আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন ছাত্রনেতা হিসেবে যা পেয়েছি/করেছি আর যা হারিয়েছি। পিছন ফিরলে নিজেকে আর মানুষ মনে হয়না।



একজন ছাত্রনেতা হিসেবে যা পেয়েছি বা যা করেছি: ১। হলে সিংগেল রুমে থাকার অধিকার ( যা সাধারনত: হলের সেরা ছাত্রদের পাওয়ার কথা) ২। মোড়ের হোটেলে বাকী খাওয়ার সুযোগ এবং অবধারিতভাবেই সেই বাকীর কথা ভুলে যাওয়া। ৩। হলের ক্যান্টিনে বছর ব্যাপী বাকীর খাতা খোলার অধিকার এবং গ্রুপিং এর কারনে হয় আমার হল ত্যাগ নতুবা ক্যান্টিনের মামার হল ত্যাগ।

সুতরাং বাকী আর শোধ করা লাগেনি। ৪। মান্থলী ফিস্টে ৪-৫টা রোস্ট ( যদিও বরাদ্ধ ১ টি) এবং অছাত্র বনধুদের নিয়ে ধুমধাম ডিনার শেষে হালকা টান.......... ( বুঝে নিন) ৫। হলের আশেপাশের ফটোস্ট্যাট, ষ্টেশনারী, চা স্টলে চাঁদাবাজি। ৬।

টিভি রুমে রিমোটের ফুল কন্ট্রোল। ৭। ক্যারাম, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিসে পারদর্শী না হয়েই দীর্ঘসময় সেগুলো নিজ দখলে রাখা। ৮। দলীয় কর্মসুচীতে সাধারন ছাত্রদের অংশগ্রহনে বাধ্য করা ( যেভাবে ফার্স্ট ইয়ারে আমাকে বাধ্য করা হতো) ৯।

সামান্য তুচ্ছ কারনেই বিরুধী মতের ছেলেদের শারীরীক নির্যাতন, রুম ভাংচুর, হল ত্যাগে বাধ্য করা ইত্যাদি। ১০। কোমরে পিস্তল, হাতে রাম দা ইত্যাদি নিয়ে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস বিরুধী জংগী মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া এবং ক্যাম্পাস থেকে সন্ত্রাস নির্মুলের অংগীকার। ১১। বড় ভাই ( নেতা ) কে সালাম না দেওয়ায় আমার চেয়ে ২-৩ ইয়ারের সিনিয়র ভাইকে হল গেটে চর-থাপ্পর দিয়ে আদব-কায়দা শেখানো।

১২। নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং এর কারনে মারামারি, গুলাগুলি করে বিরুধী দলের পোলাপানের রুম ভাংচুর। ১৩। গেষ্ট রুমের দখল বজায় রাখার জন্য দিনের পর দিন বা রাত সেখানে আড্ডা দেওয়া, যেন হলের সকল ছাত্রের গেস্ট আমার আত্মার আত্মীয়। ১৪।

বড় ভাইকে ভাইভাতে ফেল করানোতে স্যারের চেম্বার ভাংচুর ( কানে কানে বলি, ঐ স্যার আবার ভিন্ন রংয়ের সাপোর্টার) ১৫। বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে পড়াশোনা ঠিকমতো করা যায়নি, সুতরাং পরীক্ষার রুটিন হলেই পেছানোর জন্য আন্দোলন। ১৬। ভিসি স্যারের অতি আপন জন। এমনকি রাত ৩-৪ টায় ওনার বাসভবনের দরজা আমার জন্য খোলা।

১৭। উপরের নির্দেশে হল দখল, ভাংচুর, মারামারি, প্রয়োজনে খুনোখুনি ইতাদি। আপাতত আর মনে পড়ছেনা, তবে আছে অনেক। উপরের লেখা পড়ে আমাকে কি মানুষ মনে হচ্ছে? নাকি পশু? কি কি হারিয়েছি ১। মনুষত্ব ২।

..................... আজ আর লিখতে ইচ্ছে করছেনা, অন্য কোনদিন লিখবো। ( নব্বই বা তার আগের ছাত্রনেতাদের কথা জানিনা, তবে নব্বই পরবর্তী ছাত্রনেতাদের এগুলো কমন প্রাকটিস, হয়তো দু-একটা এদিক সেদিক হবে। তার পরও কি ছাত্র রাজনীতীর দরকার আছে ? উত্তর হলো: আছে। কেননা আমরা হচ্ছি বলির পাঠা, আমাদেরকে বলি দিয়েই দেশনেত্রী, জননেত্রী , নিজামীরা ক্ষমতার স্বাদ উপভোগ করে । সুতরাং ছাত্র রাজনীতী থাকবেই আর ফলাফল স্বরুপ ফারুক বা আবু বকর বা মহিউদ্দিনরা লাশ হয়ে ঘরে ফিরবে।

)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.