রাজনীতি ও অর্থনীতি এই দুই সাপ পরস্পর পরস্পরকে লেজের দিক থেকে অনবরত খেয়ে যাচ্ছে
ট্রেনে করে ইউরোপ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা আমার মূলত সিনেমায়। দিলওয়ালা দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে ছবিতে শাহরুখ খান হাত বাড়িয়ে আছে আর ট্রেন ধরতে ছুটছে কাজল। লন্ডন থেকে শুরু হয়ে জুরিখে যেতে যেতে প্রেম। এরচেয়েও বেশি লোভনীয় ছিল জুলি ডিপলি ও ইথান হকের বিফোর সানরাইজ। দুজনের ট্রেনে পরিচয়, তারপর ভিয়েনা এক রাতের জন্য নেমে যাওয়া এবং রাত কাটানো।
ছবি হিসেবে অসাধারণ।
আমি জেনেভা থেকে উঠলাম এরকম এক ট্রেনে। ছাড়লো সময় মতোই, ঠিক সাতটা ১৭তে। যাবো প্যারিস। ট্রেনে উঠার ঠিক আগে মোবাইলে ২০ ফ্রাঁ দিয়ে রিচার্জ করেছি।
ট্রেনে উঠেই ভাবলাম ফেসবুকে একটা স্টাটাস দিয়ে দেই। মোবাইল দিয়ে ঢুকলাম নেটে, স্ট্যাটাস দিতে সবমিলিয়ে সময় লেগেছে ৪ থেকে ৫ মিনিট। নেট থেকেই বের হতেই দেখি এসএমএস। আমাকে জানালো আমার ক্রেডিট আছে মাত্র ২ ফ্রাঁ। সুইজারল্যান্ডের সিম, ফ্রান্সে ঢুকেছি বলে এতো টাকা কাটবে? (ফেসবুকরে মাইনাস)।
তাও যদি ট্রেনে লোভনীয় কিছু ঘটতো। আমার পাশে আমার দেশের সাংবাদিক দিলাল। ঐপাশের সিটে সুন্দরী এক মেয়ে, উঠেই মুখের উপর কোনো এক ভাষার একটা বউ সেই যে মুখের উপর রাখলো, বই নামলো সেই প্যারিসে যেয়ে। দ্রুত গতির ট্রেন, চার ঘন্টা কেটে গেল দ্রুতগতিতে, কোনো ঘটনা ছাড়াই।
প্যারিসে টুরিস্ট চেনা খুব সহজ।
হাতে থাকবে হয় ক্যামেরা, না হয় মেট্রোর ম্যাপ। এখানে ফরাসী ছাড়া আর কোনো ভাষা চলে না বলে ম্যাপ দেখে দেখে পথ চলা ছাড়া উপায় নেই। আর যে কোনো জায়গায় দেখা যাবেই যে একদল কেবল ছবি তুলছে। আমার হাতে ম্যাপ ছিল না, প্যারিস ঘুরে দেখানোর জন্য একজন সঙ্গী ছিল। তবে খাটি টুরিস্টের মতো ক্যামেরা অবশ্যই ছিল।
আমার বড় ধরণের বৃষ্টি প্রেম আছে। কিন্তু এই বৃষ্টি যে কী পরিমান বিরক্তিকর হতে পারে তা ইউরোপে না গেলে বোঝা যাবে না। কখন নামবে আর কখন নামবে না বোঝা মুশকিল। ফলে বাধ্য হয়ে ১০ ইউরো দিয়ে একটা ছাতা কিনতে হলো। ছাতার গায়ে বড় করে লেখা প্যারিস আর ছোট করে লেখা মেড ইন চায়না।
একটু জোরে বাতাস আসলেই উল্টে যায়।
প্যারিস দেখতে হলে অনেক সময় নিয়ে এখানে থাকতে হয়। সেই সাধ্য আমার নাই। তাই টুরিস্টরা সাধারণত যে জায়গায় যায় সেসব জায়গায়ই গিয়েছি আমি। তীব্র শীত অবশ্য একটা বড় সমস্যা।
সারা শরীর যতো পারো ঢাকতে হয়। তীব্র শীত আর বৃষ্টি। কোনাটাতেই আমরা অভ্যস্ত না। সবচেয়ে বড় সমস্যা চোখের। প্যারিস সুন্দরীদের কত না গল্প শুনেছি।
কিন্তু মন-প্রাণ ভরে সুন্দরীদের সুন্দর কিছু দেখা গেল না। দেখবো কেমনে সবই তো ঢাকা। সবাইরই কপাল কুচকানো। কোনো রকম বাসার ফিরতে পারলেই যেন শান্তি। প্যারিসের সবাই অপো করে গরমের জন্য।
সেই সময়ের প্যারিসের মতো সুন্দর আর আকর্ষনীয় নাকি কখনোই হয় না।
এবার প্যারিস যেয়ে ফিরে আসার পর আমার প্রথম সিদ্ধান্ত হলো ইউরোপে কখনো শীতের সময় যেতে হয় না।
স্যাক্ররে ক্রু। মূলত একটি চার্চ। তবে এতো সুন্দর এর পুরো জায়গাটা যে, টুরিস্টরা এখানে যাবেই।
স্যাক্ররে ক্রু
স্যাক্ররে ক্রুর খোলা চত্বরে তিনি গান গাইছিলেন জন লেননের ইমাজিন। অসাধারণ। অর্থ আয়ের এটাও একটা পথ
এভাবেও আয় করা যায়। মূর্তীর মতো এই মানষটি দেখে অনেকেই তার সামনে রাখা পাত্রে পয়সা দিচ্ছিল। আমিও দিলাম।
উপর থেকে তোলা প্যারিস
প্যারিস গেট
প্যারিস গেট
প্যারিসের রিকসা, টুরিস্টদের জন্য
আইফেল টাওয়ার যাওয়ার পথে রাস্তার দেওয়াল চিত্র
আইফলে টাওয়ার। একটু হেলান দিয়া দাঁড়াইছিলাম, তাই বাঁকা লাগতাছে মনেহয়।
লা ডে ফ্রঁসে, নতুন প্যারিস। মাত্র একটি জায়গায় এরকম আধুনিক বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। প্যারিস বলতে চায় চাইলে তারাও এরকম ভবন বানিয়ে শহর ভরে ফেলতে পারে, কিন্তু করবে না।
বিখ্যাত অপেরা হাউজ
প্যারিস আই। বিশ্বের সব শহরেই একটা থাকে
মুলান রুজ। বিখ্যাত নাইট ক্লাব ও রেস্তোরা। টিকেটের দাম দেখলাম ১৮০ ইউরো। এর পাশেই প্যারিসের বিখ্যাত রেড লাইট এরিয়া।
অনেককেই দেথলাম রাস্তা পার হচ্ছেন না, দূর থেকে কেবল ছবি তুলছে। আমিও তাই করলাম।
প্যারিসেও মিছিল। বৈধ অভিবাসনের দাবী
ভার্সাই রাজার প্রাসাদ। ফরাসী বিপ্লবের সময় এখান থেকেই ধরে নেওয়া হয়েছিল রাজা-রানীকে
প্রাসাদের সামনের বাগান
বাগান
বাগানে স্থাপিত মূর্তী
বাগানের সব গাছ এভাবে কাটা।
অতিরিক্ত গুছানো একটা বাগান। বুঝা যায় লক্ষ্য টুরিস্টরা
দূর থেকে তোলা বাগানের একাংশ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।