এইখানে শায়িত আছেন বাংলা ব্লগ ইতিহাসের কলঙ্ক...
এককালের দেশের সেরা সংবাদপত্র ইত্তেফাক আজ কোন আগা মাথা বাছ বিছার না করেই নিউজ ছাপানোর জন্য স্বনামখ্যাত। অতীতে এই ইত্তেফাকের কাছ থেকেই আমার পেয়েছিলাম গুগলের টয়লেট ইন্টারনেট সার্ভিস দেয়ার খবর যা আদতে ছিলো গুগলের একটি এপ্রিল ফুলস প্র্যাঙ্ক যার মাজেজা ইত্তেফাক ওয়ালারা ধরতে পারেনি। এবারও কাহিনীটা সেইম, তবে ব্যাপারটা সঙ্গীত ভূবনের। সম্প্রতি ভারতীয় একটি হিন্দি চলচ্চিত্র Love Aaj Kal (লাভ আজ কাল) এ সঙ্গীত পরিচালক প্রীতমের সুর করা একটি গান Aahun Aahun (আহুঁ আহুঁ) এর একটি অংশ বাংলাদেশের বেবী নাজনীনের বিখ্যাত একটি গান "বন্ধু তুমি কই রে" এর সাথে হুবহু মিলে যায়। নিচে দু'টি গানেরই ইউটিউব ক্লিপ দিয়ে দিলাম:
বেবী নাজনীনের "বন্ধু তুমি কই রে"
"লাভ আজ কাল" এর "আহুঁ আহুঁ"
এ ধরনের মিলের ঘটনা এটাই প্রথম নয়।
এর আগে অনু মালিক ভারতীয় ম্যুভি মার্ডারের Jana tere pyar mein mera dil kho gaya গানটির সুর নকল করেছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্যান্ড মাইলসের "ফিরিয়ে দাও" গানটি থেকে। শুধু যে আমরা ভারতের সুর নকল করি না, ভারতও আমাদের সুর নকল করে এটা আরো অনেক আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
পুরো বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার ইত্তেফাকে একটি লেখা ছাপা হয়। লেখাটা দেখে বোঝা যাচ্ছে না আদৌ এটি তাদের কোন রিপোর্টারের লেখা নাকি পাঠকের মন্তব্য। যাই হোক নিচে ২টি অংশে রিপোর্টটির কাটিংটা দিলাম -
এখন আসছি মূল কথায় - বেবী নাজনীন আর প্রীতমের এবারের ঘটনাটি তেমন নয় যেমনটা ছিলো মাইলস আর অনু মালিকের ক্ষেত্রে।
কারন এবারের হিসেব বলছে যদিও বেবী নাজনীনের গানটি প্রীতমের গানটির আগে বের হয়েছে তথাপি বেবী নাজনীনের গানটি আসলে কোন মৌলিক সৃষ্টি নয়। "বন্ধু তুমি কই" গানটির সুর আসলে অতি বিখ্যাত একটি পাকিস্তানী পান্ঞ্জাবী Folk গান "Kadi te has bol ve (কাদি তে হাস বোল ভে)" থেকে নকল করা হয়েছিলো এবং এ গানটির রচয়িতা ও গায়ক ছিলেন পাকিস্তানের '৬০ এর দশকের বিখ্যাত Folk গায়ক শওকত আলী সাহিব।
শওকত আলী সাহিবের গাওয়া "কাদি তে হাস বোল ভে"
গানটি খোদ পাকিস্তানেই একাধিকবার রিমিক্স হয়েছে এবং এর রিমিক্স ভার্শনগুলো YouTube এ খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে। লক্ষ্য করে দেখুন, প্রীতম যে গানটি "লাভ আজ কাল" এ ব্যবহার করেছেন সেখানে শওকত আলী সাহিবের মূল গানের সুর ও কথা একই রাখা হয়েছে। তাই প্রীতমের সংস্করণটিকে আভিধানিক অর্থে নকল বলা যাবে কিনা জানি না, হয়তো রিমিক্স বা রিমেক বললে যথার্থ হবে।
আর প্রীতম এমনটা করার জন্য অনুমতি নিয়েছেন কিনা সেটা দেখা আমাদের কাজ না। বেবীর গানটির জন্য গানটির সঙ্গীত পরিচালক আশরাফ বাবু এরকম কোন দাবী তোলেননি বরং তিনি স্বীকার করেছনে যে গানটির সুর সংগৃহীত এবং বেবী নিজে তাকে এই সুরটি দিয়েছিলেন (বাবার মাধ্যমে আশরাফ বাবুর মতামত জেনেছি)। এখন কথা হলো ইত্তেফাক অবিবেচকের কোন বিচার-বিবেচনা ছাড়াই এরকম একটা সংবাদ কি করে ছাপাতে পারলো। অবশ্য সে প্রশ্ন করাটাই মনে হয় বৃথা। হাজার হোক Ittef**k তো!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।