আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৯৪৭ উত্তর বাংলাদেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের

amake aktu sadhin vabe cholte dao...... amra-o to sadhin......

“শিল্পী জয়নুল আবেদিন” জয়নুল আবেদিন বলতেই সকলের মনে পড়ে যায় ১৩৫০-এর সেই মহামন্বন্তরের কথা। এই দৃশ্য, এই চিত্র-যা কিনা মানুষের প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতম আচরণের সব থেকে মর্মান্তক উদাহরণ-আলোড়িত করেছিল এক গ্রাম থেকে শহরে-আসা নবীন শক্তিধর শিল্পীকে, তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল সেই সব অসহায় মানুষদের কাছে যারা “উচ্ছিষ্টের আঁস্তাকুড়ে বসে বসে ধোঁকে আর ফ্যান চায়। ” ইনিই জয়নুল আবেদিন-১৩৫০-এর দুর্ভিক্ষপীড়িতদের চিত্রায়ণে সার্থকতম শিল্পী। জয়নুলের জন্ম ১৯১৪ খ্রীস্টাব্দে, অবিভক্ত বাংলার ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জে। তাঁর পিতা ছিলেন সামান্য পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর-তামিজুদ্দিন আহমেদ।

ছোটবেলা থেকেই জয়নুলের ছিল ছবি আঁকার ঝোঁক, আর সে ঝোঁক এমনই প্রবল ছিল যে মাত্র ষোল বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে বন্ধুর সঙ্গে কলকাতায় এসেছিলেন গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল দেখতে। বাড়ি ফিরেও কেতাবী পড়াশুনায় তাঁর মন বসলো না ; চলে এলেন কলকাতায়। ভর্তি হলেন গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে-১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮, এই পাঁচ বছর তিনি স্কুল থেকে শিখলেন ড্রয়িং, জলরঙ, তেলরঙ আর ছাপাই ছবির কাজ। স্কুলে পড়ার দিনগুলো তাঁর কেটেছিল দারুণ অর্থকষ্টে, এমন-কি মসজিদে শুয়েও রাত কাটাতে হয়েছে সে-সময় কিছু দিন। কিন্তু তাঁর কৃচ্ছসাধন সার্থক হয়েছিল।

তিনি পাশ্চাত্য একাডেমিক রীতির চিত্রবিদ্যায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে স্কুলের ডিপ্লোমা নিয়ে বেরিয়েছিলেন। ঐ বছর একগুচ্ছ জলরঙের নিসর্গ চিত্র এঁকে একাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর বাৎসরিক প্রদর্শনীতে তিনি পেলেন গভর্নর প্রদত্ত সোনার পদক (১৯৩৮)। কলকাতায় তাঁর শিল্পী হিসাবে প্রতিষ্ঠা হল। ইতিমধ্যেই কৃতী ছাত্র হওয়ায় ছাত্র-শিক্ষক হিসাবে জয়নুলের কাজ জুটে গিয়েছিল নিজের স্কুলেই। গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে তিনি পেয়েছিলেন মনের মত পেশা আর পরিবেশ।

নতুন অধ্যক্ষ মুকুল দে ছিলেন মুক্তমনা শিল্পী। তাঁর বাল্যশিক্ষা রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে, শান্তিনিকেতনের ব্রক্ষ্মচর্য আশ্রমে। চিত্রশিক্ষা অবনীন্দ্রনাথের কাছে। নিজেকে অবীন্দ্রনাথের শিষ্য বলেই গবির্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আমেরিকায় ভ্রমণ আর অনুশীলনের সুযোগ, জাপান ভ্রমণ এবং সেখানকার চিত্রকলা চর্চার সঙ্গে সাক্ষাৎ পরিচয়, তারপর লন্ডনের শ্লেড স্কুলে গ্রাফিক্স-এর পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা আর ইউরোপের নানান সংগ্রহশালায় শ্রেষ্ঠ ছবিগুলো দেখার সুযোগ তাঁকে বিশ্বাস করতে শেখায় যে সব মহান শিল্পই সমান; শিল্পে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে কোনো অলঙ্ঘনীয় দেয়াল নেই।

