কি আর বলব কিছু লিখলেই হয় ছাগু না য় ভাদা বইলা গালি খাইতে হইব......। তয় আমি যা সত্য তাই লেখুম কারন আমি ভাদা ও না ছাগু ও না, আমি বাংলাদেশী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রথম রায় যেদিন দেয়া হলো (মাওলানা আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের) সেদিন আমি ফেসবুকে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম যেটার সারমর্ম ছিলো---
"আওয়ামিলীগ খুব চতুরতার সাথে এমন একজনের রায় দিলো যে কোথায় আছে তা কেউ জানে না এবং রায় কার্যকর করার ঝামেলাও থাকলো না ! জনতাও খুশি থাকলো আবার সরকারের ও কোনো দায় থাকলো না । অথচ তাদের হাতে আরো ভয়ংকর কিছু যুদ্ধাপরাধী তখন বন্দী এবং তারা বেশ আগে থেকেই বন্দী। কিন্তু তাদের বিচার কার্য্য চলছে ধীর গতিতে ।
কারন তারা সবাই বিরোধী দলগুলোর বড় বড় নেতা এবং নির্বাচন পর্যন্ত যদি তাদের বিচার কাজ আটকে রাখা যায় তবে নির্বাচনে আবারো একটা মূলা জনগনের সামনে ঝুলানো যাবে ! যদি তারপরেও নির্বাচনে পরাজয় হ্য় তাহলে জানা কথা বি,এন,পি ও জামাত সরকার ক্ষমতায় এলে এই বিচার আর হবে না ! তাহলে পরের নির্বাচনে আবারো একটা মূলা জনগনের সামনে ঝুলানো যাবে !"
আমাকে তখন অনেকেই অনেক কথা শুনিয়েছিলো !
যাই হোক এরপর আমাকে ভূল প্রমান করলো সরকার ! জানতে পারলাম কাদের মোল্লার বিচারের রা্য় যে কোনোদিন ঘোষিত হবে। আমি খুশি হয়েছিলাম কিন্তু রায়ের ঠিক আগের দিন যখন সকাল-সন্ধ্যা জামাত-শিবিরের পিন্ডি চটকানো সরকার বিনা বাধায় মতিঝিলে তাদেরকে শো-ডাউন করতে দিলো এবং আমদের স্বরাষ্ট্র প্রতিমণ্ত্রী টুকু সাহেব যখন শিবিরের ছেলেরা কত ভালো তার গুনোগান গাইতে লাগলেন তখনই আলোচনা করেছিলাম আমার কয়েকজন সহকর্মীর সাথে যে ডালের মাঝে কালো কিছু আছে !
তখনও অনেক ভর্তসনা সইতে হয়েছিলো আমাকে!
যাই হোক তার পরদিন যখন রা্য় ঘোষনা হলো আমার সহকর্মি তো হতবাক এবং আমি লজ্জিতো হলাম ! এরপর সবার অবাক প্রতিক্রিয়া দেখতে থাকলাম এবং এরই মাঝে শাহাবাগের কথা একটু একটু করে কানে আসতে লাগলো !
প্রথমে পাত্তা দিলাম না ! পরের ঘটনা তো ইতিহাস ! যাইহোক আমি ঢাকার বাইরে থাকি তাই শাহাবাগে স্ব-শরীরে আসতেও পারছিলাম না । তবে খুব একসাইটেড হচ্ছিলাম কারন ৫২/৬৯/৭১/৯০ এর আন্দোলোন/গণজাগরন দেখিনি, দেখিনি বড় আন্দোলন । এর মাঝে ২/১ জন বলতে লাগলো এগুলো সব ইসলাম ধর্ম বিরোধী নাস্তিকরা করছে এবং দেখলাম আসিফ মহিউদ্দিন কে সামনের কাতারে দেখা যাচ্ছে কিন্তু সাথে তো সাদা দাড়ি/টুপি পড়া লোক ও আছে সন্দেহ দূর হলো ! আবার এর মাঝে ২/১ জন বলতে লাগলো এগুলো সব আও্য়ামিলীগের কাজ কিন্তু যখন দেখলাম সরকারের এমপি/মণ্ত্রী রা ওখানে পাত্তা পাচ্ছে না তখন ঐ সন্দেহটাও দূর হলো।
এরপর নিজে গেলাম একদিন, উদ্দেশ্য ছিলো ২/৩ ঘন্টা থাকা কাটিয়ে দিলাম সারা রাত! লাকির দৃঢ় কন্ঠের স্লোগানের সাথে গলা মিলিয়ে গগন বিদারী স্লোগান দিলাম ! শিহরীত হচ্ছিলাম এবং আরো শিউরে উঠছিলাম-
# যখন আমার কট্টর বি,এন,পি পন্থী বন্ধু জয় বাংলা বলে গলা ফাটাচ্ছিলো!
#যখন শুনলাম এক ভিক্ষুক তার সারদিনের ভিক্ষার টাকা আন্দোলনকারীদের খাবারের যোগান দিতে ডোনেট করেছে !
