আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খাঁটি সরিষার তেল এবং ‘আইএফই’ ভাবনা



সৈয়দ মনসুর উদ্দিন স্থানীয় লেবার পার্টি তথা টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে আইএফই (ইসলামিক ফোরাম অব ইউরোপ) এর প্রভাব নিয়ে সানডে টেলিগ্রাফের রিপোর্টটি সানডেতে পড়া হয়নি। পড়েছি পরদিন সোমবার। আর ঐদিনই রাত ৮টায় চ্যানেল ফোরের ডেসপাচেস অনুষ্ঠানে ‘বৃটেনস ইসলামিক রিপাবলিক’ শীর্ষক ডকুমেন্টারীটি সম্প্রচারিত হয়। কিন্তু ব্যস্ত থাকায় ডকুমেন্টারীটি দেখতে পারিনি। বাসায় রেকর্ডিং সিস্টেমও নেই।

প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার পার্থক্যটা বোধ হয় এখানেই। লাইভ প্রোগ্রাম মিস হয়ে গেলে কিংবা ঘরে কষ্ট করে কেউ রেকর্ডিং না করলে তা একটা ঝামেলা বটে। প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রে মিস করলে এতটা সমস্যা হয় না। সহজেই যোগাড় করা যায়। যখন ইচ্ছে তখন পড়া যায়।

সংরক্ষণও সহজ। দুই মাধ্যমের দুই ধরনের সুবিধা। থাক সে প্রসঙ্গ। চ্যানেল ফোরের ডকুমেন্টারী মূলত টেলিগ্রাফের রিপোর্টেরই সারমর্ম। ডকুমেন্টারী দেখানোর পরদিনই আইএফই কর্তৃক বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য ডাকা ব্রিফিং এ যোগ দেয়ার জন্য পরপর দুটি টেক্সট ম্যাসেজ পাই।

প্রেস কনফারেন্সটি ডাকা হয় হোয়াইট চ্যাপেল রৌডের লন্ডন মুসলিম সেন্টারে অবস্থিত আইএফই অফিসে। তাদের অফিসে ঢুকতেই কেমন যেন খটকা লাগে। দেখতে পাই টেলিগ্রাফের সাংবাদিক এন্ড্রু গিলিগান এবং সানডে এক্সপ্রেসের সাংবাদিক টেড জুরীকে দরজায় আটকে দেয়া হয়েছে। আইএফই এর একজনকে দেখলাম তাদেরকে ঢুকতে বাঁধা দিচ্ছেন। এমনও বলতে শুনলাম, এটা কেবল বাংলা মিডিয়াকে লক্ষ্য করে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন।

রুমে ঢুকার মুহূর্তে এন্ড্রু গিলিগান এবং টেড জুরী দু’জনের সাথেই দৃষ্টি বিনিময় হয়। আমাকে রুমে ঢুকতে দেখে তাদের মনে কী ধারণা জন্মেছিল আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। তবে আমার মনে সে সময় অনেক প্রশ্নেরই উদ্রেক হয়। আর এসব প্রশ্ন থেকেই এই লেখার অবতারনা। প্রেস কনফারেন্স শুরুর দিকেই ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সংবাদ সম্মেলন রেকর্ড না করার রুলিং দেয়া হলো।

বলা হলো তারা সংবাদ সম্মেলন শেষে আইএফই কর্মকর্তাদের বক্তব্য রেকর্ড করতে পারবেন। সামরিক শাসন জারীর প্রথম দিকে তরুণ সেনা-কর্মকর্তারা সাধারণত এ-ধরনের ব্যবহার করেন। এর মানে আমি বুঝতে পারিনি। সংবাদ সম্মেলনে আইএফই এবং ইস্ট লন্ডন মসজিদের কর্মকর্তারা যে বক্তব্য দিলেন এর সারকথা হচ্ছে - টেলিগ্রাফে যা লেখা হয়েছে, ডকুমেন্টারীতে যা দেখানো হয়েছে তা সত্যি নয়। যথারীতি ‘তারা’ এই কাজ করেছে।

যথারীতি এটা ‘তারা’দের ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। যথারীতি এটা ‘তাদের’ ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়মিত প্রপাগান্ডার অংশ। এই ‘তারা’ কারা তা পরিষ্কার করা বলা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে আইএফই’র কর্মকর্তারা দাবী করেন- তাদের সংগঠনটি ইউরোপ ভিত্তিক সংগঠন। লন্ডন মুসলিম সেন্টারের এরা হচ্ছেন ইংল্যান্ড চ্যাপ্টারের অংশ।