এই দুই ধারার চিত্রবিদ্যা শিক্ষণই তাঁর সময়ে আর্ট স্কুলে উন্নতিলাভ করেছিল। তার ফলে উপকৃত হয়েছিলেন অনেকের সঙ্গে জয়নুলও। তিনি ‘ফাইন আর্টস’ বা পাশ্চাত্য বিভাগের ছাত্র হিসাবে শিক্ষক পেয়েছিলেন একাডেমিক রীতির বসন্তকুমার গাঙ্গুলী, সতীশচন্দ্র সিংহ ও প্রহ্লাদ কর্মকারকে। তা ছাড়া কলকাতায় অতুল বসুর সান্নিধ্যও তিনি লাভ করেছিলেন। এঁদের কারোও দ্বারা তিনি যে বিশেষ প্রভাবিত হয়েছিলেন, এমন বলা যায় না।

বরং সহপাঠী আধুনিকপন্থী দিলীপ দাশগুপ্তের সাহচর্যে উপকৃত হয়েছেন তিনি। মুকুল দের আমলে আরও যে বড় পরিবর্তন ঘটেছিল তা হল চিত্রের বিষয় হিসাবে একাডেমিক বা নব্যবঙ্গীয় রীতির বাঁধাধরা আর্দশের গন্ডিকে অতিক্রম করা-তখনকার রাজনৈতিক-সামাজিক-সাহিত্যিক পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাধারণ আর খেটেখাওয়া মানুষের জীবনকেও ছবির বিষয় করে নেওয়া। এই নতুন ধারার বিকাশ জয়নুলদের ছাত্রজীবনের এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা-যা তাঁকে ও তাঁর সহপাঠীদের প্রভাবিত করেছিল। বিদ্রোহ জয়নুল কলকাতায় এসেছিলেন ময়মনসিংয়ের দিগন্ত বিস্তৃত প্রকৃতি আর তার বুকে বয়ে চলা দুর্মদ ব্রক্ষ্মপুত্রের স্মৃতি বহন করে। মনেপ্রাণে তিনি ছিলেন সেই প্রকৃতির সন্তান; সেখানকার চাষাভুষো মানুষদের অন্তরঙ্গ।

তাই কলকাতায় পাঁচ বছর কাটিয়েও তাঁর ছবির বিষয় থাকলো ঐ ব্রক্ষ্মপুত্র নদের বিস্তার, ঐ সবুজ-সজল নিসর্গ। ঢালা জলরঙে, কখনও কিছুটা পোস্ট-ইমপ্রেসটিস্ট মেজাজে, সেই ছবিই এঁকেছেন তিনি তখন; কিংবা ধরে এনেছেন বিহারের আদিবাসী অধ্যুষিত দুমকার মেয়ে-মরদ আর পাহাড়-প্রান্তরের রূপকে। একাডেমিক রীতির বাস্তবধর্মিতায় দক্ষ শিল্পী জয়নুলের তুলি নিসর্গে আর মানুষে প্রাণের ছন্দ ফুটিয়ে তুলেছে সহজ আনন্দে। কিন্তু সব কিছুই পালটে গেল ১৯৪৩-যখন গ্রাম থেকে নিরন্ন মানুুষের মিছিল এসে জড়ো হতে থাকলো শহর কলকাতায়। জয়নুল ছুটে গেলেন নিজের গ্রামে; সেখানেও এক দৃশ্য, অনাহারী অসহায় মানুষের উদভ্রান্তি-ঘর ছেড়ে পথে বেরিয়ে পড়া।

ফিরে এলেন কলকাতায়। যুদ্ধের কারণে ছবি আঁকার কাগজের আকালে শুরু করলেন সস্তা কাগজে তুলির বলিষ্ঠ আঁচড়ে সেই দুর্ভিক্ষপীড়িত নর-নারী-শিশু-বৃদ্ধের ছবি। অসহায় আর আর্ত মানুষের এমন ছবি পৃথিবীর দীর্ঘ শিল্প ইতিহাস এতো একাত্মায় এতো ঋজুতায় আর কখনও আঁকা হয়েছে বলে জানা যায় না। এই দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা, অসহায় গ্রাম-মানুষের দুর্দশা, এক ধাক্কায় জয়নুলকে প্রকৃতি-প্রেমীর অবস্থান থেকে সমাজবাস্তবতার রূঢ় জগতে পৌঁছে দিল। তিনি দুর্ভিক্ষের কারণ বুঝলেন; চিনলেন শোষণের রূপকে; অচিরেই সভ্য হলেন ফ্যাস্টিট-বিরোধী লেখকও শিল্পী সংঘের।

