আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

***সীতাকুন্ড জাহাজ ভাঙ্গা ইয়ার্ড, সম্রাজ্যবাদীদের শোষণ ক্ষেত্র***

"সকল বস্তু তার বিপরীত বস্তুর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠে"
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের জাহাজ ভাঙ্গার শিল্প এখন মৃত্যু কুপে পরিণত হয়েছে। একটু এদিক-সেদিক হলে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটে সেখানের শ্রমিকদের। গত এক সপ্তাহে শিপ ইয়ার্ডে দুর্ঘটনায় দশ শ্রমিক নিহত হয়েছে। দিন দিন জাহাজ ভাঙ্গার শ্রমিকের নিহতের তালিকা দীর্ঘ হলেও শ্রমিকদের অভিযোগ তাদের জীবন রক্ষা করার কোন উদ্যেগ নেই মালিক পক্ষের। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত এক যুগে শিপ ইয়ার্ডের বিভিন্ন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৩শ' শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ।

অর্থাৎ প্রতি বছর মারা যাচ্ছে ১০৯ জন শ্রমিক। এসময় আহত হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার শ্রমিক। অর্থাৎ প্রতি বছর আহতের সংখ্যা প্রায় ৩শ' জন। আহতদের বেশি ভাগ পঙ্গুসহ অচল হয়ে পড়েছে। মালিক পক্ষের অবহেলা এবং শ্রমিকদের অসতর্কতার কারণে অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

মূলত ট্যাংক ও গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, আগুনে পুড়ে, লোহা ও প্লেটের আঘাতে, গ্যাস বিষক্রিয়া, উপর থেকে নিচে পড়ে গিয়ে, যন্ত্রপাতি এবং লোহার পাত উঠা নামানোর সময় দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহের কথা থাকলেও কোন মালিক পক্ষ তাদের এ সরঞ্জাম দেয় না। এছাড়া শ্রমিকদের কোন প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা মূলক কোন প্রোগ্রামের আয়োজন করাও হয় না। সীতাকুন্ডে ৫৫ টির মত জাহাজ ভাঙ্গার ইয়ার্ড রয়েছে। ওই সব ইয়ার্ডে কাজ করছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার শ্রমিক।

তাদের বেশিভাগ শ্রমিক অদক্ষ এবং এ কাজ সম্পর্কে তেমন কিছু জানেনা। তার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ইপসার দেয়া পরিসংখ্যান মতে, গত এক যুগে সীতাকুন্ড শিপ ইয়ার্ডে কমপক্ষে ১৩শ' শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার শ্রমিক। এ ছাড়া কোন দুর্ঘটনা ঘটার পর মালিক পক্ষ তা আড়াল করতে নানান ধরনের চক্রান্ত চালায়।

কোন কোন ক্ষেত্রে লাশ গুম করার ঘটনাও ঘটে থাকে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা সরঞ্জামের এবং প্রশিক্ষণের বিষয়ে প্রত্যেক শিপ ইয়ার্ড মালিককে শ্রমিকদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম দেয়া ব্যাপারে অনেক আগে শিপ ইয়ার্ড মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন নেই। এই ইয়ার্ডগুলো যে শুধু মানুষ মারছে তাই নয়, পরিবেশের ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তথা রাসায়নিক পদার্থের কোন সুষ্ঠ ব্যবস্থা না থাকায় তা সাগরে তথা আশেপাশের খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়।

দূর্বলের উপর সবলের অত্যাচার করে অর্থ অর্জন নতুন কোন ঘটনা নয়, পূর্বেও সম্রাজ্যবাদীরা আমাদের উপর শোষণ করে অর্থ কামিয়েছে বিনিময়ে কতগুলো মানুষ অর্থের উপর ঘুমিয়েছে। বর্তমানেও তাই হচ্ছে। ক্ষুধার তাড়নায় আক্রান্ত মানুষগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে যন্ত্র হিসেবে, তারা মরল কি বাঁচল তা সম্রাজ্যবাদীদের চিন্তার বিষয় নয়। অর্থলোভী, সুদখোর, অত্যাচারী কতিপয় মানুষের টাকার স্তুপ জমানো অভিলাষ আর দেশের সকল মানুষ এতেই উন্নত হবে তা অলিক স্বপ্ন মাত্র। তথ্যসূত্র: পত্রিকা।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.