#যখন দেখলাম মাঝ রাতেও এক শিশু তার বাবার কাধে চেপে রাজাকারের ফাঁসি চাই বলে চেচাচ্ছিলো!
আরো কত কি...
প্রতিদিন মনের জোর একটু করে বারছিলো যে এবার কিছু একটা বিহিত হবেই।
আমার দেশটা এবার কলঙ্ক মুক্ত হবেই ।
কল্পনাতীত কিছু ঘটনা ঘটলো, ৩ মিনিটের নিরবতা আর মোমবাতি জ্বালিয়ে দেশের যে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঐ অল্প বয়সি মানুষ গুলোর সাথে একাত্বতা দেখালো তাতে মাঝে মাঝেই মনে হচ্ছিলো আমি কি সত্যি বাংলাদেশে আছি ?
দেশের জনগন যে ঘুমিয়ে পড়েনি, এখনো কিছু করার প্রত্যয় যে আমাদের আছে তা দেখে আশার পাহাড় জমলো বুকে ।
প্রতিটি টিভি চ্যানেলের প্রধান খবর একটাই "শাহাবাগ আন্দোলন"।
প্রতিটি পত্রিকার হেড লাইন একটাই "শাহাবাগ আন্দোলন"।
টক শো গুলোতে দেশের বাঘা বাঘা মানুষ গুলো মুখে ফেনা তুলে ফেলছে এই "শাহাবাগ আন্দোলন"।
সাধারন মানুষের মুখে মুখে আলোচনার একটাই বিষয় "শাহাবাগ আন্দোলন"।
তখন মনোবল আরো দৃঢ় হল কারন পরিষ্কার বুঝতে পারা যাচ্ছে যে আন্দোলন আসলে সবাইকে নাড়া দিয়েছে ব্যাপক ভাবে। কেউ সেটা স্বীকার করছে আর কেউ করছে হয়তো দলীয় কারনে!
যাই হোক আশার সীমানা যখন আকাশ ভেদ করে যাচ্ছিলো ঠিক তখন ই গতকাল (১৫/০২/২০১৩) মহাসমাবেশে এমন কিছু ঘটনা ঘটলো যে মানুষকে একটানে আকাশ থেকে মাটিতে ফেলে দিলো !
যে আন্দোলন সাধারন মানুষের ছিলো তাতে রাজনীতির কড়াল থাবা পড়লো! আর যে আন্দোলনের দাবী ছিলো একটাই ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না সেট হটাৎ-ই সময়ের গন্ডিতে আবদ্ধ করে দেয়া হলো!
আন্দোলন কি এ ভাবে ঘড়ি ধরে করা যায়
আর যারা সিদ্ধান্ত নিলো তারা কার সাথে কথা বলে করলো এই কাজ ? এই যে মানুষগুলো দিনের পর দিন রোদে পুড়ে, রাতের পর রাত কুয়াশায় ভিজে আন্দোলনে যুক্ত থাকলো, সংহতি জানালো এদের কি কেউ ডেকে এনেছিলো ?
তাহলে এরা কখন ঘরে ফিরবে তা মুষ্ঠিমেয় কিছু মানুষ আলোচনা ছাড়া কিভাবে ঠিক করে দেয় ?
তবে কি সরকারের বিরোধী দলের কথাই সত্য ছিলো ? যে এর সবই সরকারের সাজানো নাটক ? তারা পদ্মা সেতু আর তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীর ঘটনাগুলোর উপর পর্দা দিতেই এসব করলো ? নাকি নির্বাচনের আগে বি,এন,পি কে রাজনৈতিকভাবে একঘরে করতেই এতো কিছু ?
আমার জানা নেই। আপনাদের জানা থাকলে আপনারাই বলুন ?
দেশের সংখাগরিষ্ঠ জনতা যেখানে বহুদিন পর কোনো ব্যাপারে এতো আগ্রহ নিয়ে একত্রিতো হয়েছে, সেখানে কি আমরা পারিনা এই আন্দোলন কে দলীয়করনের উর্দ্ধে রাখতে ? পারিনা সেই সব মানুষগুলোকে দূড়ে রাখতে যারা আন্দোলন কে প্রশ্ণবিদ্ধ করে ?
এখন তো আমাদের আরো সচেতন হওয়া দরকার করন ব্লগার "থাবা বাবা" কে হত্যার মাঝ দিয়ে আন্দোলনের ভেতর যে ধর্মীয় বিভাজনের চেষ্ট চালানো হচ্ছে তা তো অনেকাংশে সফল ! কেননা ফেসবুক/টুইটার/ব্লগে মানুষ যেভাবে এর পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলছে তাতে ব্যাপারটা ভালোর দিকে যাচ্ছে না।
আমরা কি এতো বড় আন্দোলনকে এইভাবে বৃথা যেতে দিতে পারি ?
আসুন গর্জে উঠি আরেকবার..........................................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।