তখন কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র দি পিপস্ল ওয়ার-এর ১৯৪৫ খ্রীস্টাব্দে ২১শে জানুয়ারি সংখ্যায় তাঁর তিনটি দুর্ভিক্ষের রেখাচিত্র প্রকাশিত হয়েছিল; এবং সেই সঙ্গে ছিল তাঁর ওপর বিশেষ একটি নিবন্ধ। তাতে এই বিশ্বাস ব্যক্ত করা হয় যে, জয়নুল সব সময়েই সাধারণ মানুষের সংকটে তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াবেন। এই আশা জয়নুল তাঁর সারা শিল্পীজীবনে কখনও ব্যর্থ হতে দেননি। দুর্ভিক্ষের স্কেচগুলি জয়নুল এঁকেছিলেন মোটা তুলির ক্ষিপ্র টানে। তাঁর গতিশীল রেখায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে ধূসর কাগজের ওপর কালো কালিতে ধরা মানুষের চেহারাগুলি।

কিন্তু এ কেবল অবয়ব বা গতিভঙ্গিকে ধরে রাখা নয় ; প্রতিটি চরিত্র, তা নারী, পুরুষ বা বালক, যেই হোক না কেন, চোখমুখের অভিব্যক্তিতে পৃথক, স্বতন্ত্র মানুষ। কখনও সে-মুখে অসহায় বেদনা, কখনও করুণ আবেদন, কখনও বা আবার নীরর প্রত্যাশা। না, জয়নুলের কাছে তারা ‘মানুষের ব্যঙ্গচিত্র’ নয়; প্রকৃত মানুষ, দুর্গত মানবসন্তান। কলকাতায় ১৯৪৪-এ দুর্ভিক্ষের ছবির প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছিলেন জয়নুল তাঁর ছবি তখন থেকেই সর্বস্তরের মানুষের কাছে দুর্ভিক্ষের সার্থক দলিল হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই সব স্কেচ দেখে সরোজিনী নাইডু বলেছেন, “সব থেকে আবেগপূর্ণ বাক্যের চেয়েও মর্মস্পর্শী।

” প্রবীণ চিত্র-সমালোচক অর্ধেন্দ্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায় শিল্পীকে অভিনন্দিত করেছেন তাঁর “দুঃসাহসীরূপ স্বতঃস্ফুর্ত” রেখায় আঁকা “আপোষহীন বাস্তববাদী” ছবিগুলির জন্য, তাঁকে চিহ্নিত করেছেন “জীবনের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে প্রকৃত সৌন্দর্যের পূজারী” বলে। ১৯৪৭-এ দেশ বিভাগ হলে জয়নুল চলে যান পূর্ব-পাকিস্তানে, বর্তমানের বাংলাদেশে। ইচ্ছা নিজেকে স্বভূমিতে স্বজনের মধ্যে থেকে, তাদের আশা-আকাক্সক্ষা সংগ্রামের অংশীদার হয়ে ছবি আঁকা, কলাশিল্পকে নতুন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠিত করা। কলকাতার স্থায়ী চাকরী ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে উঠলেন শ্বশুর মশাই তায়েবউদ্দিন আহমেদের আবদুল হাদি লেনের বাড়িতে। কাজ নিলেন আর্মেনিটোলার নর্মাল স্কুলে।

কিছু দিনের মধ্যেই তাঁর সহপাঠী ও সহযোগী শিল্পী কামরুল হাসান, সফিউদ্দিন আহমেদ, আনোয়ারুল হক ও অন্যান্যের সহযোগিতায় শুরু করলেন কলাশিল্প আন্দোলন-যা ঢাকার জীবনে বলা যায় অভূতপূর্ব। তাঁর উদ্যমে ১৯৪৮ খ্রীস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হল গভর্নমেন্ট ইন্স্টিটিউট অব আর্টস্-তার প্রথম অধ্যক্ষ হলেন তিনিই। এই কলাশিল্প বিদ্যালয়কে শুরুতে মৌলবাদীদের প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল, এমন-কি তার সদলবলে বিদ্যালয়কে আক্রমণও করেছিল। কিন্তু জয়নুল আর তাঁর সহযোগীদের দৃঢ়তার কাছে শেষ পর্যন্ত তাদের হার মানতে হয়। প্রতিকূলতার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত এই আর্ট ইন্স্টিটিউট-ই কালক্রমে সমৃদ্ধ লাভ করে ১৯৫৬ খ্রীস্টাব্দে আধুনিক স্থপতির নক্শায় তৈরি নিজস্ব বাড়িতে এক আদর্শ শিল্পবিদ্যালয়ে উন্নীত হয়; এবং সেই প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ কলেজ অব আর্টস্-এর রূপান্তরিত হয়ে আজ স্বাধীন বাংলার কলাশিল্পচর্চার তীর্থস্থানে পরিণত।

