বোকারা ভাবে তারা চালাক, চালাকরা ভাবে তারা চালাক। আসলে সবাই বোকা। বোকার রাজ্যে আমাদের বসবাস নিরপেক্ষতা! যার অর্থ আপনি কোন পক্ষেই নন। এও কি সম্ভব? সেই একযুগ আগেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ বলে এসেছেন, ”পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নিরপক্ষ নন। “ আপনার কি মনে হয়, আপনি নিরপেক্ষ? যদি মনে হয় আপনি নিশ্চিত যে আপনি নিরপেক্ষ, তবে এখনই ভাবতে শুরু করে দিন এই নিয়ে যে, আপনি পাগল না শিশু? নিরপেক্ষতা নিয়ে যুগে যুগে, দেশে দেশে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ঘটনা, আলোচনা, সমালোচনা হয়ে এসেছে।
যেমন এখন আলোচনা হয় এই নিয়ে যে, বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো কতটুকু নিরপেক্ষ অন্যান্য দেশ সমুহের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। এমনকি নিজ দেশের সরকার কততুকু নিরপেক্ষ থাকে নিজ দেশের আপামর জনসাধারণের ভাজ্ঞন্নয়নে। নিরপেক্ষতা আজ বৈশ্বিক আলোচনায়। নিরপেক্ষতার ধোঁয়া ঢুকে পড়েছে আমাদের ব্যাক্তি জীবনেও, আর তাইতো আমরা সর্বদা নিরপেক্ষ থাকাটাকে অতি গুরুত্ব দিয়ে দেখে থাকি। তো এই নিরপেক্ষতা কি খুব জরুরী? আসলে নিরপেক্ষ থাকা কি কখনো সম্ভব? আমরাতো সর্বদাই কোন না কোন পক্ষ নিয়েই বেঁচে থাকি।
সামাজিক জীবনে আমরা সর্বদা আমাদের নিজের পরিবারের পক্ষপাতিত্ব করে থাকি, যা করাটাই খুব স্বাভাবিক এবং জৈবিক নিয়মেই তা প্রয়োজন। ব্যাক্তি জীবনেও কি আমরা এর ব্যাতিক্রম? আমরা প্রতিটি মানুষ সবচাইতে বেশী ভালবাসি নিজেদের সত্ত্বাকে, আর তাইতো সবসময়ই আমরা নিজের পক্ষই অবলম্বন করে থাকি। বাবা-মা তার সন্তানকে এত ভালবাসে, কারন সন্তানের মাঝে তারা স্বীয় সত্ত্বাকে খুঁজে পায়। তাই আমরা কি পরিপূর্ণ নিরপেক্ষতা কখনো প্রদর্শন করতে পারি? মনে হয় না। কিন্তু তারপরও যুগে যুগে মানুষ নিরপেক্ষতা নিয়ে উচ্চস্বর হয়েছে।
কিন্তু কেন? কারন কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ না থাকলে সমাজ, সভ্যতা ও জীবন ধংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হত। অবশ্য এখনো কিছু কিছু ঘটনা মনে প্রশ্ন জাগায়, আমরা কি সমাজ, সভ্যতা ও জীবন ধংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে খুব দূরে আছি?
নিরপেক্ষ থাকা যে কত কঠিন, তা বোঝা যায়, নিরপেক্ষ বিচার ব্যাবস্থার প্রতীক হিসেবে কাল কাপড় দিয়ে চোখ বাঁধা দাঁড়িপাল্লা হাতে মূর্তিটি দেখলে। কালো কাপড়ে চোখ না বন্ধ করলে যে নিরপেক্ষ থাকা বড় কঠিন! তবে কেন এই কঠিনের পেছনে ছুটে চলা???
কেন এত কথা বলা? কারন আজ আমাদের নিরপেক্ষ থাকার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে। আমি একদিকে যেমন ঘৃণা করি সকল যুদ্ধাপরাধীদের, খুনিদের, মানবতার বিরুদ্ধচারীদের; তেমনি একজন মসুলিম হিসেবে ঘৃণা করি ইসলামকে হেয় করে বিষাদাগার ও নোংরা-অশ্লীল প্রচারণাকে। এই কাজ যেই করুক না কেন, তাদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা একান্ত দরকার।
কিন্তু কিছু প্রিয়জন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে এতটাই আপসহীন যে, ধর্ম তাদের কাছে গৌণ, আবার কেউ এতটা রক্ণশীল যে, তারা ধ্মীয় মূল্যবোধ দিয়ে সব বিচার করতে চায়। আমার মত সাধারণ মানুষের হয়েছে বিপদ। একদলের কাছে আমি রাজাকার; অন্য দলের কাছে ইসলাম বিরোধী। নিরপেক্ষ থাকার মূল্য কত চরম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।