সকাল সকাল এই News টা পড়ে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছি। এর পরও কি আমরা আমাদের মানুষ বলতে পারি?
মানুষ দেখলে ভয় পাচ্ছে শিশুটি!
মানুষ দেখলেই ভয়ে চিত্কার করে মাকে জড়িয়ে ধরছে শিশুটি। ‘মা, ব্যতা ব্যতা’—শুধু এই শব্দ কটি বলে থেকে থেকে কাঁদছে সে। হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিত্সক বলছেন, প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
দুই বছর নয় মাস বয়সী একটা শিশুর গায়ে কতটুকুই বা রক্ত থাকে?
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সক সালাউদ্দিন মোল্লা প্রথম আলোকে জানান, শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এখন পর্যন্ত রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি, তবে পরে রক্ত লাগতে পারে।
রাজধানীর উত্তরখান থানার আবদুল্লাহপুরের বড়বাগে (আটিপাড়া) গত মঙ্গলবার দুপুরের কোনো এক সময় ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুটির বাবা রিকশাচালক। মা ঝিয়ের কাজ করেন।
গতকাল সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটির কোমল ছোট্ট হাতে স্যালাইন লাগানো। ছটফট করছে। মা উবু হয়ে আদরের শিশুকন্যাকে জড়িয়ে ধরে আছেন। তাঁর গাল বেয়ে নামছে চোখের পানি।
‘আমি বাসাবাড়িতে কাজ করি।
না কইরে কী করব। খাওয়ান নাগে না? ও আমার সঙ্গেই থাকে। খেলায়। বাসাবাড়ির কাজ, বুঝেনই তো। আধা ঘণ্টা সময় ওকে দেখি নাই।
যখন আইচ্চে তখন খালি কান্দে। বলল, “মা, আমার সঙ্গে আয়। ” তারপর একটা বাড়ির সামনে দাঁড়ায়ে ইশারায় দেখায়, ওর মুখ কেউ চাপে ধরিছিল। আর কিছু বুলতে পারেনি। শুধু ডরায়, আর কান্দে।
’ চিকিত্সকদের কাছে এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন মা।
শিশুটির বাবা ওই দিন সকালেই রিকশা নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। মেয়েটিকে দেখার জন্য পরিবারে আর কেউ নেই। নিরুপায় হয়ে মা শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে কাজে যান। খেলতে খেলতে সে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় অন্য দিনের মতোই।
এর কিছুক্ষণ পর কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসে, রক্তাক্ত। মেয়ের অবস্থা দেখে মা চিত্কার করে উঠলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। শিশুটি মাকে হাত ধরে নিয়ে যায় একটি বাড়ির সামনে। কিন্তু বাড়িটি ছিল খালি।
মা জানান, মেয়েকে তিনি প্রথমে টঙ্গীর একটি হাসপাতালে, পরে শিশু হাসপাতালে এবং সেখান থেকে মঙ্গলবার প্রায় মাঝরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সকেরা জানান, শিশুটির চিকিৎসা পেতে কিছুটা দেরি হয়েছে।
শিশুটির নানা জানান, তাঁদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে। বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী, এক পা খোঁড়া। তা নিয়েই তিনি রিকশা চালান। তিনি জানান, মাত্র পাঁচ মাস হয় ঢাকায় এসেছে শিশুটির পরিবার।
অভাবের সংসার। এ পর্যন্ত তাঁদের তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে। হাতে আর কোনো টাকাও নেই।
উত্তরখান থানা পুলিশের কর্তব্যরত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে ধর্ষককে শনাক্ত করতে পুলিশের কয়েকটি দল কাজ করছে।
শিশুটির দেখভালের দায়িত্ব এখন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হাতে। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি আইনি সহায়তা দিচ্ছে। পুলিশও তত্পর।
Source: Prothom Alo
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।