আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেয়েটির এখন কী হবে?



চাচাতো ভাই সেনাসদস্য কাশেম শেখের (২৮) বিয়ের প্রলোভনে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি (১৮)। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী গ্রামের এই মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের পরিবারকে বিয়ের আয়োজন করতে বলা হয়। কিন্তু এ প্রস্তাবে সাড়া দেননি কাশেম। পাশাপাশি কাশেম নেমে পড়েন প্রমাণ নষ্ট করার কাজে। তিনি এ কাজে লাগান তাঁর বড় ভাই ছান্নু শেখ (৪০) ও ভাবী পারভীন বেগমকে (৩৫)।

তাঁরা জোর করে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটিকে নিয়ে যান খানপুরা পল্লি হাসপাতালে। সেখানে গত ১৮ মার্চ অনভিজ্ঞ এক আয়াকে দিয়ে ঘটানো হয় গর্ভপাত। ফলে মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০ মার্চ তাঁকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত মঙ্গলবার ওই তরুণীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

মেয়েটির মা জানান, এ বছর একটি মাদ্রাসা থেকে তাঁর ওই মেয়ে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়। ২০ মার্চ ছিল ব্যবহারিক পরীক্ষা। তিনি অভিযোগ করেন, ১৮ মার্চ তাঁর মেয়েকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০ মার্চ তাঁকে পরীক্ষাকেন্দ্র মুকসুদপুর ফাজিল মাদ্রাসায় রেখে যায় ছান্নু ও তাঁর স্ত্রী। মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিত্সক মনিমউল হাবীব গত মঙ্গলবার জানান, ভর্তির সময় মেয়েটি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল ছিল।

২২ মার্চ মুকসুদপুরের টেংরাখোল বাজারের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাঁর আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, অসম্পূর্ণ গর্ভপাতজনিত কারণে মেয়েটির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। তখন তিনি রক্তস্বল্পতায় ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলা হয়। মেয়েটির মা বাদী হয়ে ২৫ মার্চ মুকসুদপুর থানায় কাশেম শেখ, তাঁর বড় ভাই ছান্নু শেখ, ভাবী পারভীন বেগম, মা হেনোয়া বেগম ও খানপুরা পল্লি হাসপাতালের আয়া ঝর্ণা বেগমকে (৪২) আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুকসুদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ ইমারত আলী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ছেলেটি সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। কিন্তু বর্তমানে তিনি কোথায় তা জানা সম্ভব হয়নি। মামলার অপর চার আসামিও পলাতক। কাশেমের ভাই নান্নু শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমস্যাটি আমরা নিজেরা মিটিয়ে ফেলব।

গ্রাম্য সালিশে যে সিদ্ধান্ত হয়, আমরা তা মেনে নেব। ’ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেয়েটি বলেন, ‘কাশেমের সঙ্গে আমার তিন বছরের ভালোবাসার সম্পর্ক। তিনি বিয়ে করার কথা বলে আমার সর্বনাশ করেছেন। আমি টাকা-পয়সা বা অন্য কোনো ক্ষতিপূরণ চাই না। আমি কাশেমকে বিয়ে করে সংসার করতে চাই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।