আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিধ্বস্ত একটি দিনের ছবি (ছবি ব্লগও বলা যেতে পারে )

হাউকাউ পার্টি

আমার চাচা শ্বশুড় দীর্ঘ দিনের প্রবাস জীবন শেষ করে অবসর যাপনের জন্য বাংলাদেশে চলে এসেছেন। উনি খুব ছোট বয়সে আমেরিকার চলে গিয়েছিলেন। চাচার বাংলাদেশের যে কোন উৎসব নিয়েই খুব আগ্রহ। এতদিন পহেলা বৈশাখের বাংলাদেশের বর্ষ বরণ শুধু ছবিতেই দেখেছেন। এবারে একেবারে মোক্ষম সময়ে দেশে এসে পরেছেন, এই বয়সেও তার খুব উৎসাহ।

নিজেই ঠিক করছেন কোন কখন কোন বাসায় খাবেন, কখন কোথায় ঘুরতে যাবেণ...... আমাদের উপর দ্বায়িত্ব পড়েছে মধ্যন্হ ভোজ এবং রমনা ভ্রমণের। তিনি দুপুরে খাবেন এই খবর পাঠালেন বেলা ১১টার দিকে, শুনে কিছুক্ষন ভ্যাবলার মতো বসে থাকলাম। তারপর দীর্ঘ সময় রান্নাঘরে হাড়িপাতিলের সাথে হাতাহাতি করে যে পদার্থ গুলো উৎপন্ন করেছিলাম তার কিছু নিদর্শন........... ইলিশ মাছের দোপেয়াজা, উচ্ছে চিংড়ি ভাজি, পোস্ত দিয়ে পাচঁ মিশালি সব্জি, কেচকি মাছের বড়া, দই দিয়ে মুরগি ভুনা, আম ডাল আর কয়েক রকম ভর্তা। শেষ দুপুরে শ্বশুর শ্বাশুড়ি আসলেন, সাথে সোহাবাবুর পাচঁ ছয় জন চাচাতো ফুপাতো ভাই বোন। সোহামনির কাজিনরা ভয়াবহ রকমের দুষ্ট।

তারা যে এক ঘন্টা ছিল, তার মধ্যে চড়ুই পাখি ধরতে যেয়ে আমার বারন্দায় নতুন ফোটা ফুল সহ অর্কিডের টব আর একটা বেলী ফুলের টব ভাংগলো। এরপর সোহার একটা ভাল্লুক পিছনের বারান্দা দিয়ে নীচে ফেল দিল ( এটা আর পাওয়া যায়নি) এবং নতুন টুথ পেষ্টের টিউব টিপে টিপে খালি করে আমার বেড কভারটা দফারফা করলো তাদের ধ্বংসযঙ্গ আমি কাষ্ঠ হাসি মাখা চেয়ে চেয়ে দেখলাম, কিছু বলতে পারলাম না.......... যাইহোক খাওয়াদাওয়া শেষ হবার পর চাচা চাচী উসখুস করছিলেন কতক্ষনে তারা ঘুরতে বের হবেন দলবল নিয়ে। ধুলো, গরম, রোদ কোন কিছুই বলে তাদের নিরস্ত করতে পারছিলাম না। ওদিকে আমাদেরও ইচ্ছা নেই বাইরে বের হবার। তাই ছলে বলে কৌশলে আমার মেঝ ননাসের ছেলের উপর চাপিয়ে দিলাম ভ্রমনের ভার।

সাবই চলে যাবার পরে আমার বিদ্ধস্ত বারান্দার ভাঙ্গা টব আর ছেড়া ফুলের সামনে বসে আছি ভগ্ন হৃদয়ে, আর সোহা আমার কোলে উঠে গ্রীল বেয়ে বেয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করছে। হটাৎ বাবু আমার গলা জড়িয়ে বুকে মুখ লুকিয়ে বলে" আম্মু মা, আমান দামা নাই, পেন্ত নাই" আবাক হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে, কি ব্যাপার? ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে নীচের দিকে তাকিয়ে পরে বুঝলাম এত মন কষ্টের কারণ। ও বারান্দা থেকে দেখতে পেয়েছে লাল সাদা জামা পরে সাবই ঘুরছে, তাই দেখে একটু হিংসা হয়েছে আরকি!!!!! তাই তারাতারি তাকেও সাজিয়ে দিতে হলো লাল সাদা সাজে............. সাজু গুজু হয়ে যাবার পর শুড়ু করলো নতুন বায়না, মা বাইতে, মা বেনু ( বাইরে বেড়াতে যাবে)। এই অনুরোধ তো আর উপেক্ষা করা যায় না, তাই বের হতেই হলো......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।