শিক্ষক হিসাবে তাঁর দ্বারা যাঁরা অনুপ্রাণিত হয়েছেন, তাঁরাই প্রধানত বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের অগ্রগণ্য শিল্পী। বাংলাদেশ তাঁকে তাই বসিয়েছে শিল্পাচার্যের আসনে। গুনটানা মই দেওয়া পঞ্চাশ আর ষাটের দশকে জয়নুল হয়ে ওঠেন পাকিস্তানের সর্বাগ্রগণ্যশিল্পী। এমন-কি, বলা যেতে পারে পাকিস্তান সরকারের ‘শো-পিস্’। এই সময় সরকারি আনুকুল্যে ঘুরেছেন প্রচুর-তাঁর ছবির প্রদর্শনী হয়েছে লন্ডনের বার্কলে গ্যালারিতে; লন্ডনের শ্লেড স্কুল অব আর্টস-এ ক্লাশও করেছেন তিনি কিছুদিন।

লন্ডনে তাঁর ছবির প্রদর্শনী দেখে প্রশংসা করেছেন এরিক নিউটন ও অন্যান্য চিত্র সমালোচকেরা (১৯৫২)। তাঁর এক ভ্রাম্যমান প্রদর্শনী ঘুরেছে বেলজিয়াম, প্যারিস, আঙ্কারা, ইস্তাম্বুল; তিনি যোাগ দিয়েছেন ইউনস্কো আয়েজিত ভেনিসের প্রথম শিল্প-সম্মেলনে (১৯৫২)। পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে রকফেলার ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থায় তিনি ঘুরেছেন জাপান, আমেরিকা, মেক্সিকো, ইয়োরোপ। ওয়াশিংটনে তাঁর ৫২ টা ছবি নিয়ে প্রদর্শনী হয়েছে স্মিথ্সোনিয়ান ইন্স্টিটিউটে। কিন্তু এত ঘোরাঘুরির মধ্যেও ছবির ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন জয়নুল।

দুর্ভিক্ষের স্কেচের পর তিনি নতুন এক পর্যায়ের ছবি করলেন। এই ছবিগুলিতে তাঁর চিত্রবোধ ও ভাবনা এক নতুন মাত্রা পেল। প্রতিটি চিত্রপটে ছবির বিষয়কে একক গুরুত্ব দিয়ে, পশ্চাদপটকে নিরলঙ্কত রেখে, তিনি তাঁর বক্তব্যকে সরাসরি উপস্থিত করলেন দর্শকের সামনে। এসব ছবিতে বর্ণের কিছু ভূমিকা থাকলেও, রেখাই হল প্রাণশক্তির বাহক। এই পর্যায়ের তাঁর স্মরণীয় কাজ জররঙে আঁকা ‘ঝড়’ (১৯৫০), ‘মই দেওয়া’ (১৯৫১), ‘বিদ্রোহী গাভী’ (১৯৫১) ইত্যাদি।

প্রতিিট ছবিতে প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ভাবটাকেই তিনি প্রকাশ করেছেন। এই পর্যায়ের ছবিগুলিকে বলা যেতে পারে তাঁর শিল্পীব্যক্তিত্বের সুপরিণত অভিব্যক্তি। কেননা, এই সব ছবিতে তাঁর দুর্ভিক্ষের স্কেচগুলির রেখার যে শক্তি তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চিত্রের সামগ্রিকতা, রঙে এবং বিষয়ের তাৎপর্যে-যে বিষয় প্রতীকী ব্যঞ্জনায় পূর্ব-পাকিস্তানের শ্বাসরোধকারী রাজনৈতিক অবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ইঙ্গিত দেয়। পাশাপাশি, গুয়াশে এক সিরিজ ছবি এঁকেছিলেন জয়নুল-যার অধিকাংশ হল রমণীদের প্রসাধন, জল আনতে যাওয়া, উঠোনে বসে বিশ্রাম নেওয়া ইত্যাদি। এই ছবিগুলিতে তিনি বাংলার লোকচিত্রের ঋজুতার সঙ্গে মেলাতে চেয়ছেন আধুনিক পরিশীলিত রূপবোধকে।

