চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা উপকূলীয় এলাকায় গতকাল বুধবার সকালে অন্তত চারটি জাহাজ ভাঙার মাঠ (শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড) দখল করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ এ বি এম আবুল কাশেম মাস্টারের দুই ছেলে এস এম আল মামুন, এস এম আল নোমান। দখল করা প্রায় আট একর জমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলেছে তাঁদের লোকজন।
অভিযোগ উঠেছে, সীতাকুণ্ড থানার পুলিশের সহায়তায় সাংসদপুত্রের দুই শতাধিক সহযোগী গতকাল বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এই দখল কার্যক্রম চালায়। এ সময় কিছু অস্ত্রধারীকেও সেখানে দেখা যায়। দখল শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে তারা মামুন নোমানের মালিকানাধীন ইউনিক ট্রেডার্সের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খুঁটি পোঁতার সময় স্থানীয় থানার পুলিশ গতকাল সকাল ও সন্ধ্যায় দুই দফায় সেখানে টহল দিয়ে যায়। সকালের টহলে থানার এসআই বায়েস আলম এবং সন্ধ্যার টহলে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) রুহুল আমিন সিদ্দিকী নেতৃত্ব দেন। দখল চলাকালে সাংসদের ছেলে নোমান ঘটনাস্থলে গেলেও তাঁর ভাই মামুন চট্টগ্রাম নগরে অবস্থান করে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন বলে জানা যায়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, এই দখলের জন্য প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নগর ও এর আশপাশের এলাকা থেকে শতাধিক লোককে ভাড়া করে সেখানে আনা হয়। স্থানীয় পর্যায়ে ভাড়া করা হয় আরও প্রায় ১০০ লোক।
দখলকারীদের সেখানে বিশাল হাঁড়িতে দুপুরে রান্নাবান্না করে খেতে দেখা গেছে। বিকেলের দিকে র্যাব ও পুলিশের আনাগোনা বাড়লে দিনমজুর ছাড়া বাকি দখলকারীরা গ্রামের দিকে গিয়ে আত্মগোপন করে।
এই দখলের খবর সংগ্রহ করতে গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিকেরা।
দখলের ব্যাপারে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় ঢাকায় অবস্থানরত সাংসদ আবুল কাশেম মাস্টারের সঙ্গে। মোবাইল ফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'আমার ছেলেরা দুটি ইয়ার্ডের জায়গা কিনেছে।
বড় একটি জাহাজ ভেড়ানোর জন্য ওই দুই ইয়ার্ডকে এক করা হচ্ছিল। ' ইয়ার্ডের জায়গাগুলো সদ্য কিনেছেন বলে দাবি করে সাংসদ বলেন, 'আমার ছেলেরা কারও জায়গা দখল করেনি। ' সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার ছেলেরা এটা করতে পারে না। বহিরাগতরা করেছে। এর পরও ঘটনার জন্য আমি দুঃখিত।
এ জন্য যা যা করতে হয় সবই আমি করব। '
ঘটনাস্থল ঘুরে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টা নাগাদ সাংসদপুত্র নোমানের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক গিয়ে কুমিরা ফেরিঘাটের অদূরে আলেকদিয়া এলাকায় সদ্য সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়া চারটি জাহাজ ভাঙার ইয়ার্ডের সীমানা উপড়াতে শুরু করে। এগুলো হলো পাকিজা এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম স্টিল, আসাদী স্টিল ও মুসলিমা শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজ। দখলকারীরা ওই সব ইয়ার্ডের লোকজনকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর তারা নিজেদের ট্রাকে (চট্টগ্রাম ম-৩৮১৫) করে আনা কাঁটাতার ও খুঁটি গেড়ে দখল শুরু করে।
এ সময় স্থানীয় লোকজনের বেশ কিছু জায়গাও দখলে নিয়ে এর চারপাশে খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়।
এই দখল সম্পর্কে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় সাংসদের ছেলে এস এম আল মামুনের সঙ্গে। তিনি এ ব্যাপারে বলেন, 'আমাদের কেনা জায়গা মেপে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এলাকার ব্রোকাররা সেখানে গেছে। সঙ্গে ওদের কিছু আত্মীয়স্বজনও সেখানে উপস্থিত ছিল। কোনো দখলকারী যায়নি।
