আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাতিয়া আয়তনে ফেনীর সমান নিরাপত্তায় ১২০ পুলিশ



চরাঞ্চল, নদী আর সমতল মিলিয়ে বিশাল আয়তনের এক উপজেলা হাতিয়া। নতুন জেগে ওঠা চর ছাড়াই হাতিয়ার আয়তন ফেনী জেলার সমান। ফলে প্রশাসনিক অসামর্থ্যের কারণেই এ দ্বীপের অনেক সম্ভাবনা সুপ্তই থেকে যাচ্ছে। আর আইন-শৃঙ্খলা তো থাকছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মাত্র ১২০ পুলিশ আর ২০ আনসার নিয়োজিত আছেন এ দ্বীপের নিরাপত্তায়।

পাঁচ লাখ জনসংখ্যার এ দ্বীপটিকে স্থানীয়রা তিনটি উপজেলায় রূপান্তরের দাবি জানিয়ে আসছেন বরাবরই। কিন্তু সে দাবি এখনও দাবি হিসেবেই রয়েছে। জানা যায়, নোয়াখালী জেলার দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৭০ কিলোমিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৩০ কিলোমিটার। এই ২১০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাইরেও দক্ষিণে জেগে উঠেছে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। কিন্তু নতুন চরাঞ্চল বাদেই হাতিয়ার যে আয়তন ও জনসংখ্যা, তা একটি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

হাতিয়ার উত্তরে বিরাট অঞ্চল বিচ্ছিন্ন রয়েছে, যা আছে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। আর দক্ষিণে রয়েছে বনাঞ্চলসহ ঘনবসতিপূর্ণ কৃষি সম্ভাবনাময় এলাকা। মূলত প্রশাসনিক তদারকির সুযোগ না থাকায় এ উপজেলার অর্ধেক জমিই এখনও অনাবাদি। এ দ্বীপে রয়েছে পশু ও মত্স্য খামার গড়ে ওঠার বিপুল সম্ভাবনা। কিন্তু নিরাপত্তা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে যুবকরা এতে আগ্রহী হচ্ছে না।

উপজেলা কেন্দ্রে এসে স্বাস্থ্য সেবা নেয়ার সুযোগ নেই দূরের মানুষের। ফলে স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকাংশে প্রকৃতির ওপর নির্ভর করতে হয় দ্বীপের মানুষদের। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, একটি থানার জন্য নিয়োজিত পুলিশ দিয়ে বিশাল হাতিয়ার নিরাপত্তা দেয়া অত্যন্ত কঠিন। জানা যায়, ছুটি, ডাক-যোগাযোগ ও সেন্ট্রির কাজে নিয়োজিতদের বাদ দিলে বর্তমানে হাতিয়া থানায় সার্বক্ষণিক পাওয়া যায় ৫/৬ পুলিশ সদস্য। আর যে তিনটি বিট অফিস রয়েছে সেখানে স্বল্পসংখ্যক পুলিশ নিজেরাই থাকে নিরাপত্তাহীনতায়।

উপজেলা কৃষি ও মত্স্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিশাল অঞ্চল হওয়ায় নিজস্ব কার্যক্রমগুলো তদারকিতে হিমশিম খেতে হয়। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানালেন, দূর এলাকায় কোনো দুর্ঘটনার খবর পেলে অনেক সময় ওইদিন সে অঞ্চলে পৌঁছাও সম্ভব হয় না। দুর্গম এলাকায় চলাচলের যানবাহনও পর্যাপ্ত নয়। তিনি আয়তন হিসেবে হাতিয়াকে একাধিক উপজেলা করা যৌক্তিক বলে মনে করেন। এদিকে হাতিয়াকে তিনটি উপজেলা করার প্রস্তাব হাতিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের।

হাতিয়ার উত্তরাংশ নিয়ে চানন্দি উপজেলা এবং দক্ষিণে জাহাজমারা উপজেলা নামে নতুন দুটি উপজেলার প্রস্তাবের কথা জানান রাজনৈতিক নেতারা। উত্তরাংশের বয়ারচর, ক্যারিংচর, নলেরচর, মঙ্গোলিয়ারচর, চরবাশার, জাহাজিয়ারচর, ঠেঙ্গারচর ও চরইসলাম নিয়ে চানন্দি উপজেলা এবং দক্ষিণাংশের জাহাজমারা, নিঝুম দ্বীপ ও দমারচর নিয়ে জাহাজমারা উপজেলার প্রস্তাব রয়েছে। এ বিষয়ে হাতিয়া আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ একরাম উদ্দিন আমার দেশকে বলেন, বঙ্গোপসাগর চর হিসেবে যে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিচ্ছে তার মূল ভূখণ্ড হচ্ছে হাতিয়া। তাই বিরাট আয়তনের উপজেলা হাতিয়াকে যদি এখনই তিনটি উপজেলায় বিভক্ত করে প্রশাসনিক বিন্যাস করা না হয় তাহলে দক্ষিণের সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যাবে না। তবে হাতিয়াবাসীর এ প্রস্তাব সরকারি পর্যায়ে আমলে না নেয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আসলে এ অঞ্চলে যে আসেনি সে বুঝবে না হাতিয়ার বিশালতা।

তবে জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, নতুন উপজেলা করা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে হাতিয়ায় নতুন উপজেলার যৌক্তিকতা রয়েছে বলে তিনিও মনে করেন। Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.