আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিগগির চারদলের বৈঠক, ৬ বিভাগে বিএনপির জনসভা

প্রচেষ্টা................

সরকারের ব্যর্থতা ও বিরোধীদলের ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য শিগগিরই চারদলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হচ্ছে। তবে এখনো তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। জোটের মধ্যেই ওই বৈঠক হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। সূত্র মতে যৌথ আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি দলীয় কার্যক্রমও জোরদার করা হবে। জামায়াত ইতিমধ্যেই চার বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করেছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শিগগিরই ছয় বিভাগীয় শহরে জনসভা করবেন। বিএনপি মাসব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গে ২২ ফেব্রুয়ারি পল্টনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। পরিস্থিতি যত প্রতিকূলই হোক না কেন, চারদল বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কোনমূল্যে মাঠে থাকতে চায়। বিএনপির জনসভার বিষয়ে জানতে চাইলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘এ ধরনের একটি কর্মসূচি আছে, তবে দিন তারিখ বলতে পারবো না। ’ চারদলের বৈঠকের বিষয়টি একান্তই ম্যাডামের এবং এ নিয়ে স্থায়ী কমিটিতে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি।

গত শনিবার রাতে জামায়াতের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান নিয়ে জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী। কিন্তু বেগম জিয়া সামনাসামনি আলোচনার জন্য বললে নিজামী ছুটে যান গুলশান কার্যালয়ে। বৈঠক শেষে মাওলানা নিজামী খোশ মেজাজেই সোজা মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফেরেন। বৈঠকের সারবস্তু সম্পর্কে তিনি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কয়েক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সূত্র জানায়, অচিরেই চারদলীয় ঐক্যজোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক আহ্বান করা হবে।

তবে, কবে কখন এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তা জানাতে না পারলেও জোট সম্প্রসারণেরও ইঙ্গিত দিয়েছে ওই সূত্র। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত প্রার্থীদের গ্লানিকর পরাজয়ের পর শীর্ষ নেতাদের দেখা-সাক্ষাৎ হলেও চারদলের আনুষ্ঠানিক কোন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দফতরে সংঘটিত নৃশংস সেনা হত্যাযজ্ঞের পর জামায়াতসহ অপরাপর শরিকরা জোটের বৈঠক ডাকতে বেশ পীড়াপীড়ি করেছিল। কিন্তু বিএনপি তাতে আগ্রহ দেখায়নি। ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির ক্যাডারদের হাতে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ডের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ সারাদেশে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে।

এতে জামায়াত নেতৃত্ব চিন্তিত। বিপদে মিত্রদল বিএনপিকে পাশে পেতে জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করেন। আমন্ত্রণ পেয়ে রাত ৮টায় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যান। চারদলের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী বর্তমান প্রেক্ষাপটে চারদলের বৈঠক ডাকার দরকার আছে বলে মনে করেন। তবে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ট্রেন চালু হয়ে গেছে, কে আসলো কে আসলো না তা দেখার দরকার নেই।

’ জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেন, ‘জামায়াত দুঃসময় অতিক্রম করছে ঠিক, কিন্তু বিএনপিও এতো সুখে নেই। ক্ষমতার কাছাকাছি দল বিএনপি, সুতরাং চারদলকে সংগঠিত করার প্রয়োজন বিএনপিরই বেশি। ’ জামায়াতের নীতি-নির্ধারকরা মনে করছেন, সরকার নানা ইস্যুতে বিএনপি, জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক সকল দলকে সমানভাবে উত্যক্ত করছে। ফলে কেউই স্বস্তিতে ঘরে বসে থাকতে পারবে না। পুলিশের একতরফা চিরুনি অভিযানের বিরুদ্ধে জোটের শরিকদের পাশাপাশি গত সোমবার মুক্তাঙ্গনের সমাবেশে চরমোনাইপীর মুফতি সৈয়দ মো, রেজাউল করিমের বক্তব্যকে ইতিবাচক মনে করছে জামায়াত।

এ সমাবেশে চরমোনাইপীর বলেছেন, ‘যারা ইসলামের নামে রগকাটে আমরা তাদের বিচার চাই। কিন্তু বিনা দোষে কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক হওয়ায় পাইকারিভাবে তাদের গ্রেফতার মেনে নেওয়া হবে না। ’ চরমোনাইপীর ও তার দল ইসলামী আন্দোলন ধর্মীয়ভাবে জামায়াত বিদ্বেষী সংগঠন। এদিকে, জামায়াতের বিপর্যয়কর সময়ে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থাপনা থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নাম পরিবর্তনকে আন্দোলনের সহায়ক বলে মনে করছে জামায়াত। জিয়া বিমানবন্দরের নাম বদলের প্রতিবাদে বিএনপি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে।

দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার ও তাদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ করে জামায়াত ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় শহরে তিন দিনের কর্মসূচি পালন করে। এই কর্মসূচির পর ১৯ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে পেশাজীবী সমাবেশ, ভাষা দিবসের আলোচনা ও ভাষা শহীদদের জন্য দোয়া অনুষ্ঠান করবে বলে জানিয়েছে দলের একটি সূত্র। রাজশাহীর ঘটনায় বিএনপির ভূমিকা ইতিবাচক মন্তব্য করে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা বলেন, ‘এ ইস্যুতে বিএনপি নেতারা কথা বলেছেন, সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেছেন; আর কি করার আছে। বাকি যা করার তাও হবে। ’


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.