পাট জাগ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন রংপুর বিভাগের আট জেলার কৃষক। পাট জাগ দেওয়ার মতো পানি ডোবা ও নিচু জমি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন পুরোপুরি পাট কাটার সময় হলেও কাটতে পারছেন না কৃষক। আবার অনেকে পাট কেটে জমিতে কিংবা নিচু জায়গায় স্তূপ করে রাখায় শুকিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া এ অঞ্চলের অনেক কৃষকেরই পাট পচনের আধুনিক পদ্ধতি রিবন রেটিং সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই।
তবে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ফিরোজ আহমেদ বলেন, রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট আগে কাটতে হয় তারপর গোড়া থেঁতলাতে হয়। এ বিষয়টিকে কৃষকরা ঝামেলা মনে করেন। জানা গেছে, এ বছর রংপুর বিভাগের আট জেলায় দুই লাখ চার হাজার ৭৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ আট হাজার ১৪৬ মেট্রিক টন। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে চাষের লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় দুই লাখ ৮০ হাজার ৪৭৬ হেক্টরে। ৭৬ হাজার ৪০৩ হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুর আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক সেকেন্দার আলী বলেন, এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ২০-৩০ শতাংশ জমির পাট কাটা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পাট পচাতে না পারলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমে যাবে।
পাবনা : পাবনা জেলার দক্ষিণ দিক দিয়ে পদ্মা, পূর্বে প্রবহমান যমুনা নদী। আছে বড়াল, চিকনাই, গুমানি এবং ইছামতী নদী। এর পরও সংকট পানির।
রিবন রেটিং পদ্ধতি এ এলাকার কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বা প্রসার লাভ না করায় সমস্যা প্রকট হয়েছে। কৃষককে বাধ্য হয়ে সনাতন পদ্ধতিতে জাগ দিতে হচ্ছে পাট।
বন্যার পানিতে সাধারণত এ এলাকার কৃষকরা পাট জাগ দেন। কিন্তু বন্যা না হওয়ায় পানির সংকট মাঠে-ঘাটে। চলনবিল এবং বিল গাজনাতেও পর্যাপ্ত পানি নেই।
নদী, খাল-বিলে যেখানে যেটুকু পানি আছে, তাতে পাট জাগ দিচ্ছেন পাবনার কৃষকরা। এতে পরিবেশের মারাত্দক ক্ষতি হচ্ছে। ইছামতী নদীর পানি পচে গেছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পানিতে গোসল করলেই এখন খোস-পাচড়া ও চুলকানি হচ্ছে।
গৃহস্থালি কাজে ইছামতীর পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আটঘড়িয়া, আতাইকুলা, পাবনা সদর এবং ঈশ্বরদী এলাকার কৃষকরা পাট কেটে জমিতেই স্তূপ করে রেখেছেন কৃষকরা। কোনো কোনো এলাকায় সড়ক পাশর্্ববর্তী খালে এবং ডোবাতে পাট জাগ দিচ্ছেন। ঘোলা এবং কর্দমাক্ত পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের মান খারাপ হচ্ছে। অনেকে গরুর গাড়ি, নসিমন, করিমন ও ভ্যানে করে ৭-৮ কিলোমিটার দূরের জলাশয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন।
কৃষকের কাছে পাট যেন এখন গলার ফাঁস হওয়ার অবস্থা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।