একজন সাধারণ মানুষ যে সব সময় সাধারনই থাকতে চায়
আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা এই শ্লোগানটি আমার খুব প্রিয় ”আমরা নিরপেক্ষ নই, আমরা জনগণের পক্ষ্যে”। মানুষ কখনই নিরপেক্ষ হতে পারে না এই বিখ্যাত কথাটা কার এখন মনে পড়ছেনা। এই দুটো কথা এখানে উল্লেখ করার কারণ আজকাল যে পক্ষপাতদুষ্ট শব্দটি ব্যবহার হয় আমি এর সাথে একমত নই। বরং আমার সব সময় মনে হয় যারা নিরক্ষেপতার লেবাসে নিজেদের ঢেকে রাখে পক্ষপাতদুষ্টদেও চেয়ে তারা আরো বেশী ভয়ংকর। পক্ষপাতদুষ্টরা সরাসরিই আপনাকে আক্রমন করবে।
কিন্তু যারা নিরপেক্ষতার লেবাস পড়ে থাকে তারা আপনাকে আক্রমন করবে আড়ালে যা আপনি প্রতিরোধ করতে পারবেন না। আর প্রকৃত নিরপেক্ষ বলতে আমি তাদের বুঝি যারা স্বার্থ, লোভ, প্রতিহিংসা পরায়ন সব কিছুর বাইরে নিজেকে রেখে নিজে পক্ষপাতদুষ্ট হয়েও ভালকে ভালো বলবে এবং খারাপকে খারাপ বলবে শুধু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতায় মাতবেনা। যা আমার এ দেশটায় খুবি বিরল। আমার ব্যক্তিগত চিন্তায় আমি পক্ষপাকদুষ্টদেও তিন ভাগে ভাগ করে দেখি
১। উচ্চ পক্ষপাতদুষ্টঃ আমাদের রাজনীতিবিদরা এই শ্রেণীর।
যারা সব সময় রাজনীতিবিদ কখনই মানুষ নয়। যতদিন তারা রাজনৈতিক ঘরটোপ দেখিয়ে বেড়িয়ে মানুষ না হবে ততদিন তাদেও নিয়ে যতকিছুই করুন আমার মনে হয় না কোন লাভ হবে। এদের সম্বন্ধে লিখতে ভয় পাই। কারণ ব্লগে রাজনৈতকি পোষ্ট গুলোর মন্তব্যে যে রকম মন্তব্য বা তার প্রতিউত্তর হয় তা আমার জন্য বির্বতকর। আমার কাছে রাজনৈতিবীদ কি রকম তার ছোট একটি উদারণ দিই।
অবশ্য আমার এ উদারহরণ দেখে এক পক্ষ আমাকে ভারতঘরনার পক্ষপাতদুষ্ট মনে করবে।
বেশকিছুদিন আগে রাহুলগান্ধি কোন এক স্কুলে গিয়ে তার বক্তিতায় বলেছে ” আমি হচ্ছে পারিবারিক রাজনীতির জলন্ত উদাহরণ। আমি যদি পরিবারের সার্পোট না পেতাম তাহলে রাজনীতিতে আজ এতদুর আসতে পারতাম না”।
এই বক্তব্যটি যদি আমি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে বিশ্লেষন করি । তবে এখানে রাহুল নিজের স্বচ্ছ এবং ভালোমানুষি দেখিয়ে নিজের জনপ্রিয়তা, দলের জনপ্রিয়তা, সর্বপরি জনগণের প্রিয় হবার একটি রাজনৈকিত দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে।
এরকম দূরদর্শিতার পরিচয় আমাদের দেশের রাজনীতিবীদরা দিতে পারে না। তাদের কি শিক্ষা দিক্ষা ও জ্ঞানের অভাব, আমার কখনই তা কম মনে হয় না। শুধু প্রয়োগের অভাবটাই দেখতে পাই।
২। মধ্য পক্ষপাতদুষ্ঠঃ এরা আমাদের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজ।
যারা সক্রিয় রাজনীতিতে কখনই অংশগ্রহন করতে পারে না। সর্বক্ষণ রাজনীতিবিদদের গাল মন্দ করে। কিন্তু নিজে কখনই এই দেশের জন্য সামান্য কিছু করার কথা মনে করে না। কোন ঘরোয়া আড্ডায় কিংবা বন্ধুদের আড্ডাদেও সুযোগ পেলেই নিজের রাজনৈতিক পরিচয় কিন্তু ঠিকই প্রকাশ করে ফেলে।
৩।
নিম্ন পক্ষপাতদুষ্ঠঃ এরা আমাদের নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া চাষভূষা। যাদেরকে আমরা দেশের সম্পদ বলে সেই সম্পদেও ঘাড়ে বসে খাই। এরা পাঁচ বছরে একবার করে পক্ষপাতদুষ্ট হন ভোট দিয়ে, কিছুদিন ভোটের মিছিলে সালিম হয়ে আনন্দ করে।
এর বাইরে আরেকটা ছোট শ্রেণী আছে যাদেরকে আমরা নিরপেক্ষদের কাতারে ফেলি, তারা আমদের বুদ্ধিজীবী। এদের কথা আমি বলতে চাই না কারণ জ্ঞানি গুনিদেও বিষয়ে বলতে গেলে অনেক জ্ঞানি হতে হয় যা আমি নই।
শুধু এটুকু বলি আমাদের সমাজে কেউ একজন ভাল গান যায়, কেউ একজন ভাল ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলে, কেউ ভালো কবিতা লিখলেই নিজেতের বুদ্ধিজীবী মনে করে। আমরা শুধু অভ্যেসে তাদের কথায় সায় দিয়ে চলি।
এই লেখাটুকু পড়ে অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন আপনি তবে কাদের দলে। আমি ভাই লেবাসী নিরপেক্ষদের দলে। আমার স্বার্থ আছে, লোভ, প্রতিহিংসা পরায়ন সবই আছে।
এ সামজে যে বেচে থাকতে হলে যে এসবই থাকতে হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।