হবে। অন্যথায় এ দুনিয়ার জীবন হবে অপমানের আর আখেরাতে ঠিকানা হবে জাহান্নামে। আর বাতিলের সাথে আপোষ করলে সে ক্ষেত্রে আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব নেমে আসবে দুনিয়ার জীবনেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।