কর্মকর্তারা এও দাবী করেন যে তাদের সংগঠনে বাঙালীর বাইরেও আরো বিভিন্ন জাতির লোকজন রয়েছেন এবং অন্যান্য কর্মকান্ডের পাশাপাশি সংগঠনটি নিময়তান্ত্রিক পন্থায় তথা আইনী পদ্ধতিতে তাদের পছন্দের আইন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করেন। কোনভাবেই তারা বেআইনীভাবে তাদের উপযোগী আইন বাস্তবায়ন চান না। শুধু তাই নয় তাদের উপযোগী আইন বাস্তবায়ন না হলে ইউরোপের প্রচলিত আইনেই বসবাস করার জন্য তাদের অনুসারীদের নির্দেশ দেন। অতএব রিপোর্ট এবং ডকুমেন্টারীতে যা বলা হয়েছে, তা সত্য নয়। এই প্রসঙ্গে তাদের উদ্দেশ্যে কিছু জিজ্ঞাসা রয়েছে।

এগুলো হচ্ছে- আইএফই যদি ইউরোপের মুসলমানদের সংগঠন হয় তাহলে সংবাদ সম্মেলনে শুধু বাঙালী সাংবাদিকদের ডাকা হলো কেন? লন্ডনে তো বিভিন্ন জাতির সাংবাদিকরা রয়েছেন। আর আইএফআইকে যদি ভুল বুঝে থাকে তাহলে বুঝেছে মূলধারার গণমাধ্যম সমূহ। এক্ষেত্রে মূলধারার গণমাধ্যমকে ডেকেই ভুলগুলোর ব্যাখ্যা দেয়া উচিত। কোন বাংলা মিডিয়ায়তো তাদেরকে নিয়ে তেমন রিপোর্ট হয়নি। তর্কের খাতিরে কেউ হয়তো বলতে পারেন ইস্ট লন্ডন মসজিদ ভিত্তিক সংগঠনটি যেহেতু বাঙালীরা পরিচালনা করেন সেজন্য তারা বাঙালী সাংবাদিকদের ডেকেছেন।

উদ্দেশ্য বাঙালী কমিউনিটিতে তাদেরকে নিয়ে যেন কোন ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। প্রশ্ন হচ্ছে এখানকার বাঙালী কমিউনিটিকে ভুল-শুদ্ধ বুঝিয়ে লাভ কী? এরাতো বৃটেন পরিচালনা করেন না। আর আইএফই’র এজেন্ডাতো বাঙালীদের এজেন্ডা নয়। আইএফইকে বাঙালীরা এই দায়িত্ব কখনোই দেয়নি। বৃটেনে শতকরা ৯৫ ভাগ বাঙালী এসেছেন অর্থনৈতিক কারনে।

বৃটেনের আইন পরিবর্তনের জন্য শক্তিশালী পার্লামেন্ট রয়েছে। রয়েছে থিংক ট্যাংক। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠি যদি বৃটেনের আইন পরিবর্তন করতে চান তাহলে পার্লামেন্টে গিয়েই তা করতে হবে। এখানে জন্ম নেয়া এবং বড় হওয়া বাঙালীর ক্ষেত্রেও এই কথা প্রযোজ্য। তাই আইএফই’র আইন পরিবর্তনের লড়াইটা আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়।

আমরা সবাই জানি বৃটেন একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র। আইএফই যদি এখানে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করতে চায় তাহলে অন্য ধর্মের লোকেরা মেনে নেবে কেন? কারণ পৃথিবীতে কোন ধর্মই অন্য ধর্মকে মন থেকে মেনে নিতে পারেনা। তাই অন্যধর্মের অনুসারীরা এর বিরোধিতা করবে অথবা তারাও তাদের পক্ষে সমান আইন চাইবে। ‘হিজাব’ গেট করলে খৃষ্টান মৌলবাদীরা ‘ক্রুশ’ গেইট করতে চাইবে। হিন্দু শিবসেনারাও নিশ্চয় তখন ঘরে বসে ‘রাম নাম’ জপবে না।

গায়ে ‘চীবর’ লাগিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও একসময় একটা বৌদ্ধ গেইট চাইবে। তখন বৃটেন একটি ধর্মবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। বহু শ্রম-ঘাম আর মেধায় গড়া এই সভ্যতা একদিন মৌলবাদীদের চিড়িয়াখানা হবে - ভাবা যায়? আইএফই’র এই পথচলা কেন? কেন বাঙালীদেরকে এর সাথে জড়ানো হচ্ছে? কত ভাগ বাঙালী তাদের লক্ষ্যের সাথে একমত? শুধু অনুমানের উপর ভিত্তি করে আইএফই’র এজেন্ডার সাথে বাঙালীদের এজেন্ডাকে দ্রবীভূত করা মোটেই ঠিক নয়। এছাড়া আইএফই’র উপর মূলধারার মিডিয়ার ‘প্রপাগান্ডা’ বাঙালী মুসলমানদের উপর আঘাত হিসাবে ধরে নেয়ার সঙ্গত কোন কারণ নেই। বাঙালী মুসলমানদের ঠিকাদারী আইএফইকে কে দিল? তারা কি বাঙালী মুসলমানদের নির্বাচিত কোন প্রতিনিধি? মুসলমানদের অন্যায়ভাবে আক্রমন করা হলে এদেশের সকল মুসলমান ব্যথিত হওয়ার কথা।

