শীতের পিঠা খেতে মা বাড়িতে যেতে বলেছিলেন।
মার্চ মাসে পরীক্ষা শেষে বাড়ি যাবে বলে মাকে জানিয়ে দেন আবু বকর সিদ্দিক। . তার আগেই বাধ্য হয়ে বাড়িতে যেতে হলো তাকে। .তবে লাশ হয়ে বাড়ীতে যেতে হলো আবুবকরকে। সেই আর কখনো তার প্রিয় ক্যাম্পাস ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে না।
.
চীরদিন বাড়ীর পাশে কবরে শুয়ে থাকবে আবু বকর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিববাদী ছাত্রলীগের নিজস্ব কোন্দলের বলি হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মেধাবী ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক মারা যান। .গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। .
মৃত্যর সাথে পাঞ্জা লড়ে গতকাল সকাল ৯টা ২০মিনিটে সবাইকে ছেড়ে পরকালে চলে যান তিনি। ।
তার বড় ভাই আব্বাস আলীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অভিমানের সুরে বলেন,কি হবে কথা বলে,আপনারা কি আমার ভাইকে এনে দিতে পারবেন? আমার ভাইকে আপনারাতো মেরে পেললেন। .
মাকে কি জবাব দিবো। ,মা এখনো আবু বকরের মৃত্য খবর জানেনা। ,তিনি আবু বকরকে বাড়ীতে যেতে বলেছিলো ,কিন্তু পরীক্ষার কথা বলে সে বাড়িতে জায়নি। .
আব্বাস বলেন, "মাকে বলা হয়েছে সামান্য আহত।
সেই থেকে মা কেঁদেই চলছেন। ,তিনি কখনো শহরে আসেননি বলে হুট করে তাকে আনাও যাচ্ছিলো না। " বাবাকে বলা হয়েছে আসতে। .তবে বুধবার তিনি আসার আগেই চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন আবু বকরকে। .
তার ভাই জানান, "বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর সে প্রথম শ্রেণী ধরে রেখেছিলো, তবে দ্বিতীয় অবস্থানে।
প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়ার জন্য কুরবানি ঈদের পর সে আর বাড়ি যায়নি।
মা কান্নাকাটি করে। একদিন ফোন করে আসতে বললাম। সে বললো- 'মার্চে ৫ম সেমিস্টার ফাইনাল পরীা শেষে ছুটিতে বাড়ি ফিরবো'। " বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমে একটি টিউশনি করতো
আবু বকর।
ভালো ফলাফলের আশায় পরে আমার পরামর্শে তা ছেড়ে দেন। আব্বাসের ইচ্ছা ছিলো, তার ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে। .
ইসলামের ইতিহাস বিভাগে ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন আবু বকর।
বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরের গোলবাড়ি
গ্রামে। কৃষক রুস্তম আলীর ছয় সন্তানের সন্তানের মধ্যে তিনি তৃতীয়।
.২০০৬-০৭ সেশনে ঢাবিতে ভর্তি হয়। এফ রহমান হলের ৪০৪ রুমে থাকত । বিভাগে সে প্রথম শ্রেনিতে২য় স্থানে ।
পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় তাকে নিয়ে সপ্ন দেখছে পরিবার.। বড় বোনের বিয়ে কিছুদিন আগে।
.তার পরের ভাই আব্বাসের আয়ে চলছে সংসার। গ্রামে কাঁচামালের দোকান করে আবু বকরসহ ছোট দুই ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ চালান তিনি।
"ভাই আহত হওয়ার পর ঢাকায় আসতে হয়েছে দোকান বন্ধ রেখে; দোকান বন্ধ, তাই আয়-রোজগারও বন্ধ", বলেন আব্বাস।
তার ভাই বলেন,আমার ভাই কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো না। ,তার পরও আবুবকরকে কের প্রাণ দিতে হলো।
আমি কারো বিচার চাই না। আল্লাহ এর বিচার করবেন।
উল্লেখ্য,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতার পরে এ নিয়ে ৭২জন ছাত্র-শিককের হত্যাকন্ড ঘটলেও এটাই সর্বপ্রথম সাধারণ ছাত্র হত্যার শিকার হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।