আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজতের তাণ্ডবে ‘সবুজ’ হারাল মতিঝিল-পল্টন

আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর বিজয়নগর এসে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শওকত হোসেনের মনে হয়েছিল, রাতে সেখানে টর্নেডো বয়ে গেছে। রাস্তায় ও আশপাশে পড়ে আছে আস্ত গাছ ও গাছের ডালপালা। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা গাছ সরানোর কাজ করছেন। পল্টন-বিজয়নগর সড়কের বিভাজকের ওপর যে গাছগুলো ছিল, এর অনেকগুলোই নেই। এক রাতের ব্যবধানে অনেক দিনের চেনা জায়গাটি শওকতের কাছে অচেনা মনে হচ্ছিল।


কোনো টর্নেডো নয়, হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির নামে রাতভর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ওই এলাকা। পল্টন মোড়ে প্রীতম হোটেলের সামনে থেকে বিজয়নগর মোড় পর্যন্ত এলাকায় ছোট-বড় অন্তত ৭০টি গাছ কাটা হয়েছে নির্বিচারে। সেখানে ১৫ বছরের পুরোনো অনেক গাছও ছিল, যেগুলো কাটা হয়েছে করাত দিয়ে। উপড়ে ফেলা হয় অনেক ছোট গাছ।
রাজধানীর ওই রাস্তাতেই কিছু মাঝারি আকারের গাছ ছিল।

ইট-পাথরের ঢাকার পল্টন-মতিঝিল এলাকার প্রাণ ছিল এই গাছগুলো। অথচ গতকাল বিকেল থেকে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন হেফাজতের কর্মীরা। বিজয়নগর মোড় দখলে নিয়ে তাঁরা মধ্যরাত পর্যন্ত চালান তাণ্ডব।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে নির্বিচারে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা তাণ্ডব চালিয়েছিলেন, এর সঙ্গে গতকালের কর্মকাণ্ডের অনেক মিল দেখা গেছে। অবরোধের নামে সে সময় দেশের ১০টি জেলার প্রধান সড়কের পাশে প্রায় ২০ হাজার গাছ ধ্বংস করেছেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।


আজ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তখনো রাস্তার আশপাশে অনেক গাছ, গাছের ডালপালা পড়ে আছে। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা সেগুলো সরানোর কাজ করছেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ওই এলাকায় ১৫ বছরের অনেক পুরোনো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, উপড়ে ফেলা হয়েছে। তিনি জানান, ওই এলাকায় এখন আবার নতুন করে গাছ লাগানো হবে।
হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের তাণ্ডবে গাছ নিধনের ঘটনা দুঃখজনক বলে মনে করছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মতিন।

তাঁর মতে, এই হামলায় কেবল নগরের সৌন্দর্যই নয়, নষ্ট হয়েছে নগর কাঠামো ও পরিবেশ।
ঢাকা শহরে এমনিতেই সবুজের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম মন্তব্য করে প্রথম আলো ডটকমকে আবদুল মতিন বলেন, ‘গাছের ওপর কেন আক্রোশ, সেটি আমি বুঝি না। রাজপথে গত কয়েক বছরে অনেকগুলো গাছ বেশ বড় হয়েছিল। কিন্তু যেভাবে এগুলো নষ্ট করা হলো, তা সত্যি দুঃখজনক। ’ আবদুল মতিন বলেন, ঢাকায় পার্ক নেই বললেই চলে।

ভবন নির্মাণে গাছের সংখ্যা কমে গেছে। সে জন্য কার্বণ ডাই-অক্সাইড শোষণ কম হচ্ছে। তাই এভাবে গাছ না কেটে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা হলে তা হবে সবার জন্য ভালো। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.