শুধু বাঙালীরা হবেন কেন? আইএফই’র এজেন্ডা বা চাওয়া-পাওয়া কী সেই বিতর্কে আমরা যেতে চাই না। একটি গণতান্ত্রিক সোসাইটিতে যে কেউ যে কিছু চাইতে পারেন। মিডল ইস্টের কোন দেশ হলে অবশ্য আইএফই’র শংকিত হওয়ার কথা ছিল। কারণ সেসব দেশে মানুষের কোন গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। ভাবুনতো একবার খৃস্টানরা মিডল ইস্টের কোন দেশে বাইবেলের শাসন কায়েম করতে চাইছে? আইএফই’র চাওয়াকে বাঙালীদের চাওয়া বললে আপত্তি রয়েছে।

কারণ বাঙালী মুসলমানদের সেক্যুলার চরিত্র সবার জানা। এই বাঙালী মুসলমানরা ধর্ম নিরপেক্ষতার অন্যতম এজেন্ডা নিয়েই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। বৃটেনের বাঙালীরাও একই চেতনায় এই যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছিল। পরবর্তীকালে কারা বাংলাদেশের সংবিধান ও সমাজ থেকে কারা এই মূলমন্ত্র বাদ দিয়েছে, কারা বাংলাদেশের সংবিধানের খতনা করিয়েছে, কেন করিয়েছে সেই ইতিহাস এখানে ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আবার এখন ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বললে কারা ‘গেলো গেলো’ বলে শোর দিয়ে উঠে সেই মুখগুলোর ছবি এবং নাম আমরাই পত্রিকায় ছাপি।

‘সেক্যুলার বা ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা’ - এই বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে কারা সাধারণ মানুষজনকে বিভ্রান্ত করে এটাও পরিষ্কার। বাংলাদেশের এই সেক্যুলার মুসলমানরাই বৃটেনে বসতি গড়েছেন। তাই ইসলাম ধর্মের একক ঠিকাদারী নিয়ে এখানেও বাঙালী মুসলমানদের চরিত্র হনন না করার অনুরোধ রইলো। এটা বাংলাদেশ নয়, বৃটেন। আত্মবিশ্বাসেরও সীমা-পরিসীমা থাকা বাঞ্চনীয়।

ইসলামিক ফোরাম অব ইউরোপ বা আইএফই’র সাথে বাংলাদেশের জামায়াত কানেকশনও পরিষ্কার নয়। সংবাদ সম্মেলনে আইএফই কর্মকর্তারা জামায়াতের সাথে সম্পর্ক নাই বলে আমাদেরকে যে তথ্য দিয়েছেন তা প্রহেলিকাপূর্ণ । বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা এখানে আসলে কার কার আতিথেয়তা গ্রহণ করেন এটা যেমন আমরা জানি, তেমনি জানি জামায়াতের ‘মুহ্তারাম’রা কাদের ‘মেহমান’ হন। বাংলাদেশের জামায়াতের অনুষ্ঠানে এখানকার আইএফই কর্মকর্তাদের অতিথি হওয়ার খবর সংক্রান্ত প্রেস রিলিজ আমরাই বিভিন্ন সময় ছেপেছি। আইএফই’র ওয়েবসাইটে জামায়াতে ইসলামির খবর নিশ্চয়ই আইএফই কথিত ‘তারা’ এসে আপলোড করেন না।

এখানে আইএফই কারা প্রতিষ্ঠা করেছেন এই তথ্যও অজানা নয়। বাংলাদেশে ইতিহাস বিকৃত করা সম্ভব হলেও এখানে কি এটা সম্ভব? তাহলে এই সত্য বলতে দ্বিধা কেন এটা আমরা জানতে চাই। ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য যারা লড়াই করেন তারা অসত্যের আশ্রয় নিবেন এটা কেমন করে হয়? তাহলে ধর্ম থাকলো কোথায়? আইএফই হচ্ছে ছাত্রশিবিরের ইউরোপীয় পোশাক এই ধারণা প্রচলিত রয়েছে। অনেকটা এক মালিকের দুই নামের দুই কোম্পানীর মতো। মানুষের এই ধারণার কোন ভিত্তিই কি নেই? এটা সত্য হলে যে বাঙালীদেরকে তারা কাছে টানার চেষ্টা করছেন সেই বাঙালীদের আবেগের বিরুদ্ধেই তাদের অবস্থান নয় কী? বাংলাদেশের বাঙালীরা কী জামায়াতে ইসলামিকে মেনে নিয়েছে? বিএনপির ছাতা উপর থেকে উঠে গেলে তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে- এর জন্য কী প্রমাণের প্রয়োজন রয়েছে? ২ মার্চ, মঙ্গলবারের ‘বাঙালী সংবাদ সম্মেলনে’ আইএফই কর্মকর্তারা বলেছেন তারা উগ্রবাদী কোন সংগঠন নয়।