' মামুন বলেন, 'পাশের পাকিজা এন্টারপ্রাইজের মালিকের সঙ্গে কিছু জায়গা নিয়ে ঝামেলা ছিল। সেটা মিটে গেছে। '
তবে পাকিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সিরাজুদ্দৌলা ঘটনাস্থলে প্রথম আলোকে বলেন, 'গায়ের জোর এবং প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে তারা আমার পাঁচ কানিসহ অন্যান্য ইয়ার্ডের প্রায় ২০ কানি জায়গা দখল করে নিয়েছে। তারা কোনো ধরনের সমঝোতা কিংবা আলাপ-আলোচনায় আসতে চায় না। '
অন্য তিনটি শিপ ইয়ার্ডের মালিকেরা নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।
এই মালিকেরা বলেছেন, সীতাকুণ্ডে ব্যবসা করতে এসে তাঁরা স্থানীয় সাংসদের ছেলেদের জুলুমের শিকার।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সাংসদ আবুল কাশেমের ছেলেরা এলাকায় জমিজমা কিনে একের পর এক শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গড়ে তোলার চষ্টো চালান। এ জন্য তাঁরা বন বিভাগের গাছও কেটে ফেলেন। এ নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত নয় মাসে তাঁরা কুমিরা ও পাক্কা মসজিদ এলাকায় তিনটি ইয়ার্ড তৈরির জন্য জমি কিনেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, সাংসদপুত্ররা সামান্য জমি কিনে প্রশাসনের সহায়তায় আশপাশের জমি জোর করে দখল করে নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে এস এম আল মামুন বলেন, 'আমরা বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট জায়গা কিনেছি এটা সত্য, তবে কারও জায়গা দখল করিনি। ' কিছু কিছু জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার জেড এ মোরশেদ বলেন, 'সীতাকুণ্ডে শিপ ইয়ার্ডের জায়গা দখল-বেদখল হয় শুনেছি, কিন্তু কেউ সুনির্দষ্টি অভিযোগ দিতে আসে না। এ সংক্রান্ত সব মামলা নেওয়ার জন্য আমি থানাকে নির্দেশ দিয়েছি।
'
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা উপকূলীয় এলাকায় গতকাল বুধবার সকালে অন্তত চারটি জাহাজ ভাঙার মাঠ (শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড) দখল করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ এ বি এম আবুল কাশেম মাস্টারের দুই ছেলে এস এম আল মামুন, এস এম আল নোমান। দখল করা প্রায় আট একর জমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলেছে তাঁদের লোকজন।
অভিযোগ উঠেছে, সীতাকুণ্ড থানার পুলিশের সহায়তায় সাংসদপুত্রের দুই শতাধিক সহযোগী গতকাল বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এই দখল কার্যক্রম চালায়। এ সময় কিছু অস্ত্রধারীকেও সেখানে দেখা যায়। দখল শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে তারা মামুন নোমানের মালিকানাধীন ইউনিক ট্রেডার্সের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খুঁটি পোঁতার সময় স্থানীয় থানার পুলিশ গতকাল সকাল ও সন্ধ্যায় দুই দফায় সেখানে টহল দিয়ে যায়। সকালের টহলে থানার এসআই বায়েস আলম এবং সন্ধ্যার টহলে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) রুহুল আমিন সিদ্দিকী নেতৃত্ব দেন। দখল চলাকালে সাংসদের ছেলে নোমান ঘটনাস্থলে গেলেও তাঁর ভাই মামুন চট্টগ্রাম নগরে অবস্থান করে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন বলে জানা যায়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, এই দখলের জন্য প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম নগর ও এর আশপাশের এলাকা থেকে শতাধিক লোককে ভাড়া করে সেখানে আনা হয়। স্থানীয় পর্যায়ে ভাড়া করা হয় আরও প্রায় ১০০ লোক।
দখলকারীদের সেখানে বিশাল হাঁড়িতে দুপুরে রান্নাবান্না করে খেতে দেখা গেছে। বিকেলের দিকে র্যাব ও পুলিশের আনাগোনা বাড়লে দিনমজুর ছাড়া বাকি দখলকারীরা গ্রামের দিকে গিয়ে আত্মগোপন করে।
এই দখলের খবর সংগ্রহ করতে গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিকেরা।
