হালকার উপর ঝাপসা
স্বাগতম সুধীবৃন্দ। সুন্দর পড়ন্ত বিকেলে চেক পয়েন্টে এত কষ্ট আর ঝক্কি-ঝামেলা পরও জানাতে কষ্ট হচ্ছে যে আমাদের ফ্লাইট ছাড়তে আরো আড়াই ঘন্টা লাগবে। টেক অফ করার আগে আমাদের এই অনাকাংখিত, অনভিপ্রেত চেকিং, স্ক্যানিং এর জন্য আমাদের এবং সকল এয়ারলাইনের পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী। বোধবুদ্ধি জ্ঞান সম্পন্ন যে কারো কাছে এটা স্পষ্ট যে, হাস্যকর পাদুকা চেক, নিষিদ্ধ তরলের তালিকা আর সূক্ষ্ম-সূচাগ্র ধারালো বস্তুর অপসারণ খুব সামান্যই নিরাপত্তা দিতে পারে।
আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে আপনাদের সাথে সাথে আমাদের ও নিয়মিত স্ক্রিনিং করা হচ্ছে।
যদিও কাস্টম অফিসার, রিফুয়েলার, ঝাড়ুদার এবং বিমানবালাদের নিয়মিত চেক করা হয় না। এতে কিছু মনে করার নাই। আশ্বস্ত করছি আমার কাছে কোন নিষিদ্ধ তরল, ছুড়ি, চাপাতি, দা-বটি জাতীয় কিছু নেই।
একটু দাড়ান। কি বললে?
আহ! আমরা এই মাত্র বেসরকারি সুত্রে খবর পেলাম আমাদের ছাড়তে আনুমানিক দেড় ঘন্টা লাগতে পারে।
পূর্বঘোষণা ছাড়াই যা যে কোন সময় পরিবর্তিত হতে পারে।
এই ফাকে আমি অনাকাংখিত বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করতে চাই, (যদিও দেরিতে যাওয়া আর পৌঁছানো বিগত দশক থেকে দ্বিগুন হয়েছে তবুও...........) এই বিড়ম্বনার কারণ শুধুমাত্র আমাদের প্রস্তর যুগের ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেমই নয় এর সাথে আরো যোগ হয়েছে জনবহুল বিমানবন্দর থেকে অনেক এয়ারলাইনের বহুমাত্রিক বহুমুখী ফ্লাইট।
সবাই তাড়াতাড়ি যেতে চায়। কিন্তু এটা আমাদের নিজেদের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এই সমস্ত ফ্লাইটের অনেকগুলোই আসে দেরিতে ...........মাঝে মাঝে অনেক দেরিতে।
স্বাভাবিকভাবে যেতেও..............। নিউইয়র্ক বা ওয়াশিংটন ডিসি এর মত অন্যতম প্রধান বিমান বন্দরগুলোতে ছোট আকারের জেট প্লেনের ব্যবহার এই বিড়ম্ননার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। সমস্ত ফ্লাইটের আনুমানিক ৫০ শতাংশ এদের দখলে। বিমান বন্দর এলাকা, আকাশসীমা আর রানওয়ের এই অদক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্যই আমাদের এখানে আরো এক ঘন্টা তিরিশ মিনিট থাকতে হবে।
উড্ডয়নের কিছু পরেই আমাদের ফ্লাইট এটেন্দেন্টরা খাবার-দাবার আর পানীয় নিয়ে উপস্থিত হবে।
আমি জানি ২৫ ডলার দিয়ে ব্যাগ চেক করানোর পরে আরো। ১০ ডলার খাবারের জন্য দিতে হবে ভেবে অনেকে বিরক্ত। দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, গগণমুখী তেলের দাম আর ছোট জেটের জন্য বরাদ্দকৃত তেলের জন্য আমাদের পক্ষে বিলাসবহুল সেবা আর পাতালমুখি দাম উপস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছেনা। আমি জানি অর্থনৈতিক মন্দায় অনেকের পকেট হাল্কা হয়ে গেছে। আশা করি এই হতাশার জন্য কাঊকে (নিরাপত্তার জন্য) তটস্থ থাকতে হবে না।
এটা সত্য যে ইদানিংকালে ভাড়া খুব বেড়ে গেছে। কিন্তু এটা কেউ দেখে না যে অনেকদিন ধরে ভাড়া ছিল খুব কম!!বর্তমান ভাড়া ১৯৮০এর দশকের ভাড়ার সমতুল্য। কারণ তখন মানুসের আয় ছিল কম এবং ব্যয়ও ছিল কম (এখন আয় বেশি ব্যয় ও বেশি....এটাই তো স্বাভাবিক)। এটা ভুলে গেলে চলবে না যে আগের তুলনায় এখন আমরা আরো নিরাপদ যাত্রা করি (!?)। যদিও সাম্প্রতিককালে এক্সিডেন্টের সংখ্যা বেড়েছে।
কিন্তু মোট ফ্লাইটের তুলনায় এই সংখ্যা এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেনি(সত্যিই কি তাই?????)।
কেউ স্বীকার করে না যে, পৌনঃপৌনিক বাজেট ঘাটতি, লোকবল সমস্যা আর প্রাগৈতিহাসিক প্রযুক্তি এবং জনগনের কটূক্তি সত্ত্বেও এই বলাকা শান্তির নীড় প্রতিষ্ঠায় সদা সচেষ্ট। আমরা নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ পরিবহন আর সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়েছি।
সুধীবৃন্দ আমাদের ক্রুরা আপনাদের জানাবে কখন, কিভাবে, কোনদিকে আমরা রওনা হবো। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা অপেক্ষা করতে থাকুন।
এই ফাঁকে ১০ ডলারের স্যান্ডউইচটা সময় কাটানোর জন্য খুব একটা খারাপ না। উপভোগ করতে থাকুন আমাদের সঙ্গ।
ধন্যবাদ সবাইকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।