এই পর্যায়ের ‘গ্রাম্য ললনা’ (১৯৫৩), ‘কেশ সজ্জারত নারী’ (১৯৫৩), ‘তিনজন রমণী’ (১৯৫৩) ইত্যাদি ছবি যামিনী রায়ের লোকায়ত রূপরীতির কথা সহজেই মনে করিয়ে দেয়। তবে তার এই ধারার ছবিগুলো আরও একটু ঘনিষ্ঠভাবে দেখলে তাঁর সমসাময়িক ‘ক্যালকাটা গ্র“প’-এর প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী রথীন মৈত্র ও প্রাণকৃষ্ণ পালের শৈলীগত পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথাও মনে পড়বে। অথচ প্রতিটি ছবিই জয়নুলের যে বলিষ্ঠ রচনাশৈলী-যার বাহক ঋজুরেখা আর পোস্ট-ইমপ্রসনিস্ট ধারার বর্ণপ্রয়োগ- তার স্বাক্ষর বহন করে। লন্ডনে চিত্র-সমালোচক রিচার্ড উইলসন এই ধারার ছবিগুলি দেখে ১৯৫৫ খ্রীস্টাব্দে লিখেছিলেন যে, তাঁর ছবিতে ইন্দো-পাকিস্তান কলাশিল্প আধুনিকতার স্তরে এসে পৌঁছেছে; তিনিই হলে ভারত আর পাকিস্তানের প্রথম শিল্পী যিনি অনুকরণ না করে নিজস্ব ঐতিহ্যির সঙ্গে বিমূর্ততার আঙ্গিককে সার্থকভাবে মেলাতে পেরেছেন। কিন্তু এমন প্রশংসাসূচক মন্তব্য সত্ত্বেও জয়নুল এই পরীক্ষার পথ ত্যাগ করলেন; যেমন তারপর কয়েকটি বিমূর্ত ছবি এঁকেও তা থেকে হাত গুটিয়ে নিলেন তিনি।

বরং ফিরে গেলেন তাঁর নিজস্ব শক্তির ক্ষেত্রে-গতিশীল আর বলিষ্ঠ বাস্তববাদী ছবির দিকে। তাঁর নিজস্ব বাক্রীতিতে আঁকলেন, সম্ভবত তাঁর জীবনের সব থেকে তাৎপর্যময় ছবি, ‘সংগ্রাম’ (১৯৫৯)। এটা ১৫ ী ৬২৭৭ সেন্টিমিটারের ম্যাসোনাইট বোর্ডের ওপর তেল আর টেম্পেরার মিশ্র মাধ্যমে আঁকা। এই ছবি-কাদায় আটকে-পড়া ভারী কাঠের গুঁড়িবাহী একটি বলদে-টানা গাড়িকে প্রাণপণ শক্তিতে ঠেলে তুলছে গাড়ির গাড়োয়ান। দুটি বলদ আর একটি মানুষের এই সংগ্রাম যেন সকল প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে একক মানুষের দুর্দম প্রয়াসকেই ফুটিয়ে তুলেছে।

ছবিটির সামাজিক-রাজনৈতিক পটভূমি হিসাবে মনে রাখতে হবে ১৯৫৮-তে পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্বৈরতন্ত্রী সামরিক শাসন। দুই রমনী গোয়াশ ১৯৫১ পাইনার মা তেলরং ১৯৫৩ এই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ধূমায়িত বিক্ষোভ ফেটে পড়লো ১৯৬৯-এ। শুরু হল পূর্ব-বাংলার মানুষের বিপুল জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-লক্ষ্য পাকিস্তানের অধীনতা থেকে রাজনৈতিক আর সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা। জয়নুল ছিলেন মনেপ্রাণে বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। সেই আন্দোলনে সমবেত হলেন শিল্পীরা।