দখলের ব্যাপারে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় ঢাকায় অবস্থানরত সাংসদ আবুল কাশেম মাস্টারের সঙ্গে। মোবাইল ফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'আমার ছেলেরা দুটি ইয়ার্ডের জায়গা কিনেছে।
বড় একটি জাহাজ ভেড়ানোর জন্য ওই দুই ইয়ার্ডকে এক করা হচ্ছিল। ' ইয়ার্ডের জায়গাগুলো সদ্য কিনেছেন বলে দাবি করে সাংসদ বলেন, 'আমার ছেলেরা কারও জায়গা দখল করেনি। ' সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার ছেলেরা এটা করতে পারে না। বহিরাগতরা করেছে। এর পরও ঘটনার জন্য আমি দুঃখিত।
এ জন্য যা যা করতে হয় সবই আমি করব। '
ঘটনাস্থল ঘুরে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টা নাগাদ সাংসদপুত্র নোমানের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক গিয়ে কুমিরা ফেরিঘাটের অদূরে আলেকদিয়া এলাকায় সদ্য সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়া চারটি জাহাজ ভাঙার ইয়ার্ডের সীমানা উপড়াতে শুরু করে। এগুলো হলো পাকিজা এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম স্টিল, আসাদী স্টিল ও মুসলিমা শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজ। দখলকারীরা ওই সব ইয়ার্ডের লোকজনকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর তারা নিজেদের ট্রাকে (চট্টগ্রাম ম-৩৮১৫) করে আনা কাঁটাতার ও খুঁটি গেড়ে দখল শুরু করে।
এ সময় স্থানীয় লোকজনের বেশ কিছু জায়গাও দখলে নিয়ে এর চারপাশে খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়।
এই দখল সম্পর্কে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় সাংসদের ছেলে এস এম আল মামুনের সঙ্গে। তিনি এ ব্যাপারে বলেন, 'আমাদের কেনা জায়গা মেপে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এলাকার ব্রোকাররা সেখানে গেছে। সঙ্গে ওদের কিছু আত্মীয়স্বজনও সেখানে উপস্থিত ছিল। কোনো দখলকারী যায়নি।
' মামুন বলেন, 'পাশের পাকিজা এন্টারপ্রাইজের মালিকের সঙ্গে কিছু জায়গা নিয়ে ঝামেলা ছিল। সেটা মিটে গেছে। '
তবে পাকিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সিরাজুদ্দৌলা ঘটনাস্থলে প্রথম আলোকে বলেন, 'গায়ের জোর এবং প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে তারা আমার পাঁচ কানিসহ অন্যান্য ইয়ার্ডের প্রায় ২০ কানি জায়গা দখল করে নিয়েছে। তারা কোনো ধরনের সমঝোতা কিংবা আলাপ-আলোচনায় আসতে চায় না। '
অন্য তিনটি শিপ ইয়ার্ডের মালিকেরা নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।
এই মালিকেরা বলেছেন, সীতাকুণ্ডে ব্যবসা করতে এসে তাঁরা স্থানীয় সাংসদের ছেলেদের জুলুমের শিকার।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সাংসদ আবুল কাশেমের ছেলেরা এলাকায় জমিজমা কিনে একের পর এক শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গড়ে তোলার চষ্টো চালান। এ জন্য তাঁরা বন বিভাগের গাছও কেটে ফেলেন। এ নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত নয় মাসে তাঁরা কুমিরা ও পাক্কা মসজিদ এলাকায় তিনটি ইয়ার্ড তৈরির জন্য জমি কিনেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, সাংসদপুত্ররা সামান্য জমি কিনে প্রশাসনের সহায়তায় আশপাশের জমি জোর করে দখল করে নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে এস এম আল মামুন বলেন, 'আমরা বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট জায়গা কিনেছি এটা সত্য, তবে কারও জায়গা দখল করিনি। ' কিছু কিছু জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার জেড এ মোরশেদ বলেন, 'সীতাকুণ্ডে শিপ ইয়ার্ডের জায়গা দখল-বেদখল হয় শুনেছি, কিন্তু কেউ সুনির্দষ্টি অভিযোগ দিতে আসে না। এ সংক্রান্ত সব মামলা নেওয়ার জন্য আমি থানাকে নির্দেশ দিয়েছি।
প্রথম আলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।