আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পল্টন ময়দান এখন খালি: সাংসদরা ইউজ করতে পারেন

Bangladesh: Dream

স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি অসংসদীয় ভাষা, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বুধবার সংসদে অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত মারমুখো মনোভাবের ঘটনাকে জাতির জন্য দুঃখ এবং লজ্জাজনক অভিহিত করার পাশাপাশি ওই ঘটনার জন্য সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেছেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে স্পিকার প্রয়োজনে তার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার ও বিরোধী দল পরস্পরের সমালোচনা করতেই পারে।

তবে সেটা হতে হবে শিষ্টাচার বজায় রেখে। কড়া হুশিয়ারি উচ্চারণ করে স্পিকার বলেন, 'আল্লাহ্র ওয়াস্তে সংসদের মান-মর্যাদা রাখুন। এমনভাবে চলুন, কথা বলুন যাতে সংসদ কার্যকর হয়। দেশবাসী আশান্বিত হয়। মারামারি কিংবা রেসলিং করতে চাইলে গায়ে তেল মেখে পল্টন ময়দানে চলে যান।

সংসদ ভবনের পাশেও জায়গা আছে। সংসদে অসংসদীয় আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। ' অনেকটা আবেগাপ্লুত ও বেদনার্ত কণ্ঠে আবদুল হামিদ আরও বলেন, 'বুধবার সংসদে যা ঘটেছে, তা জাতির জন্য লজ্জাকর। ভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, কে কোথা থেকে উঠে এসেছেন। আপনারা আমাকে স্পিকার নির্বাচিত করেছেন।

সংসদের শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষায় অধিবেশন আমি আমার মতো চালাব। আপনারা যদি মনে করেন, আমাকে বাদ দেওয়া উচিত, আমি চলে যেতে প্রস্তুত। কেউ অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হবে। কাউকেই সংসদে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে দেওয়া হবে না। ' বুধবার সংসদ অধিবেশনে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সময় স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না।

সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা বুধবারের মতো গতকাল অনেকটা যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে এলেও আবদুল হামিদের কড়া মনোভাবের কারণে তারা নমনীয় ভূমিকা নেন। বুধবার যারা নানা খিস্তিখেউরসহ একে অন্যের বিরুদ্ধে নোংরা ভাষা প্রয়োগ কিংবা মারামারি করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তাদের স্পিকারের ক্ষুব্ধতার কাছে হার মেনে চুপচাপ নিজের আসনে বসতে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি তারা রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনাকালেও ব্যক্তি আক্রমণ বা অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেননি। দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী প্রশ্নোত্তরপর্ব টেবিলে উত্থাপন করামাত্রই বুধবারের ঘটনা নিয়ে কথা বলতে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর দাবি করেন বিএনপির ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া এবং আওয়ামী লীগের শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। স্পিকার কাউকে ফ্লোর না দিয়ে বলেন, 'এখন কাউকে ফ্লোর দেওয়া যাবে না।

পরে ফ্লোর দেওয়া হবে। এর আগে আমারও কিছু কথা আছে। ' সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের নোটিশ উত্থাপনের সময় বিএনপির আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগের গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স বুধবারের ঘটনার বিষয়ে কথা বলা শুরু করলে স্পিকার অত্যন্ত কঠোরভাবেই তাদের থামিয়ে দিয়ে নির্দেশ দেন_ নোটিশের বাইরে কোনো কথা বলা যাবে না। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনার আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও এম কে আনোয়ার ফ্লোরের জন্য দাঁড়ালে স্পিকার আবারও বলেন, 'সব শেষে কথা বলার সুযোগ দেব, এখন নয়। স্পিকারের এমন কঠোর অবস্থানের কারণে বৃহস্পতিবার সংসদকে উত্তপ্ত করার সুযোগই পাননি কেউ।

বুধবারের অপ্রত্যাশিত ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিএনপির শাম্মি আখতার, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং আওয়ামী লীগের জয়নাল আবেদীন গতকাল অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তবে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া যথারীতি ছিলেন অনুপস্থিত। বুধবার উপস্থিত থাকলেও বৃহস্পতিবার সংসদে আসেননি প্রধানমন্ত্রী। অধিবেশনের শুরুতেই প্রথম সারির বেশিরভাগ আসন ছিল ফাঁকা। অধিবেশনের শুরুতে চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদকে সরকারি দলের কয়েকজন সদস্যের আসনের সামনে গিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে।

এক পর্যায়ে তিনি বিএনপির আবুল খায়ের ভূঁইয়া এবং শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঙ্গেও কথা বলেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, জাতীয় পার্টির এমএ জব্বার, বিএনপির একেএম হাফিজুর রহমান, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আওয়ামী লীগের জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন ও সুলতানা বুলবুল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.