যে মামলায় এই পরোয়ানা জারি হয়েছে, মুদ্রা পাচারের ওই মামলাটি ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেছে তার দল।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে রোববার আদালত এই পরোয়ানা জারির পরপরই বিএনপি তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন ডেকে এর প্রতিক্রিয়া জানায়।
বিকালে আবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু দুদকের উদ্যোগের প্রতিবাদ জানান।
দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেককে গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে সোমবার হরতাল ডেকেছে স্থানীয় বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হন।
জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর পাঁচ বছর আগে তিনি লন্ডন যান। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সেখানেই রয়েছেন তিনি।
লন্ডনে সম্প্রতি বিএনপির এক সভায় তারেকের দেয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সরকারি দলের বিভিন্ন নেতার সমালোচনার পর এই পরোয়ানা জারিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছে বিএনপি।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান এক্ষেত্রে রাজনৈতিক অভিসন্ধির অভিযোগ নাকচ করেছেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যে মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো হয়েছে, তার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
যাদের ওই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে, তারাও কিছু বলেননি।
“আমরা মনে করি, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা ওই মিথ্যা মামলা এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি। ”
২০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর দুদকের করা এই মামলায় তারেকের অনুপস্থিতিতেই বিচার চলছে।
তারেককে ফেরাতে যা যা করা দরকার, সবই করা হবে- দুদনি আগে দেয়া আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের এই বক্তব্য উদ্ধৃত করেন শামসুজ্জামান।
“আইন প্রতিমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার আদলেই আদালত আজ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন। আমরা জানি, সর্বত্র দলীয়করণ করা হয়েছে। ”
লন্ডনে বিএনপির সভায় তারেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের ওপর চাপ দিতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান, যা ‘ষড়যন্ত্র’ উল্লেখ করে সমালোচনায় মুখর হন সরকারি দলের নেতারা।
একটি জাতীয় দৈনিকের জনমত জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে তারেক আরো বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মানুষ নির্দলীয় সরকারের পক্ষে।
“ওই বক্তব্যের সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে,” বলেন শামসুজ্জামান।
তারেক অসুস্থ দাবি করে তিনি বলেন, “আইনের আওতায় তিনি লন্ডনে চিকিৎসা নিতে গেছেন, এখনো নিচ্ছেন। ”
তারেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে কোনো কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে শামসুজ্জামান বলেন, “আমরা কর্মসূচির ভেতরেই আছি। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার যোগ্য আসনে অভিষিক্ত করতে দেশবাসী যা যা করা দরকার, তারা তাই করবে। ”
সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা, রাজবন্দিদের মুক্তি দাবিতে ১৮ দলের দিনব্যাপী হরতালের পর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন শামসুজ্জামান।
তিনি বলেন, পুলিশসহ ক্ষমতাসীন দলের নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সারাদেশে জনগণ সর্বাত্মক হরতাল করেছে।
হরতালে বিভিন্ন জেলায় ১১১ জন গ্রেপ্তার এবং পুলিশি হামলায় দুই শতাধিক আহত হয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুজনের সাজা হয়েছে বলেও জানান শামসুজ্জামান।
হরতাল দিয়ে সংলাপের সম্ভাবনা বিরোধী দল নস্যাৎ করছে বলে সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্যও নাকচ করেন তিনি।
“আমরা শেষ দিন পর্যন্ত সংলাপের আশা নিয়ে থাকবো। আন্দোলন-সংগ্রামও চলবে, সংলাপের বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখছি।
”
“সরকার সংলাপ কিংবা আলোচনার বিষয়টি যদি গুরুত্ব না দেয়, তবে ফয়সালা রাজপথেই হবে,” হুঁশিয়ারি দেন ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুজ্জামানের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তকদির হোসেন মো. জসিম প্রমুখ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।