বরং এর বিরুদ্ধেই তাদের অবস্থান। ‘উপযোগী আইনের’ জন্য তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে চেষ্টা করেন। আমাদের প্রশ্ন বৃটেনে কোন কোন আইন বাস্তবায়নের জন্য তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে চেষ্টা করেন তা পরিষ্কার করা উচিৎ। আইএফই’র আইন পরিবর্তনের সংগ্রামের কারণে বাঙালীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বিঘ্নিত হবে কী হবে না- এর হিসাব নিকাশের প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বের দাবি রাখে।

আমরা অবশ্যই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু স্বচ্ছ ধারণার জন্য তাদের কর্মসূচি আমাদের কাছে পরিষ্কার হওয়া উচিৎ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে তাও আমরা জানতে চাই। সংবাদ সম্মেলনে আইএফই কর্মকর্তারা বারবারই বলেছেন এসব ‘তাদের’ নিয়মিত প্রপাগান্ডা বা ষড়যন্ত্র। প্রশ্ন হচ্ছে এই ‘তাদের’ আমাদের বানানোটা সময়ের দাবী এবং একই সাথে বাস্তবতা নয় কী? প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিংবা এখানে শহীদ মালিক, শামি চক্রবর্তী, আনোয়ার চৌধুরীরা এই ‘তাদের’ আমাদের বানিয়েই নিজেদের অবস্থান তৈরী করেছেন।

ইমিগ্র্যান্টদের সামনে আশার আলো জ্বালিয়েছেন। ভারতীয় এবং ঈহুদী ধর্মাবলম্বীরা এই ‘তাদের’ আমাদের বানিয়েই এখন বিশ্ব দাবড়াচ্ছে। নিজ-নিজ ধর্মকে রেখেই তারা এটা করেছে। বাঙালীর ধর্মীয় আবেগ অনুভূতিকে ব্যবহার বন্ধ করা উচিৎ। এটা করা উচিৎ নিজস্ব পরিচয় ও আত্মসম্মানের স্বার্থেই।

বহুজাতিক সমাজে আমরা চাইব না নিজেদের পশ্চাৎপদ বা বৈরী হিসেবে চিহ্নিত করতে। ভোটের বাজারে এখনও সক্রিয় কেন লিভিংষ্টোন কিংবা জর্জ গ্যালওয়ের মতো দুএকজনকে দিয়ে যতই সার্টিফিকেট লিখিয়ে নেই না কেন মুক্তি যে মিলে না তা বহু আগেই স্পষ্ট হয়েছে। স্থানীয় বাংলা গণমাধ্যমে ‘কমিউনিটিতে তোলপাড় কিংবা তুফান’ অথবা ‘জিতিলো... রে... জিতিলো’ হেডিং দিয়ে ক্ষণিকের সুখ পাওয়া যেতে পারে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না। বরং এর মাধ্যমে আমাদের বর্তমানকে করা হচ্ছে অস্থির, অস্বস্তিকর, অসহনীয় আর ভবিষ্যৎকে করা হচ্ছে অন্ধকার। এক দোজখ ছেড়ে এসে আরেক দোজখে প্রবেশের চেষ্টা কিছুতেই আর ভাল লাগছে না।

সংবাদ সম্মেলন শেষে হেঁটে অফিসের দিকে যেতে-যেতে টিভিতে প্রচারিত আশিয়ান সিটির বিজ্ঞাপনটির কথা বারবার মনে হচ্ছিল। একজন বৃদ্ধ তার তিন প্রবাসী পুত্রকে খাঁটি সরিষার তেল পাঠাচ্ছেন তাদের নির্বিঘ্ন ঘুমের জন্য। আইএফই’র খাঁটি বাঙালী প্রেস কনফারেন্সের আগে দরজায় এন্ড্রু গিলিগানের ব্যর্থ মুখটি দেখার পর তেলের কৌটাটি পিতার কাছে ফেরত পাঠানোই শ্রেয় মনে করছি। নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে বহু জাতির বহু সর্বনাশ হয়েছে। আমরাও সেই ঘুমে আচ্ছন্ন থাকবো কী না - সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় বোধ হয় এখনই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।