বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা
(ছবি ডেইলী স্টারের সৌজন্যে)
বিবেক শূণ্য অন্ধত্বের বিজয় ঘটেছে। অন্ধ হলে প্রলয়ও বন্ধ হবে এ হচ্ছে আমাদের জীবনবোধে নতুন সংযোজন। রাজনীতির পটপরিবর্তনে ঘটমান নাটকীয়তা স্বস্তি ও স্থিতি না আনতে পারলেও উৎকন্ঠা ও দুশ্চিন্তার নতুন মাএা যোগ করেছে। সারাদিন ধরে নিউজ মিডিয়া আর প্রিন্ট মিডিয়া অনুসরণ করে মনে হলো সাজানো নাটকের শীতকালীন উদ্বোধন ঘটেছে বষর্ীয়ান রাস্ট্রপ্রধান ইয়াজউদ্দীনের ভাঙ্গা কন্ঠে।
ক্ষমতার কলকাঠি নেড়ে বিরোধী দলকে ছলে বলে কৌশলে ধরাশায়ী করে নির্বাচন পাড়ি দেওয়ার মহা আয়োজন পোক্ত করে রাখা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার, ভোটার লিস্ট সংশোধন, প্রভাবমুক্ত প্রশাসন, অবাধ ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার নিশ্চয়তা গণমানুষের দাবী। 14 দলীয় জোট জনগণের এই ন্যায্য দাবীকে এগিয়ে নিতে ও গণতন্ত্রের ধারাকে অব্যাহত রাখতে যে আন্দোলনের ধারা শুরু করেছিল তাকে ব্যাহত ও প্রতিহত করতে বিএনপি-জামাত জোট যথেস্ট দক্ষতা ও কূটকৌশলের পরিচয় দিয়েছে। এর জন্য তারা নিজেরাই নিজেদের পিঠ চাপড়ে বাহবা দিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ আমার প্রিয় বাংলাদেশ বারবারই প্রতারিত হয় স্বার্থান্বেষী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির কাছে। এদেশের মানুষের মনকে-মননকে কখনও ধর্মের জোব্বা পড়িয়ে, কখন জাতীয়তাবাদের শ্ল্লোগান দিয়ে, কখনও বিদেশী শক্তির সুগভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়ে প্রভাবিত ও বিভ্রান্ত করার ঐতিহাসিক ধারা আজও অক্ষুন্ন রয়েছে।
যারা খেটে খাওয়া মানুষ, যারা এক মুঠো খাবার আনতে গিয়ে সারাদিন পরিশ্রম করে, যারা নিজেদের মধ্যবিও অস্তিত্ব বজায় রাখতে দিনান্তের সংগ্রাম করে, তাদের কাছে বেঁচে থাকার চেয়ে বড়ো পাওয়া আর কিছু নেই। তারা ঠিকই জানে গত পাঁচ বছরে দ্রব্যমূল্যের স্ফীতি কতোটুকু হয়েছে। বিদু্যতের দাবীতে কতোজন মারা গেছেন। হাওয়া ভবনের মাধ্যমে কতো হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। মৌলবাদের বিষাক্ত ছোবলে কতোজন মানুষ প্রাণ দিয়েছেন।
তারা জানেন কতোটা নিরাপওাহীনতায় তারা বাস করেছেন বিএনপি-জামাত জোটের আমলে। তারপরেও তারা আবার ফিরে পাবেন সেই জাতীয়তাবাদী জামাতীদের ভুত। তাদের সাজানো নাটকের দর্শক ও পণবন্দী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাদের ভোট, সমর্থন, বিরোধিতা কোনকিছুই হয়তো পরিবর্তন আনতে পারবে না। সাজানো নাটকে মঞ্চস্থ্য দৃশ্য না দেখে কি কোন উপায় আছে?
অশীতিপর ইয়াজুদ্দীনকে উদ্ধার করে কি হবে? কলের পুতুলের সাথে রাগ কেন? যেভাবে চাবি ঘুরবে, সেভাবেই সে নাচবে।
তাই ঢাকার রাজপথে ভারী সামরিক সাঁজোয়া যান আইন-শৃংখলার উন্নতি আনার চেয়েও পুরনো চোখ রাঙানির কথা মনে করিয়ে দেয়। যাদের গণমানুষের মধ্যে কোন জনপ্রিয়তা নেই, যাদের জারিজুরি মানুষ ধরে ফেলেছে, যাদের জন্ম সামরিক ছাউনির ভেতর, তারা বারবার সামরিক নল দিয়ে ভয় দেখাবে জনগণকে। জনতার সারিকে সামরিক লরীর আড়ালে সরিয়ে দিবে। পুরো দেশ সামরিক বুটের নীচে পিষ্ঠ হতে পারে। কিন্তু না, আমার চিন্তাশক্তি ও বিবেকবোধ অপরাজেয় আর অবধ্য।
রাস্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীন বিএনপি-জামাত জোটের তৈরী ভাষণ যখন আওড়িয়ে গেলেন, তখন তিনি আরেকবার কবর দিলেন বিবেকবোধকে। অস্বীকার করলেন সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবীকে। বিজয় দিবসের দোর গোড়ায় বসে তাই ভাবি, ইয়াজউদ্দীনের বিধ্বস্ত বিবেকের ডাস্টবিন থেকে গণতন্ত্রের ফুল কি ফুটবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।