তখনকার আবেগকে মূর্ত করতে ১৯৭০-এর ফেব্র“য়ারিতে ‘নবান্ন’ চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন হল। অন্যান্য শিল্পীদের সঙ্গে জয়নুলের চিত্র প্রদর্শিত হল তাতে-একটা ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪ ফুট প্রস্থের জড়ানো-পট। এই পটের বিষয়: ‘সোনার বাংলা’। মোম, কালি আর জলরঙের ছোপে এক সারি প্যানেলে আঁকা এই ছবিটিতে তিনি তুলে ধরলেন বাংলার একদা ঐশ্বর্যশালী সুখী জীবন কিভাবে ঔপনিবেশিক শোষণে নিঃস্ব হতে হতে দৈন্যের চরম সীমায় পৌঁছল, কেমন করে গ্রামের চাষী সব হারিয়ে সর্বহারা হল, তারই মর্মস্পর্শী ইতিহাস। এই ছবি হাজার হাজার মানুষ দেখল সেই ‘নবান্ন’ প্রদর্শনীতে।

তারপর ছবিটি যখন টাঙানো হল জয়নুলের শক্তিনগরের স্টুডিওতে, তখন সে-ছবি দেখতে সেখানেও আসতে লাগল বহু মানুষ। এই সব দর্শকদের অনেককেই জয়নুল সেই জড়ানো পাটের এক পাশের ছেড়ে রাখা সাদা অংশে সই করিয়ে নিয়েছেন-উচ্চ-নীচ, নামী-অনামী অভেদে। বাঙালি কৃষকদের জীবনের এই দীর্ঘ পাঁচালিটি এঁকে উভয় বাংলার আধুনিক চিত্রকলার ইতিহাসে তিনি এক নতুন অধ্যায় যুক্ত করলেন। পূর্ব-বাংলার মুক্তি আন্দোলন যখন পাকিস্তানী সামরিক শাসনের নৃশংস দমনকে উপেক্ষা করে উত্তাল হয়ে উঠল, তাতেও পূর্ণ-আবেগে যারা দিলেন জয়নুল-যেমন একদিন। ২১শে ফেব্র“য়ারী ভাষা-আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

১৯৭১-এর ফেব্র“য়ারিতে মাওলানা ভাসানীর ডাকা ময়মনসিংয়ের এক জনসভায় বক্তৃতা দিলেন জয়নুল; আঁকলেন তার ছবি। সামরিক অপশাসনের প্রতিবাদে বর্জন করলেন পাকিস্তান সরকারের ১৯৫৯-এ দেওয়া নাগরিক সম্মান হিলাল-ই-ইমতিয়াজ। এই ভাবেই বাঙালির আত্মপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অংশীদার হলেন তিনি। জনগণের সংগ্রামের শরিক জয়নুল এর আগের বছরই ঘুরে এসেছেন মধ্যপ্রাচ্য-আরব লীগের আমন্ত্রণে প্যালেস্টাইন মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ দিয়ে এসেছেন, রণাঙ্গনের অভিজ্ঞতায় তাঁদের ছবি এঁকেছেন। জনগণের আত্মপ্রতিষ্ঠা আর মুক্তির আন্দোলনের অংশীদার জয়নুল ছিলেন প্রকৃতার্থেই এক সমাজবাদী শিল্পী- যিনি জনগণের দুঃখ আর দুর্দশাকে যেমন রূপ দিয়েছেন, তেমনই তাদের সংগ্রামকেও ফুটিয়ে তুলেছেন নানা প্রতীকধর্মী চিত্রে।

তাঁর এই পরিচয় পেয়েই ক’বছর আগে মেক্সিকোতে তাঁকে সমাজবাদী-বিপ্লবী শিল্পী বলে অভিনন্দিত করেছিলেন দাভেদ সিকেইরস। ১৯৭০-এ, যখন মুক্তি আন্দোলন তুঙ্গে, সাইক্লোন আর ঝড়ে প্রাণ হারালো পূর্ব-বাংলার সমুদ্রেউপকূলের তিন লক্ষ মানুষ। তাদের সেই দুর্দশার কাহিনীও ধরে রাখলেন জয়নুল ‘মনপুরা-৭০’ নামের তিরিশ ফুট দীর্ঘ এক জড়ানো-পটে। প্রকৃতির সামনে তাঁর দেশের মানুষ যে কত অসহায়, এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ম্যূরালধর্মী এই ছবিটিতে। এই ছবিতে প্লাবনে মৃত মানুষের স্তুপ এঁকেছেন তিনি, বলেছেন-বাঙালিরা মেলে কেবল মরণে।

