কোন রকমে টিকে থাকা শেষ, বেঁচে থাকার শুরু....
বই: আনন্দ পাঠ
শ্রেণী: ৬ষ্ঠ শ্রেণী
'জাদুকর'-হুমায়ূন আহমেদ।
_____________________________
সমস্যাটা কোথায়?
বাবুল বলল, আমি যদি ওদের সংগে কথা বলি ওরা আমার কথা বুঝতে পারবে?দু'একটা কথা বুঝতে পারে। তবে বেশিরভাগই বুঝতে পারে না। ওদের বুদ্ধিবৃত্তি নিম্নস্তরের। অবশ্য সবার না।
পৃথিবীতে অনেক বুদ্ধিমান প্রাণী আছে, যেমন ধরো তিমি মাছ।
তিমি মাছ বুদ্ধিমান?
অত্যন্ত বুদ্ধিমান। শুধু হাত নেই বলে যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে না। ডলফিনও খুব বুদ্ধিমান। ওদের যদি হাত থাকতো তাহলে পৃথিবীর চেহারা পাল্টে যেত।
...পৃষ্ঠা ৮
__________________________
ভুলটা উপরের অংশের মধ্যেই। হুমায়ূন আহমেদ স্যার মস্ত লেখক। তার লেখা কার না ভালো লাগে?বলতে গেলে একটা গোষ্ঠি আছে যারা তার নাম শুনেই পাগল। তাই বলে কি তিনি যা লিখবেন তাই গিলতে হবে?
উদ্ধৃত গল্পে স্তন্যপায়ী তিমিকে বোঝানো হয়েছে তিমি মাছ বলে। একটা ছেলে যখন প্রশ্ন করে সবচেয়ে বড় মাছ কি?তখন উত্তর আসে-তিমি মাছ।
অবাক হই। বিজ্ঞানের এই যুগে স্তন্যপায়ীকে মাছ বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আমার মত হলো-ফ্যান্টাসি লিখেন ভালো কথা। আমার অবশ্যই রসকস নিয়ে পড়বো,সাধুবাদ জানাবো,নাম শুনে অজ্ঞান হবো। কিন্তু যা সত্য ঘটে গেছে, নির্ভেজাল প্রমাণিত তা নিয়ে কেন ফ্যান্টাসি?সত্যি হাস্যকর।
একেবারে বেমানান।
আজ ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা জানছে তিমি কে মাছ বলে। আর স্যারের মতো লেখকেরাও বসে নেই। তারাও নিজের মতো ফ্যান্টাসি সৃষ্টিতে মত্ত। গ্রহ-নক্ষত্র,গ্যালাক্মি আর হাবিজাবি দিয়ে জগত ভরে ফেলছেন।
আরে ভাই কি লিখছেন একবার পড়েন আগে,ব্যবসা না হয় পড়েই করেন।
অনেকদিন আগে সদরঘাটে গিয়েছিলাম। সাথে এক প্রিয় বড় ভাই ছিলেন। হাটার এক সময় থেমে গেলেন এক হকার বই বিক্রেতাকে দেখে। তার কাছ থেকে একটা বই নিয়ে দেখালেন-একদম পিচ্চি যে বাবু, কেবল মা-বাবার হাত ধরে ছবি দেখে দেখে জগতটা চিনবে বলে ছোট ছোট দাঁত বের করেছে তার জন্য একটা লেমেনেটিং করা সুন্দর ছবির বই।
সেখানে সাগরের নানা প্রাণীর ছবি। ভাইয়া বল্লেন- দেখো তিমিকে মাছ বলে শেখানো হচ্ছে। মজা করে তিনি বল্লেন-এটা পড়ে যে ছেলেমেয়েরা বড় হবে তারা এক সময় তিমি খেতে চাইবে। হা হা হা। ...
আমার খুব খারাপ লাগলো।
এরকম কত যে ভুলে ভরা আমাদের বইগুলো। সেই কচি বয়স থেকেই জগতটা আমাদের ভুল শেখাচ্ছে। আমরা ভুল জেনে জেনে বড় হচ্ছি। কই কোথাও কি সমস্যা হচ্ছে?কেও কি বলতে পারেন,কি সমস্যা?
খুব রাগ লাগলো হুমায়ূন আহমেদ এর উপর যখন অনেক কষ্ট করেও বুঝাতে পারি নি আমার ছোট্ট এক ভাইকে-
তিমি মাছ না স্তন্যপায়ী।
ও কি বলেন জানেন!!!এটা হুমায়ূন আহমেদ লিখছে না,ওনি নাটক বানান না?ওনি ভুল লিখবেন কেন?
ভাইটাকে পরে একসময় বোঝানো যাবে।
কিন্তু সারা বাংলাদেশে এরকম কত ভাই;তাদের বোঝাবে কে?
উত্তরটা জানি না। তবে হুমায়ূন আহমেদ কিংবা কোন বই লেখক,সম্পাদক যে নয় তা নিশ্চিত জানি।
লেখক হওয়া সোজা কিন্তু দ্বায়িত্ব পালন বলে একটা ব্যাপার আছে যা কয় জন পারে?
হয়তো আমরা নবীন লেখকরা ওনাদের মতই একটা সময় হারিয়ে যাবো। কেও কি চ্যালেঞ্জ ছোড়ার আছেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।