পঙ্খিরাজে চাদেঁর দেশে
মুহাররাম শব্দটি আরবী যার অর্থ পবিত্র, সম্মানিত। প্রাচীন কাল থেকে মুহাররাম মাস পবিত্র হিসাবে গন্য। দুনিয়া সৃষ্টি থেকে সত্য মিথ্যার দ্বন্ধ চলছে। কাবিল নিজের ভাই হাবিল কে হত্যার মধ্যদিয়ে সত্য মিথ্যর প্রকাশ্য দ্বন্ধ পরিলক্ষিত হয়। কারবালার ময়দানে নবী শ্রেষ্ট মুহাম্মদ (সা.) দেৌহিত্র হাসান (রা.)এজিদ কতৃর্ক শাহাদত বরন করেন।
তার পরিবারের সবাই শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন। হাদীসে রাসুল(সা.) বলেন, হাসন ও হোসাইন জান্নাতী যুবকদের সরদার। তথাপী তিনি বাতিলে কাছে মাথা নত করেননি। ঈমানের অগ্নি পরীক্ষায় তিনি প্রভূর দরবারে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দেন। আমাদের সামনে এমন অগ্নী পরীক্ষার দিন এসেছে।
সেই সত্য মিথ্যার দ্বন্ধ এখনো আছে। ইসলামের পক্ষে যারা কথা বলবেন তাদের বিরুদ্ধে তাগুতী শক্তি প্রবল প্রতিরোধ করবে। ঐতাগুতি শ্রেনী আমাদের মাথায় আসন পেতে আছে। তাদের সংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের সংখ্যা হাতেগুনা।
বাতিল কে সংখ্যা দিয়ে বিচার না করে ঈমানের পরিচয় দিতে হবে! জীবন যদি দিতে হয় তবু বাতিলের সাথে আপোস করা চলবেনা। হেসে হেসে দেব খুন, উদিবে রাঙ্গা অরুন। ইসলাম জিন্দা হোতা হে তো হর কারবালাকা বাদ।
আশুরার দিনে অনেক ঘটনার অবতারণা হয়েছে। ফলে মাসটি স্মরণীয় হয়ে আছে।
এদিনেই প্রথম মানব আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)কে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাকে এদিনেই বেহেশতে স্থান দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে হযরত আদম (আঃ)কে আশুরার দিনেই দুনিয়াতে পাঠিয়ে আল্লাহ তাকে প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা এভাবে তুলে ধরেছেন, ‘‘ আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেন, আমি পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বললো, আপনি কী এমন জাতি সৃষ্টি করবেন যারা পৃথিবীতে দ্বন্ধ ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা প্রতিনিয়ত আপনার গুণকীর্তন করছি এবং আপনার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি যা জানি, তোমরা তা জান না।
হযরত নুহ(আ.) এর মহা প্লাবন হয় এ দিন। হযরত ইব্রাহীম (আ) জন্ম এ দিনে,এবং ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার পান এ দিনে এবং আল্লাহ ফেরাআউন কে এ দিনে পানিতে নীল নদে ডুবিয়ে মারেন। হযরত ইউনুছ (আ.) মাছে পেট থেকে মুক্তি দেন এ দিনে । হযরত আইয়ূব (আ.) কে রোগ মুক্তি দেন এ দিনে। হযরত ঈসা(আ.) জন্ম ও তাঁকে সশরীরে আসমানে উঠানো হয় এ দিনে।
হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া শয়তানের প্ররোচনায় আল্লাহর হুকুম ভঙ্গ করে ফেলেন। ফলে তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে খুলে গেল। প্রতিপালক আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষের নিকট যেতে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। তখন তারা উভয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। আল্লাহ বললেন তোমরা নেমে যাও, তোমরা একে অপরের শত্রু।
তোমাদের জন্য পৃথিবীতে বাসস্থান আছে এবং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত জীবন যাপন করো। এ ঘটনার দিনই ছিল আশুরার দিন। ইবলিস এখনো মানুষের শত্রু, সে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে থাকে। ইবলিসের প্রেতাত্মা ছড়িয়ে আছে তাগুতের রক্তে মাংশে,তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আশূরার প্রকৃত ঘটনা মুসলমানদেরকে শক্তিশালী করবে, তাদের বিশ্বাসকে আরো বাড়িয়ে দিবে আর আল্লাহকে অবিশ্বাসকারীরা নিদর্শন থেকে শিক্ষা নিবে।
তবে আশুরাকে কারবালার ঘটনা দিয়ে যেভাবে শোক পালন করা হয় আর কিছু গোষ্ঠী যেভাবে মাতম করে যা সুস্পষ্ট বিদআত। রাসূল (সা.)তাঁর সাহাবীরা এভাবে আশুরা পালন করেন নি। আর যে কোন শোক তিনদিনের বেশী পালনের অনুমতি ইসলামী শরীয়া দেয় নি। অর্থাৎ যেদিন মারা যাবে সেদিন থেকে নিয়ে তিনদিন শোক পালন করা কিন্তু এই তিনদিনের মধ্যেও শোকে মাতম করে জামা-কাপড় ছিড়ে ফেলা, রক্ত বের করা ইসলাম শিক্ষা দেয় নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।