আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন আব্দুল্লাহর ও একজন রিয়াজের গল্প-১

একটা গোপন কথা বলি আজ। সবাই আমাকে যতটা চুপচাপ আর বোকা মনে করে আমি আসলে ওমন না। কথা বলিনা, হয়ত সাহস পাইনা; কিন্তু কথা ঠিকই জানি। বলতে পারিনা তো কি, ভাবছি না বলা কথাগুলো লিখব এখন। এবার বুঝবে মজা।



আমি একজন আব্দুল্লাহ কে চিনি। খুব ভালো ছেলে। মেধাবী। তুখোড় মেধাবী। বুয়েট থেকে পাশ করেছে।

আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশি আর শিক্ষকদের চোখের মনি ছিল সে। ওর মতো ছেলেই হয় না। বুয়েটের শিক্ষকেরাই তাকে একটা বৃত্তি পাইয়ে দিয়েছে। বৃত্তি পেয়ে সে জার্মানীতে পড়াশোনা শেষ করেছে। শুনেছি জার্মান না যুক্তরাষ্ট্রের কোথায় যেনো বিরাট চাকরি করে।

তার শিক্ষকেরা, ছোটবেলার মফস্বলের শিক্ষকেরা তো বটেই বুয়েটের অনেক শিক্ষকের কাছে আব্দুল্লাহ একটা সোনার ছেলে। বিদেশে নাকি খুব সুনামের সঙ্গে চাকরি করছে। খুউব নামকরা তরুণ কম্পিউটার বিজ্ঞানী আব্দুল্লাহ। ওকে নিয়ে বাংলাদেশ গর্ব করতেই পারে। আরেকজন রিয়াজ।

পড়াশোনায় ফাঁকিবাজ। দুইবারে এসএসসি ফেল করে তৃতীয় বারে পাশ। এইচএসসি তে অবশ্য একবারেই পার পেয়েছে। কারন এখানে সে বেশ বুদ্ধি আর শ্রম খাটিয়েছে। পাশের থানার নতুন কলেজটা যেখানে গত বছর থেকে পরীক্ষার সিট পড়ে সেখানে ভর্তি হয়েছে সে।

তাও শেষ বেলায়, বাড়তি পয়সা দিয়ে। কলেজটার বেশ নামডাক। এইচএসসির সেন্টার পড়ার প্রথম বছরেই ৯৮% পাশ। কলেজের ক্লাশে কোন ছাত্রকে দেখা না গেলেও পাশ করেছে কয়েকশ। রিয়াজও বেশ ভালো ফল করে বাবা মাকে খুশি করতে চেয়েছিল।

ফল ভালোই হয়েছে। কিন্তু খুশি হয়নি বাবা-মা। সবাই নাকি বলে ‌'আপসার ছেলে নকল করে পাশ করেছে'। রিয়াজটাকে নিয়ে বড়ই বেকায়দায় তার বাবা-মা। চাকরি নাই।

ব্যবসার কথা বললে খালি আধুনিক ব্যবসার কথা বলে। ভাবে শাতখান। বাবার ঘরেই খাচ্চে দাচ্ছে। বকুনি দিলেও এটা নিয়ে বাবা-মার খুব যে আপত্তি ছিল তা না। বিপদ তো অন্যখানে।

আজকাল নাকি তিনি রাজনীতিও করছেন। ক্লাব ঘরে বাজে ছেলেদের সাথে আড্ডা। লোকজন রীতিমতো ভয় পায় রিয়াজকে। ইদানিং আরেক সমস্যা হয়েছে। পাশের স্কুলের মেয়েদের নাকি বড্ড জালায় রিয়াজ।

অভিভাবকদের বিচার শুনে রিয়াজের বাবার মাথা হেট হয়ে যায়। আফসোস হয়, পাশের বাড়ির আনোয়ার ভাইয়ের আব্দুল্লাহও রিয়াজের চেয়ে ৩ বছর ছোট মাত্র। মাঝে মাঝে শফিক সাহেবের মনে হয় এমন বখাটে ছেলের বাবা হওয়ার চেয়ে জীবনে বাবা ডাক শুনতে না পারলেও এমন কিছু আসতো যেতো না। তবে একটা ব্যাপার। যত কিছুই করুক রিয়াজ ছেলেটা বেশ দরদী।

মাঝে মধ্যে তার সেই রূপটা দেখা যায়। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.