কালো রঙের এই টেবিলটাতে এক ফোঁটা রক্ত চুঁইয়ে পড়লো আঙুল থেকে। সেই রক্তের ফোঁটাতে নিজের প্রতিবিম্ব দেখবার নিস্ফল চেষ্টা করে গেলাম।
রক্তের ফোঁটাতে কেন পাইনি নিজেকে দেখতে?
সাদা রঙের রুমাল দিয়ে মুছে দিলাম লাল রঙের সেই ফোঁটাটাকে। সাথে সাথে রক্তজবা হয়ে গেল রুমালটা। মনে পড়ে সেই স্কুলে ল্যাবরেটরির পাশে জবাফুলের বাগান ছিলো, ফুলের পরাগায়ন আর কি কি যেন পরীক্ষা করার জন্যে।
এই মুহূর্তে সৃষ্টি হয়ে যাওয়া সেই রক্তজবাটি দিয়ে কিসের পরীক্ষা করবো?
রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে যেতে যেতে বাসা খুঁজে বেড়াচ্ছি। নতুন দেশ, নতুন পরিবেশ, নতুন ভাষা। কিন্তু মনের ভাষাটা যে কোনভাবেই বদলে যায়নি। সাইনবোর্ড দেখতে দেখতে এগুতে থাকি। জীবনের পথেও যদি এরকম করে সাইনবোর্ড থাকতো, দেখতে দেখতে এগুনো যেত।
পথ হারানোর কোন পথই থাকতোনা।
ঘড়ির ডিজিটগুলো এক, দুই করে পাল্টে যেতে থাকে। পাশে পড়ে থাকা ডাইরির পাতা উল্টে দেখি আজ আর কোন কাজ আছে কীনা। বাসের টাইমটেবল দেখে নিই। নইলে যে এই কাঠখোট্টা দেশে বোকার মত দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আধঘন্টা কিংবা কখনো ঘন্টাও।
খিদে পেয়েছে খুব। রান্না করবার সময়টা নেই এখন। জানি, তুমি শুনলে খুব কান্না করবে। তোমার চেহারাটা ভেসে উঠতেই ইরানি দোকানে চলে গেলাম আর একটা ডোনার চালান করে দিলাম পেটের ভেতর নাচতে থাকা ছুঁচোগুলোর কাছে। খা তোরা, চিবিয়ে খা! তবুও আর জ্বালাতনটা করিসনা।
বাসের সহযাত্রী উৎকট এক সুগন্ধি মেখে বসে আছে পাশে। অসহ্য। আজকাল কি সবকিছুই অসহ্য লাগছে নাকি?
সব ঐ রক্তজবাটার দোষ!
তারপরও রক্তজবাটা বন্ধু হয়েই থাক।
উৎসর্গ: বন্ধু নির্ঝর!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।