মানুষ মানুষের জন্য কথাটির সাথে সবাই পরিচিত। এই পরিচিত কথার সাথে আমি নিজের মত করে বলতে চাই ‘মানবতা মানুষের বাঁচার জন্য আর মানবতাকে বাঁচিয়ে রাখে মানুষের বিবেক’। বিবেক হচ্ছে মানুষের সব থেকে বড় আদালত যার মাধ্যমে মানুষ সকল ভাল -মন্দ কাজ করে থাকে। দেশকে ভালোবাসা ,দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারার মাঝে যে কি আনন্দ তা কেবলমাত্র বিবেকবান মানুষেরাই জানেন। আমি আজ সে রকম একজন দেশ দরদী,বিবেকবান,সৎ,নিঃস্বার্থ,পরপোকারী মানুষের কথা বলব ।
যিনি হতে পারেন প্রতি জেলা তথা আমাদের পুরো বাংলাদেশের বেকার সমাজের ভাগ্য উন্নয়নের মডেল। তিনি হচ্ছেন আমার লেখণীর মুখপাত্র কিশোরগঞ্জ জেলার এ,ডি.সি(রেভিনিউ) কাজী আবেদ হোসেন। কাজী আবেদ হোসেনকে নিয়ে মূল লিখায় প্রবেশ করার পূর্বে আমি সামহোয়্যার ইন ব্লগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আমাকে সাধারণ ব্লগার হিসেবে প্রথম পেজে লিখার সুযোগ দেবার জন্য। আমি বিখ্যাত কোন লেখক হতে চাই না তবে সব সময় চাই আমার লেখার দ্বারা মানুষের উপকার। আমি চাই আমার বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ নিজ মেধা,বুদ্ধি আর বিচক্ষণতা দ্বারা বিশ্বের কাছে গর্বিত হোক।
সামহোয়্যার ইন ব্লগকে আবারও স্যালুট আর প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানিয়ে এবার আমি মূল বক্তব্যে প্রবেশ করছি। জ্বী পাঠক আমি কাজী আবেদ হোসেন এর কথা বলছি,বলছি তার মহত্বের কথা । তার অসংখ্য মহত্বে দৃষ্টান্ত থেকে আজ আমি তুলে ধরছি “বেকার যুব সমাজের ভাগ্য উন্নয়নের এক দৃষ্টান্ত”। কিশোরগঞ্জ জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলায় তিনি ২০০৮ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি ভাবতে থাকেন কিভাবে এই উপজেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা যায়?ভাবতে ভাবতে তিনি মনে করলেন দেশের যুব সমাজকে প্রথমে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে কেননা যুব সমাজই দেশকে সুন্দর,সুপরিকল্পিত আর সার্থকভাবে সাজাতে পারে।
তাইতো তিনি মোহনগঞ্জে যুব সমাজকে নিয়ে গড়ে তুললেন”উজ্জল মোহনগঞ্জ”নামের একটি আভিনব সমিতি যার লক্ষ্য দারিদ্র বিমোচন। মোহনগঞ্জের সকল যুবকদের তিনি একত্রিত করলেন এবং বললেন “তোমরা তোমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করে নিজেদের উন্নত করতে পার “। এর জন্য দরকার শুধু নিজেকে উন্নত করার মানসিকতা। আমি তোমাদের উদ্দেশ্যে শুধু একটি কথাই বলব তা হলো”প্রতিদিন এক কাপ চায়ের টাকা বাঁচিয়ে তোমরা তোমাদের বেকারত্ব বা দারিদ্র বিমোচন করতে পার”। এ কথা শুনে সবাই অবাক হলো ভাবল মাত্র এক কাপ চায়ের টাকা বাঁচিয়ে কিভাবে বেকারত্ব বা দারিদ্রতার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?কারো কারো কাছে মনে হলো এটা কোন রূপকথার গল্প বা কোন ম্যাজিক।
কিন্তু এই রূপকথার গল্প বা ম্যাজিকই নব জোয়ার আনলো মোহনগঞ্জবাসীর ভাগ্যাকাশে। কাজী আবেদ হোসেনের সহযোগীতার হাত ধরে তারা ১০০জন করে সদস্য নিয়ে এক একটি সমিতি গড়ে তোলেন। প্রতিদিনের ১কাপ চায়ের টাকা বাঁচিয়ে তারা মাসে ১০০ টাকা সঞ্চয় করতে শুরু করে। কাজী আবেদ হোসেন এই অর্থকে নিরাপদ এবং জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসেন। ৬ মাস পরে তিনি এই অর্থকে টেকসই ও উৎপাদনশীল ক্ষেত্রে কাজে লাগান এবং এ টাকা থেকে তিনি সদস্যদের মাঝে সুদ মুক্ত ঋণ বিতরণ করেন।
দেশে তিনি প্রথম সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ নিশ্চিত করেন। অর্থাৎ নিজেদের অর্থে নিজেরা ঋণ নিয়ে ভোগ্যের পরিবর্তন সাধন করতে থাকে। সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে তারা ধান মাড়াই মেশিন,সেলাই মেশিন,গরু মোটাতাজা করণ,গাছ লাগান,মুরগীর খামার আর মৎস্য চাষ করে নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে সক্ষম হন। কাজী আবেদের এই কাজের মডেলটি এতই প্রশংশিত হয় যে,যার ফলশ্রুতিতে তিনি মাননীয় প্রধাণমন্ত্রীর কাছ থেকে জাতীয় স্বর্ণপদক লাভ করেন। এ বিষয়ের উপর বিশ্বব্যাংক একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তার এই অভিনব পরিকল্পনাটি গ্রহণ করেছেন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে যুব সমাজকে বলতে চাই চাকুরী নামক সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে আসুন আমরা সবাই কাজী আবেদ হোসেনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি বেকারত্বে অভিশাপ থেকে নিজেদের মুক্ত করি,সাবলম্বী হয়ে নিজেরা বাঁচি আর বলিষ্ঠ পদক্ষেপে নব পথে যাত্রা করি নতুন করে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।