বাংলায় কথা বলি,বাংলায় লিখন লিখি, বাংলায় চিন্তা করি, বাংলায় স্বপ্ন দেখি। আমার অস্তিত্ব জুড়ে বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ।
অধুনা বিলুপ্ত সাপ্তাহিক যায় যায় দিন –এ ১৯৮৬ সালে একটি প্রচ্ছদ কাহিনী ছাপা হয়েছিল যার শিরোনাম ছিল: “সংসদের শোভা তিরিশ সেট অলংকার”। অত্যন্ত সাবলীল এ প্রচ্ছদ কাহিনীটি তখন ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। পত্রিকার সেই সংখ্যাটি তখনকার সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়েছিল।
পত্রিকাটি পরবর্তীতে দলীয় পত্রিকার মতো আচরণ করায় শেষ পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে যায়। তুমুল জনপ্রিয় একটি পত্রিকার অপমৃত্যূ এ ভাবেই ঘটে। তবে পাঠকরা পত্রিকাটির আমেজ আজো ভুলতে পারেননি।
২০০১-এর নির্বাচনের পর সংসদের শোভা আরো বৃদ্ধি পায়। অলংকারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ এ।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ানোর প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। কিন্তু সংরক্ষিত আসন দিয়ে এমপি বানিয়ে তাদের কতটা ক্ষমতায়ন ঘটে আমি বুঝতে পারি না।
বাংলাদেশের সংবিধানের,
২৮। (১) অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী,কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্ম স্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।
২৮।
(২) অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী, রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।
উক্ত অনুচ্ছেদ দু’টি পড়ার পর আমার মনে হয় না যে, নারীদের জন্য সংসদে ৪৫ টি আসনে সংরক্ষণের কোন দরকার আছে। তারা সরাসরি নির্বাচন করে আসবেন। এতে করে তাদের নৈতিক সাহস বাড়বে। অন্যের দয়ায় এমপি হবার মধ্যে কোন গৌরবের কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না।
১৯৭২ সালে সংসদে ১৫ টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল সেই সময়ের বাস্তবতার নিরিখে। আজ পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। নারীদের শিক্ষার হার বেড়েছে অনেক। তারা আজ যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম। তাই আর সংরক্ষিত আসন নয়, সরাসরি নির্বাচনে লড়াই করে আসা উচিত।
তবে একটা কাজ করা যেতে পারে । তা হচ্ছে, দলগুলো মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে নারীদেরকে প্রাধান্য দেয়ার জন্য ৫০ টি আসন সংরক্ষিত রাখতে পারে।
মূল আসনে সরাসরি নির্বাচিত শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, সারাহ বেগম কবরী, সানজিদা খাতুন প্রমুখ এমপি গণ সরাসরি নির্বাচিত বলে তাদের নৈতিক বল অনেক বেশী। তাদের শক্তির উৎস জনগণ। আর যারা সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত তারা তাদের দলের নেতাদের দয়ার উপর নিভর্রশীল।
তাই সংরক্ষিত আসন বিলুপ্ত করা উচিত বলে আমি মনে করি। খুব শীঘ্রই সংবিধান সংশোধন করা হবে বলে ধারনা করা যেতে পারে। তাই এই বিষয়টি আলোচনায় আসা প্রয়োজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।