বিধ্বংসী বন্যার ক্ষত শুকানোর আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল পূর্ব-বাংলার মুক্তি-সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী মুক্তিসেনার বলদীপ্ত অভিযান যথাযথভাবেই আঁকলেন তিনি তাঁর বলিষ্ঠ কালিতুলি মাধ্যমে। তাঁর দুর্ভিক্ষের স্কেচগুলির সঙ্গে এই মুক্তিসেনাদের ছবির তুলনা করলে সহজেই ধরা পড়বে বিষয় শৈলীকে কতখানি প্রভাবিত করে। যুদ্ধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা জয়নুলের সৃজন ক্ষমতার সামনে নতুন সম্ভবনা নিয়ে দেখা দিল। তিনি অচিরেই নতুন বাংলার এক শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক নেতার মর্যাদা লাভ করলেন।

মুজিবর রহমানের সরকার তাঁকে সম্মানিত করলো বাংলা একাডেমীর সভাপতি পদে আসীন করে (১৯৭২)। হঠাৎ মুখে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় তাঁকে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে চিকিৎসারও ব্যবস্থা করলো সেই সরকার। ১৯৭৪-এ হলেন বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক। ঐ বছরই ভারত সরকারের অতিথি হয়ে এসে তিনি দিল্লী বিশ্বাবিদ্যালয় থেকে পেলেন সাম্মানিক ডি. লিট. উপাধি। তার আগের বছর বাংলাদেশের শিল্পীদের এক যৌথপ্রদর্শনী নিয়ে তিনি এসেছিলেন কলকাতায়।

একাডেমি অব ফাইন আর্টস্-এ আয়োজিত সেই প্রদর্শনীতে বন্যা বিধ্বস্ত বাংলার ম্যূরালচিত্রটি দেখে অভিভূত হয়েছিল কলকাতার মানুষ। এই সময় জয়নুল কলকাতায় তাঁর পুরোনো পরিচিত বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আনন্দলাভ করেছিলেন। একাডেমি অব ফাইন আর্টস-ই তাঁকে তাঁর শিল্পীজীবনে প্রথম পুরস্কারটি দিয়েছিল, সে কথাও ভুলেননি জয়নুল। তাই একাডেমি-র সংগ্রহশালার জন্যে তিনি দিয়ে গেলেন তাঁর অমূল্য কয়েকটি কালিতুলিতে আঁকা মানুষের মুখ। জীবনের শেষ দু-একটি বছর কেবল মাত্র মুখকে বিষয় করেই তুলিকালির, কখনও কখনও মোমের ব্যবহারের সাহায্যেও, বেশ কয়েকটি বলিষ্ঠ ছবি এঁকেছেন জয়নুল।

সংগ্রাম ১৯৫৩ বাংলাদেশে তাঁর শেষ দুটি অবদান হল ‘লোকশিল্প সংগ্রহশালা’ ও ‘জয়নুল আবেদিন চিত্রশালা’ স্থাপন। ঢাকা থেকে অদূরবর্তী মধ্যযুগের বাংলার রাজধানী সোনার গাঁও-এ প্রতিষ্ঠিত লোকশিল্প সংগ্রহশালার মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর প্রিয় বাংলার দেশজ লোকায়ত কারুশিল্পের ধারাটি অক্ষুণœ রাখতে চেয়েছিলেন। অন্যদিকে, তিনি তাঁর ছবির নিজস্ব সংগ্রহ দিয়ে ময়মনসিংয়ের ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডের অধীনে স্থাপন করে গেলেন তাঁরই নামাঙ্কিত চিত্রশালাটি। এ যেন এক ঋণ শোধ। কেননা, দরিদ্র জয়নুল যখন স্নেহময়ী জননী জৈনবুন্নেসার অবশিষ্ট একমাত্র সোনার গহনা-বেচা টাকা নিয়ে কলকাতায় গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে পড়তে গিয়ে বাবার পাঠানো মাসিক দশটাকায় দিনযাপন করতে পারছিলেন না, তখন স্কুলের অধ্যক্ষ মুকুল দে-র আবেদনে এই ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডই তাঁর জন্য মাসিক পনেরো টাকার একটি বৃত্তির ব্যবস্থা করে তাঁর স্কুলের পড়া শেষ করতে সহায়ক হয়েছিল।

