আমি ১নং ফকীর / প্লাস ভীক্ষা দেনগ মাই
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্রমেই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুরো ব্যবস্থাটিই নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনকি মহানিরাপত্তা এলাকা হিসেবে চিহ্নিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্যাশ ও ভল্ট নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনার জন্য সংযোজিত সিসিটিভিগুলো পুরনো হয়ে গেছে; আবার বেশ কয়েকটি নষ্ট হয়ে আছে। এছাড়া ব্যাংক ভবনে প্রবেশ এবং বের হওয়ার পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী কিংবা যান্ত্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দুর্বল। এসব কারণে খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকই তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের অডিট কমিটির ১৬তম বৈঠকে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে
আলোচনা হচ্ছে। ২০০৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কি-পয়েন্ট ইনস্টলেশন্স (কেপিআই) ঘোষণা করা হয়। কেপিআই ঘোষণার পর স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), ডিটেকটিভ ব্র্যাঞ্চ (ডিবি) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সসহ (এনএসআই) বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তীক্ষষ্ট নজরদারিতে থাকার কথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলাকা। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার কোনো উদ্যোগ গত কয়েক বছরে চোখে পড়েনি।
বরং এখন পর্যন্ত চলছে সেই পুরনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়েই। কেপিআই ঘোষণা করা হলে ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রবেশের ক্ষেত্রে নানা রকম বিধি-নিষেধ থাকে। এছাড়া ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজস্ব পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ভবনে প্রবেশ করতে হয়। যে কোনো ধরনের মিছিল-মিটিং অনুমতি নিয়ে করার কথা। কিন্তু গত কয়েক বছরে এসব কোনো নিয়মই কার্যকর হয়নি।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবনে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত সাবেকি আমলের। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিক করা উচিত। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন নতুন মেশিন বসানো দরকার। এছাড়া সীমানা প্রাচীর আরও উঁচু করলে অননুমোদিত ব্যক্তিরা ব্যাংক চত্বরে প্রবেশ করতে পারবে না।
ট্রেড ইউনিয়নগুলোর তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত।
বেশ কয়েক বছর আগে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ, ক্যাশ ও ভল্ট, টাকা পোড়ানোর চুলি্লসহ নিরাপত্তা স্থানগুলোতে সিসিটিভি, আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর, হ্যান্ডহোল্ড মেটাল ডিটেক্টর, ভেহিক্যাল সার্চ মিরর এবং টাকার পোড়ানোর চুলি্ল বসানো হয়। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এসব মেশিনও পুরনো হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা উধাও হওয়া, ভল্টে জাল টাকা ঢুকে পড়া, এছাড়া ক্যাশ কাউন্টারে হচ্ছে নানা অনিয়ম। নোট পোড়ানোর চুলি্লর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল।
মহানিরাপত্তা এলাকা হিসেবে বিবেচিত ক্যাশ ও ভল্ট পুরোপুরি সিসিটিভি সিস্টেম দিয়ে মনিটর করার কথা। জানা গেছে, সিসিটিভি সিস্টেমে বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। এমন অবস্থায় ক্যাশ ও ভল্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা জরুরি ভিত্তিতে স্থাপন এবং মনিটর করার সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অডিট কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট পোড়ানোর চুলি্লগুলো সীমানা প্রাচীরের পাশেই। বেশ কয়েকটি চুলি্ল নষ্ট অবস্থায় রয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া নোট পোড়ানোর চুলি্লগুলো জরুরি ভিত্তিতে মেরামতসহ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অডিট কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে, অডিট কমিটির বৈঠকে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দর্শনার্থী এবং তাদের যানবাহন চেক করার আধুনিক সিসিটিভি, আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর, হ্যান্ডহোল্ড মেটাল ডিটেক্টর এবং আন্ডার ভেহিক্যাল সার্চ মিরর জরুরি ভিত্তিতে সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।