আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শূন্য বাদশার সিলেট ভ্রমন!



ধনী বলে ধন দাও। ভিখারী বলে আরো ভিক্ষা দাও। চারদিকে শুধূ দাও আর দাও। দাও নিয়ে টেনশনে কম বেশী অসুস্থ সবাই। বাদশা তাই সকল দাও ছেড়ে বেড়িয়ে পড়ল শুন্য হাতে।

শুন্য হাতের বাদশা স্বদেশ ভ্রমনে বের হয়। যাবে সিলেট। ঢাকা সায়দাবাদের বাস স্ট্যান্ডে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোন বাসই তাকে নিতে চায় না। সবাই বেশী ভাড়া চায়।

ও রুমমেট থেকে ধার করেছে ২০০ টাকা। রিক্সায় সায়দাবাদে এসেই ১৫ টাকা ভাড়া দিল। রইল ১৮৫ টাকা। রাতের খাবারটা রুমমেটদের দেয়া ভোজ গ্রহন করে। ১৫০ টাকায় একটি বিলাস বহুল গাড়ীতে সিলেট আসে সে।

এই জন্য গাড়ীর হেলপারের কাছে তাকে বলতে হয়েছে তার কাছে টাকা নাই। তার সত্য কথা সত্য বলে মেনে নিয়েছে তারা। গাড়ী থেকে নামা মাত্রই। সিলেটের তীব্র শীতের চাবুক তার আস্তিত্ব ঘিরে দড়ল। গাড়ীতে পরিচয় হয় দুই যুবকের সাথে বাদশার।

তারা তাকে একটি কলা খেতে অনুরোধ করে। জার্নিতে কলা খায় না বাদশা। কলা খেলে তার বমি হওয়ার ভয় থাকে। তারপরও সে খেল। ওদের চাপে।

ইদানিং। তার খুব ভয় হয়.....। কেন যে বেশী ক্ষুধা লাগে। ওজন ৬০ এর কাছকাছি। তারপর চলে আজাইরা প্যাঁচাল।

গাড়ী থেকে নেমে ঢাবির দুই ছাত্রকে সাথে নিয়ে তিনজনে চলে আসে শাহজালালের মাজারে। পথে ওরা বলে ..... উড ইউ নেভার মাইন্ড। আই আস্ক ইউ হেয়ার গেট প্রস্টিটিউট। বাদশা বলে, এই বিষয়ে আমার আগ্রহ নাই। তবে এইখানে (বন্দর বাজারে) খোজ নিতে পারেন।

আপনার যোগাযোগ আছে। না, আগেই বললাম আগ্রহ নেই। বাদশার ঝাজালো উওর। ওদের উৎসাহে বাটা পড়ল। রিক্সা ভাড়া ৩০ টাকা।

বাদশা ভাবে ওরা যদি ভাড়া দেয় তাহলে এই যাত্রা পার হওয়া যাবে। লজ্জাবশত বাদশা বলে আমি ভাড়ার কিছু শেয়ার করি। ওরা বলল হ্যাঁ দিন। বাদশা ১০ দিল। বাকীটা তারা দিল।

ওদেরকে হোটেল সম্পর্কে তথ্য দিয়ে বাদশা চলে আসে। আম্বরখানা। আম্বর খানা থেকে ফোরস্টকে বিশ্ববিদ্যালয় গেইটে আসে ১০ টাকায়। হলে উঠে বাদশা তার দেশী সোহেলের রুমে যায়। কম্পিউটার ওপেন করে।

ও কাজ করে। তারপর কেন্টিনে বড় ভাই বাদশাকে নাস্তা করায় সোহেল। বাদশাও ডিম মামলেট বাদ দিয়ে শুধু সবজি দিয়ে পরাটা খায়। একশ টাকার নোট ভেঙ্গে বাদশার বিল দেয় সোহেল। বাদশা মনে মনে খুশী হয়।

ভাবে, সোহেলকে সে যখন পারে হেলপ করবে। গেইটে এসে বাদশা তার বন্ধুর দোকানে বাকীতে প্রিন্ট,ফটোকপি ও স্পাইরাল করায়। বিল হয় ৮৬ টাকা। দুপুরে ভাগিনার টংয়ে চা খায়। আজ বাদশার পরীক্ষা।

এই পরীক্ষা শেষ হলে বাদশার আর একটা পরীক্ষা পড়বে। তখন তাকে আসতে হবে। এই এলাকাটা বাদশার খুব পরিচিত। বাদশা নিজেকে নিজে ধন্যবাদ দেয় এই ভেবে যে। তার সাহস আছে ।

সে বিনা টাকায় সিলেট ভ্রমনে বেড়িয়েছে। দুপুরে চা আর আলুর চপ খায় বাদশা। ক্লাসেও ওকে সিঙ্গারা ও ভেজিটেবল রোল খেতে দেয়। এভাবেই চলছে বাদশার ভ্রমন। এই ভ্রমন আবার ঢাকায় গিয়ে শেষ হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।