কত আজানারে জানাইলে তুমি, কত ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট,বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।
এবারে বাড়িতে যেয়ে আয়োজন করা হয়েছে ক্রীড়া প্রতিযোগীতার। যেখানে অংশ গ্রহন করে গ্রামের শিশু, মহিলা ও পুরুষেরা। দুপুরে খাবার পর শুরু হল খেলাধুলা। খুব উত্তেজানা।
১ম, ২য়, ৩য় ধরবার জন্য নির্দিষ্ট ব্যাক্তি থাকলেও ঘোষকের কাছে আসবার পর দেখা যায় প্রতিযোগীরা এমন কাউ মাউ করে যে বিচারক প্রতিযোগীকেই জিজ্ঞাসা করে ---এই তুমি কি হইছো ১ম না ২য়। দেখা যায় পাঁচ/ছয় জন দাবী করে তারা ১ম, ২য় ৩য়। এর পর আমি ঘোষক এবং প্রধান বিচারক নিজে ঠিক করি কে ১ম কে ২য় এবং ধমক দিয়ে সবাইকে বলি আমার সিদ্ধান্তই চুরান্ত। এতে শুরু হল মহা গ্যাঞ্জাম। বাচ্চার মা বাবা এসে বলছে ----মোর ছাওয়া ফাস হইছে তোরা কি বুলি ছেকেন করছেন? আমি আবার ভয়ে ভয়ে তাকে ১ম করি।
আমার অবস্থা করুন, উদ্ধার করলো ক্লাশ সিক্স পড়ুয়া রাইসা-------- বড় মা তুমি নাম বলে দাও কে কে প্রথম ২য় ও তয় ধরবে আর এই কাজে ফুপিদের পাঠাও। বাবা আর ভাইয়ারা মাঠ ধুক্কু উঠান থেকে দর্শকদের সামলাবে যাতে ওরা খেলতে পারে আর আমরা খেলোয়ারদের সাজাছি। খুব খুশি হলাম মেয়ের বুদ্ধি ভাল। আমাকে ও দিয়ে গেল তার হাতের মুভি ক্যামেরা সব ভিডিও করতে হবে। আমি বললাম ---তোর মাকে দে, আমি মহা ব্যাস্ত।
মেয়ে মুখ বাঁকা করে বলল ---মা শুধু পেট কাটতে জানে এটা চালাতে জানে না। (ওর মা ডাক্তার তাই মেয়ের এই উক্তি। দেখলাম সবাই ব্যাস্ত এক দাদা ছাড়া। তাই তারাতারি ক্যামেরা দাদার হাতে দিয়ে দিলাম। দাদা এখানে প্রধান অতিথি আর ভাবী বিশেষ অতিথি।
তবে বিশেষ অতিথি মাঠ সামলাতেই ব্যাস্ত। দাদা প্রধান অতিথি কারন দাদাকে আমরা ভাবছি শূলে চড়াব সরি সরি শূলে নয় চেয়ারম্যান ইলেকশনে দাঁড় করাব। তার তো রিটায়ারমেন্ট এর দুইবছর পূর্নহচ্ছে। (যদিও দাদার এই শাস্তির কথা দাদ এখনও জানেন না। )
প্রথম খেলা ছিল শিশুছেলেদের দৌড়।
পুরুষ্কার পেল ১ম,২য়,৩য়,৮ম,১১তম ও ১৫তম। এখানে একটু স্বজনপ্রীতি চলে এসেছে। কারন ৮ম হয়েছে আমার ছেলে ১১তম ও ১৫তম হয়েছে আমার দুই নাতি। কিছু করার নেই। ওদের নাম ঘোষনা করতেই হবে।
না হলে খেলাই পন্ড। একই অবস্থা শিশুমেয়েদের দৌড় প্রতিযোগীতায়।
এবারে বিস্কিট দৌড়। এই দৌড়ে ১ম হয়েছে আমার ছেলে ( হবেইতো দেখতে হবে না ছেলেটা কার ) এখানে একটু কিন্তু আছে কারন ওর বড় ভাই শুভ বুস্কিট ঝুলানো দড়ি ধরে ছিল । আর আগে থেকেই হাতে বিস্কিট নিয়ে রেখেছিল।
কাছে আসতেই মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে বলে----ভাইয়া দৌড়া। বাহ্ আমার পুত্র ১ম । এবারেও পুরুষ্কার দিতে হয়েছে ছয়টা।
পুরুষ মহিলা সকলের হাড়িভাঙ্গা খেলা। নির্দিষ্ট একটি জায়গায় মাটির হাড়ি রাখা হয়েছে।
প্রতিযোগীর হাতে লাঠি দেবার আগে চোখ বেধে সম্পূর্ন ৩৬০’ডিগ্রী ঘুরিয়ে ছেরে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিযোগী লাঠি মাথার উপরে তুলে যেদিকে খুশি রওনা দিচ্ছে। দাদা যেয়ে থামলো সম্পুর্ন উল্টা দিকে খড়ের গাদার সাথে ধাক্কা খেয়ে।
হামিদ দুলাভাই তার চোখের বাঁধন নিয়ে চিল্লাচিল্লি করে রওনা দিল এবং মাথা ঘুরায় বাঁকায় হাড়ি দেখে এমন মাইর দিল যে এক মাইরে হাড়ি দফা রফা । তাই এরপর এই খেলা চলেছে একটি টিনের বালতি দিয়ে।
দুলাভাই খুব ঝগরা করে পুরুষ্কার নিয়েছে। তার পুরুষ্কারটি ছিল আর,এফ,এল এর একটি প্লাস্টিকের বদনা। পুরুষ্কার দেবার সময় দাদা ঘোষোনা করলেন হামিদ একটি বদ-----না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।