আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বাস অবিশ্বাসে ভুত ও ভৌতিক ( নবম অধ্যায় )



পূর্ব প্রকাশিতর পর - -আজ ছোট্ট একটা অদ্ভুত ঘটনা বলে নিয়ে আলোচনা করব ভুত-প্রেত-আত্মা নিয়ে বিশদ ভাবে বিভিন্ন ঘটনা দিয়ে। আজ আমি আর এক টা ঘটনার ক্থা জানাই । ঘটনাটি হল - তখন সবে বি.কম ভর্তি হয়েছি । কাটোয়ার কাছে করুই বলে এক গ্রামে আমার একদিদির বাড়ী । জামাইবাবু - শ্রী বাসুদেব দাশ , তিনি শিক্ষক ও আস্ট্রলজার ।

আমি যাচ্ছি দিদির বাড়ী। আমাদের বাড়ী থেকে দুপুরবেলায় খাওয়া-দাওয়া করে বেড়িয়েছি । সময় মত বাস না পাওয়ার জন্য করুই পোঁছতে সন্ধ্যা হয়ে গেল । করুই বাসস্ট্যান্ডে যখন পৌঁছলাম তখন সাড়ে সাতটা । ওখান থেকে দিদির বাড়ী পায়ে হেঁটে কুড়ি/পঁচিশ মিনিট লাগবে ।

বেশ অন্ধকার হয়ে গেছে । রাস্তা আমি চিনি কিন্তু ভয় লাগছে আমি তো এখানকার লোকের অচেনা তায় আবার অন্ধকার । আমাকে যেতে হলে মুসলমান পাড়া দিয়েই যেতে হবে এবং কবর বা গোর স্থান পার হয়ে । তেঁতুলগাছের তলা দিয়ে গোরস্থান পার হয়ে যাওয়া বেশ ভয়ের ব্যাপার। বুক ডিপ ডিপ করতে লাগল ।

রাস্তায় তেমন কোন লোকই নেই যে কাঊকে বলব একটু দাঁড়িয়ে দিতে । খুব মুশকিলে পড়েছিলাম । অগত্যা একাই হাঁটতে লাগলাম একটা সিগারেট ধরিয়ে । হাঁটছি তো হাঁটছি । অন্ধকারে বেশ রাস্তা ঠাওর করা যাচ্ছে না ।

কোন রকমে চলেছি । চারিদিকে জমাট অন্ধকার কিছু দেখা যায় না ভালোকরে । আশেপাশে কোন বাড়ী নেই ফাঁকা রাস্তা আর পাশে ক্ষেত । অনেকটা আসার পর পড়ল মুসলমান পাড়া। মসজিদ দেখে বোঝা গেল ।

এর পর সেই তেঁতুলতলা ও গোরস্থান । ঠাকুর কে ডাকছি মনে মনে । হে ঠাকুর আমায় পার করে দাও নির্বিঘ্নে । আমার প্রচন্ড ভয় করছে একা একা । হটাৎ কোত্থেকে এক মৌলবী সাহেব এসে আমার সামনে এসে উপস্থিত ।

পরনে আলখাল্লার মত পোশাক । মুখে সাদা সাদা বড়ো দাড়ি । মাথায় টুপি । আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমায় জিঙ্গাসা করলেন “কোথায় যাবে বাপ ?” আমি সভয়ে বল্লাম আমি অমুক পাড়ার অমুকের বাড়ী যাবো । উনি আবার জিঙ্গাসা করলেন “ তুমি কি এখানে নতুন আইস ছো ?” আমি বল্লাম না ।

আমি আগে এখানে এসেছি বেশ কয়েকবার । উনি আবার জিঙ্গাসা করলেন “ তা হলে তোমার ভয় করছে কেন বাপ ?” আমি বল্লাম আমি এসেছি আগে দিনের বেলায় । আজ বাস না পাওয়ার কারনে এই রাত্রী হয়ে গেল । অন্ধকার তো তাই ভয় করছে । তারপরে এই গোরস্থানে এসে পড়েছি ।

কোথায় কার গোর আছে অন্ধকারে বুঝে উঠতে পারছি না যদি পা লেগে যায় ! শুনে উনি ঈষত হাসলেন । আমি শুনেছিলাম শুক্রবার গোরস্থানে রাতের বেলায় কোন হিন্দুর ছেলেকে যেতে নেই । তাই আমার খুব ভয় করছে । আমায় একটু পৌঁছে দেবেন মৌলবী সাহেব ? তাহলে খুবই ভালো হয় । উনি বল্লেন “ বাপ ! ভয়ের কিছু নেই - আমি তোমাকে এগিয়ে দিচ্ছি চলো” ।

মনে আনন্দ এল । যাক কাউকে পাওয়া গেল । উনি সহাস্যে এগিয়ে দিলেন প্রায় বাড়ীর কাছাকাছি । আমি বল্লাম ঐ যে বাড়ী। এবার থাক ।

আমার আর কোন অসুবিধা নেই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার বড়ো উপকার করলেন আপনি। উনি সহাস্য মুখে ঠিক আছে বাপ , ঠিক আছে বাপ। এ আর এমন কি।

এ তো আমার কর্তব্য । ভালো থেকো বাপ বলে তিনিও চলে গেলেন। আমিও চলে এলাম। দিদির বাড়ী গিয়ে অনেক ক্ষণ ডাকাডাকি করার পর ভিতরে গিয়ে বল্লাম - কেন এত দেরী হলো। আর কে দাঁড়িয়ে দিল।

পরে শুনলাম ঐ মোলবী সাহেবের আগের দিন ইন্তেকাল হয়। এ এক আশ্চর্য ঘটনা। এওকি সম্ভব ? বার বার কেন আমার জীবনেই এই সব ঘটনা ঘটে কি জানি। আমিও অবাক হয়ে যাই । আরোও আছে ছোট বড়ো এরকম অনেক ঘটনা।

পরে যদি কখনো সময় পাই বলব। কাল এই ব্লগে আমি ভুত-প্রেত-আত্মা নিয়ে আলোচনা করব। বেশি দিন আর থাকা যাবে না । সময়ও বড়ো অল্প । আজ এখানেই ইতি টানলাম।

খুব ভালো থাকুন সকলে। লেখাটি চলবে - " বিশ্বাস অবিশ্বাসে ভুত ও ভৌতিক " এই শিরোনামে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.