তা ছাড়া, ময়মনসিংয়ের মানুষ আর তার প্রবলবেগে বহমান ব্রক্ষ্মপুত্র তো ছিল তাঁর বলিষ্ঠ সৃজনশীলতার এক স্থায়ী প্রেরণা। তিনি প্রায়ই বলতেন, “যা কিছু শিখেছি, তা ঐ নদী থেকেই। ” মাত্র বাষট্টি বছর বয়সে ২৮শে মে ১৯৭৬-এ জীবনাবসান হল জয়নুলের, দুরারোগ্য ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগে। তাৎপর্যপূর্ণভাবেই তাঁর শেষ চিকিৎসা হল ঢাকার পোস্ট-গ্রাজুয়েট হস্পিটালে আর তাঁকে কবরস্থ করা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে-যেমন বাংলার বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের ক্ষেত্রেও করা হয়। তাঁর কবরস্থানে যাওয়ার একটা পথও থাকলো তাঁর প্রিয় কর্মক্ষেত্র বাংলাদেশ চারু ও কারু মহাবিদ্যালয়ের দিক থেকে।

জয়নুল আবেদিনের আধুনিকতা তাঁর ব্যক্তিমানসের আধুনিকতা-বাস্তবে যা পশ্চিম বা পূর্বের কোনো আদর্শায়িত চিত্রশৈলীকেই গ্রহণ করে নি, যর জন্ম এবং সম্ভবত মৃত্যুও তাঁর সঙ্গে সঙ্গেই। না, আধুনিকতার বুদ্ধিজাত বা মননশীল প্রকাশ নয়, তাঁর আধুনিকতার প্রকাশ রূঢ় সত্যের মূর্ত রূপে-যার প্রথম উদ্ভাস তাঁর দুর্ভিক্ষের জগতখ্যাত স্কেচগুলিতে, এবং পূর্ণ বিকাশ পরবর্তী কালের ‘বিদ্রোহী গাভী’ (১৯৫১), ‘সংগ্রাম’ (১৯৫৯), এবং ‘সোনার বাংলা’ (১৯৭০) নামক দীর্ঘ ম্যূরালধর্মী ছবিতে। কৃষীজীবনের উৎসব আর আনন্দের সঙ্গে তার দুর্দশার কথাও সবিস্তারে বলে এই সব ছবি। এগুলি যে কেবল নিপীড়িত-শোষিত-বিপর্যস্ত মানুষের দলিল, এমন নয়। তাদের প্রতিবাদ, বিদ্রোহ আর সংগ্রামকেও তিনি তুলে ধরেছেন- কখনও প্রতীকের সাহায্যে কখনও সরাসরি।

দড়ি বাঁধা গাভীর বিদ্রোহে, কাদায় ডুবে-যাওয়া-চাকা গাড়িকে বলদের সঙ্গে নিজের পেশিশক্তিকে যুক্ত করা সংগ্রামে, মুক্তিসেনার সদর্প অগ্রসরে পাওয়া যায় তাঁর সমাজবাস্তববাদী শিল্পী মনের স্বাক্ষর -যে মন কেবল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের রূঢ় বাস্তবকে প্রকাশ করে না, সেই রূঢ় বাস্তবজীবনের পরিবর্তনের সংগ্রামকেও চিহ্নিত করে। জয়নুলের ছবির চরিত্র প্রধানত নির্ধারিত হয়েছে তাদের বিষয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। এই বিষয়গুলিকে সঠিকভাবেই নির্দিষ্ট করেছেন বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর। তাঁর ভাষায় জয়নুল......‘ছবিতে তুলের ধরেছেন চাষাভুষো, মাঝিমাল্লাদের গ্রামীণ সমাজ, যে-সমাজ এক হিসাবে গ্রামের মুসলমান সমাজ। এই সমাজ আচকান টুপি কিংবা কল্লিদার পাঞ্জাবী-লুঙ্গী পরে সা¤প্রদায়িক রাজনীতি ও কবর জেয়ারত করে না।

জবি চষে, নৌকো বায়, ধান তোলে, নৌকো ও বলদের সাহচর্যে জীবন* এই সমাজ তর্ক করে না ছবি আঁকা হারাম না হালাল, এই সমাজ মেহনত করে এবং না পেলে আকালে সর্বস্ব হারায়, আবেদিন এই সমাজের মেহনতের পবিত্র আমানত ভেবেছেন এবং ঝান্ডার মতন তুলে ধরেছেন তাঁর বিভিন্ন কাজে তাঁর চাষীটিকে, মাঝিটিকে, হালের বলদটিকে, প্রিয় নৌকোটিকে, তাঁর চেনা মেয়েটিকে, মা জননীটিকে, গ্রাম্য সুন্দরীটিকে। ”


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.