১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যা ইতিহাসের একটি নৃশংসতম ঘটনা। এই হত্যাকান্ডের বিচার রুদ্ধ করার জন্য তৎকালীন জাতীয় সংসদ দায় মুক্তি আইন পাশ করেছিল। এই সংসদে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব ছিল ৯০ শতাংশের বেশি এবং এই হত্যাযজ্ঞের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন তাদের সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগেরই নেতা, মুক্তিযোদ্ধা। শেখ মুজিব হত্যার পর যিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি হচ্ছেন খন্দকার মোশতাক আহমদ শেখ মুজিবের সহকর্মী, মন্ত্রিসভার সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নেতা এবং আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের অন্যতম। তার রক্তের দাগ শুকানোর আগেই যারা মোশতাক সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেবার জন্য বঙ্গভবনে হাজির হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ উল্লা,
পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবু সাঈদ চৌধুরী,
পরিকল্পনা মন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলী,
এলজিআরডি মন্ত্রী বাবু ফনীভূষণ মজুমদার,
পূর্ত ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী, সোহরাব হোসেন,
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী জনাব আবদুল মান্নান,
আইন ও বিচার মন্ত্রী বাবু মনোরঞ্জন ধর,
কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী আবদুল মুমিন,
বন্দর ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান,
অর্থমন্ত্রী আজিজুর রহমান মল্লিক এবং
শিক্ষামন্ত্রী ড. মোজাফফর আহমদ।
এই মন্ত্রিসভার ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে ছিলেন
দেওয়ান ফরিদগাজী,
মোমেন উদ্দিন আহমদ,
অধ্যাপক নূরুল ইসলাম চৌধুরী,
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন,
তাহেরুদ্দীন ঠাকুর,
মোসলেম উদ্দিন খান,
নূরুল ইসলাম মঞ্জুর,
কেএম ওবায়দুল রহমান,
ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল,
রিয়াজ উদ্দিন আহমদ এবং
সৈয়দ আলতাফ হোসেন প্রমুখ।
এই মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজকের সংস্থাপন বিষয়ক উপদেষ্টা ও তৎকালীন কেবিনেট সচিব জনাব এইচ টি ইমাম। মন্ত্রীদের মধ্যে হাতে গোনা তিন চার জন ছাড়া বাকী সকলেই বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর আওয়ামী লীগে ফেরত গিয়েছিলেন। যারা মারা গেছেন আওয়ামী লীগার হিসেবে মরেছেন এবং যারা জীবিত আছেন অদ্যাবধি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবেই বহাল তবিয়তে আছেন। একইভাবে খন্দকার মোশতাক ক্ষমতা গ্রহণের পর পর তৎকালীন তিন বাহিনী প্রধান, বিশেষ করে আর্মী চীফ জেনারেল শফিউল্লাহ এয়ারফোর্স চীফ এয়ার মার্শাল একে খন্দকার এবং নেভী চীফ এমএইচ খান বেতার ও টেলিভিশন কেন্দ্রে গিয়ে নতুন সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন।
জেনারেল শফিউল্লাহ মুজিব হত্যা উত্তর সরকারসমূহের সুবিধাভোগী হিসেবে বিদেশী মিশনসমূহে কাজ করেছেন এবং রাষ্ট্রদূত/ হাই কমিশনার হিসেবে সংশ্লিষ্ট সরকারের পক্ষে বিশ্ব জনমত আদায়সহ সরকারি নীতি বাস্তবায়নে সাহায্য করেছেন এবং সুবিধাও ভোগ করেছেন। একইভাবে একে খন্দকার ও এরশাদ সরকারের মন্ত্রিত্ব করেছেন এবং বর্তমানে উভয়েই আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা হিসেবে কাজ করছেন। জনাব খন্দকার এখন মহাজোট সরকারের মন্ত্রী হিসেবেও কাজ করছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।