আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচন ও সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে মানসিকতা ও প্রক্রিয়ার পরিবর্তন চাই

সমাজের প্রয়োজনকে ঘিরে যার জীবন আবর্তিত সেই তো প্রকৃত মানুষ

বিগত শতকের আশির দশক থেকে বাংলাদেশের যে-কোনো পর্যায়ের নির্বাচনে (স্থানীয় সরকারের নিম্ন স্তর অর্থাৎ ইউপি নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আর সরকারি চাকরির প্রার্থী হওয়াকে (যেমন : পুলিশ ও কাস্টমসের চাকরি, জেলা প্রশাসনের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি, সিভিল সার্জনের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বাস্থ্য সহকারীর চাকরি ইত্যাদি) সংশ্লিষ্টরা এক ধরনের বিনিয়োগ মনে করে। কারণ, এসব ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় কিংবা লাখ-লাখ টাকা লেনদেন ছাড়া নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া কিংবা চাকরি নামক সোনার হরিণটিকে ধরা যায় না। নির্বাচন বলুন আর চাকরিই বলুন প্রার্থীর প্রধান যোগ্যতা টাকা খরচ করার ক্ষমতা, যাকে আমরা বলে থাকি টাকার খেলা। নির্বাচনে জেতার পর ওই জনপ্রতিনিধি তাঁর বিনিয়োগকৃত অর্থের গুণিতক পরিমাণ টাকা তাঁর ক্ষমতার মেয়াদে তুলে আনতে সচেষ্ট থাকেন (এটা হতে পারে কমিশন খেয়ে, নগদ প্রাপ্তির বিনিময়ে সুপারিশ করে, ভুয়া প্রকল্প বরাদ্দ দিয়ে, নিজের বা দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদা তুলে ইত্যাদি)। আর চাকরিপ্রার্থীরা চাকরি নামক সোনার হরিণটি হাতে পাওয়ার পর তাঁর প্রদত্ত ঘুসের টাকা সুদে-আসলে তুলতে শুরু করেন (যেমন : পুলিশের ক্ষেত্রে দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানিয়ে, কাস্টমসের ক্ষেত্রে সরকারি কোষাগারকে তলানিতে নামিয়ে)।

এ ক্ষেত্রে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে সংবাদ শিরোনাম হওয়া কোটিপতি কিংবা একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক পিডিবি, বাখরাবাদ কিংবা তিতাস গ্যাস লিমিটেডের মিটার রিডারদের নাম স্মরণ করা যেতে পারে। যাঁরা প্রয়োজনীয় যোগ্যতা (শিক্ষাগত ও চারিত্রিক) ছাড়া নির্বাচনে জেতেন কিংবা সরকারি চাকরি পান তাঁদের কাছ থেকে সাধারণ জনগণ কোনো পরিসেবা পায় না, পায় শুধু হয়রানি। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় যোগ্যতাবলে উতরিয়ে আসা জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা জনগণকে ঠিকই পরিসেবা দেন। এবার মডেল থানা প্রসঙ্গ। আমার নিজ জেলার সদর থানাটি একটি মডেল থানা।

একে কেন মডেল থানা বলা হল আমি ঠিক জানি না। মাসে দু-একটি ওপেন ডে অনুষ্ঠান করলেই মডেল থানা হয়ে যায়? কনস্টেবল থেকে এসআই পর্যন্ত (যেহেতু ওসি পদে সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয় না) স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় (কোনো রকম ঘুস ছাড়া) নিয়োগ দিয়ে তাঁদেরকে মডেল থানায় পোস্টিং দেওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট থানাগুলো গুণগত মান পরিবর্তিত হয়ে মডেল থানায় রূপান্তরিত হবে, অন্যথায় নয়। কারণ, ঘুস ছাড়া চাকরি পাওয়া পুলিশ পরিসেবার বিনিময়ে ঘুস চাইবে না।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.