আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৃত্যুর পরে

মৃত্যুর পরে কি পরিণতি হয় তা নিয়ে যথেষ্ট দ্বন্দ্ব আছে৷ মৃত্যুর পরে, একজন মানুষ বাস করে একটি “অস্থায়ী” স্বর্গ বা নরকে৷ মৃত্যুর পরবর্তী জীবন সম্পর্কিত প্রশ্নটা নিছক খেয়ালী দার্শনিক প্রশ্ন নয় ; বরং বাস্তব জীবনেরই প্রশ্ন। যারা যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করে, বাইবেলে বলা আছে যে মৃত্যুর পরে বিশ্বাসীদের আত্মা স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হয়, কারন তারা প্রভূ যীশুকে নিজেদের মুক্তিদাতা হিসেবে স্বীকার করেছে বলে তাদের পাপ ক্ষমা করা হয় । মানুষ মারা গেলে তার যতগুলো দরজা পৃথিবীতে জীবিত থাকা অবস্থায় খোলা ছিল, তার প্রতিটি দরজাই বন্ধ হয়ে যায়। বুদ্ধিমত্তার দিক দিয়ে কোনো একটা জিনিস সন্বন্ধে অবগত হওয়ার যাবতীয় উপকরণ হস্তগত না হওয়া পর্যন্ত ‘না’ অথবা ‘হাঁ’ সূচক কোনো সিদ্ধান্ত থেকে দূরে থাকা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু কোনো জিনিসের সাথে যখন আমাদের কার্যপদ্ধতি স্থির করা ছাড়া কোনোই উপায় থাকে না, তখন তা অবশ্যই করতে হয়।

ডাকাতি করা ভাল না মন্দ কাজ? ভারসাম্যপূর্ণ সাধারন একজন মানুষও বলবেন, এটা জঘন্য কাজ্‌ পরকালের ভালো-মন্দ যে বিশ্বাস করে না সে কেমন করে একজন শক্তিশালী ও প্রভাবশালী অপরাধীকে বোঝাবে যে, ডাকাতি একটি জঘন্য অপরাধ? "আজিকে হয়েছে শান্তি, জীবনের ভুলভ্রান্তি সব গেছে চুকে। রাত্রিদিন ধুক্‌ধুক্‌ তরঙ্গিত দুঃখসুখ থামিয়াছে বুকে। যত কিছু ভালোমন্দ যত কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব কিছু আর নাই। বলো শান্তি, বলো শান্তি, দেহসাথে সব ক্লান্তি হয়ে যাক ছাই। " ( রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জোড়াসাঁকো, ৫ বৈশাখ, ১৩০১ ) মানুষ যখন মারা যায়, তখন সংসারে একজন লোকের অনুপস্থিতি নিশ্চয়ই শুধুমাত্র শুন্যতারই সৃষ্টি করেনা, বরং পুরো সংসারে একটা শোকের ছায়া ফেলে দেয়।

মৃত্য এমন একটি অবধারিত সত্য যাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া কোন প্রাণীর পক্ষেই সম্ভব নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন: “প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। ” (সূরা আলে ইমরান: ১৮৫) মৃত্যু বরণের পর শুরু হবে আরেক জীবন। যে জীবনের কোন শেষ নেই। মানুষের জীবনে ইহকালে সব চেয়ে বড় সম্পদ হল তার সময় ।

ইমাম মুসলিম (রহঃ)-এর উস্তাদ রিবয়ী ইবনে হিরাশ (রহঃ) একদিন প্রতিজ্ঞা করে বললেন, “যতক্ষন পর্যন্ত আমি বেহেশতের সুসংবাদ পাব না, ততক্ষন পর্যন্ত হাসব না”। তারপর থেকে তিনি জীবনে কখনও হাসেন নি। যখন তিনি মৃত্যূবরণ করেন, মৃত্যূর পর হাসতে লাগলেন। উপস্থিত লোকজন তার হাসি দেখে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তাঁরা বলাবলি শুরু করলেন, জীবনে যিনি কখনও হাসেননি, মৃত্যূর পর তিনি হাসছেন! তার কারণ কি? তাঁরা রিবয়ী ইবনে হিরাশ (রহঃ)-এর স্ত্রীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন।

তার স্ত্রী বললেন, আমার স্বামী প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যতক্ষন পর্যন্ত তিনি বেহেশতের সুসংবাদ পাবেন না, ততক্ষন পর্যন্ত হাসবেন না। মৃত্যূর পর নিশ্চয়ই তিনি সেই সুসংবাদ পেয়েছেন। তাই আজ তার মুখে এ হাসি দেখা যাচ্ছে। তাই আসুন, আমরাও হযরত রিবয়ী ইবিনে হিরাশ (রহ-এর মতো মৃত্যূর পরে হাসার প্রস্তুতি গ্রহণ করি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.