আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জেএমবির সন্ধানে শিড়্গাঙ্গনে গোয়েন্দা নজরদারি



জেএমবির সন্ধানে শিড়্গাঙ্গনে গোয়েন্দা নজরদারি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ও আইটি প্রধান প্রকৌশলী রাজিবসহ ৪ জন সদস্যকে র‌্যাব গ্রেফতার করার পর সরকারের গোয়েন্দা বিভাগগুলোর টনক নড়ে যায়। রাজিব বুয়েট পানি সম্পদ বিভাগের সহযোগী গবেষক ছিল ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ২০০৩ সকালে ডিগ্রি লাভ করেন। এই ঘটনার পর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা বলেছেন, সমসত্ম শিড়্গা প্রতিষ্ঠানেই জেএমবি তৎপরতা অনুসন্ধানে গোয়েন্দা নজরদারি জরম্নরি হয়ে পড়েছে। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মেডিক্যাল কলেজসহ বিভিন্ন শিড়্গা প্রতিষ্ঠানে কিংবা সরকারি অফিস আদালতে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতেও জেএমবির সদস্য থাকতে পারে এমন আশংকা উড়িয়ে দেয়া যাবে না। বিগত সরকারের আমলে একটি মহল জেএমবির সেকেন্ড ইন কমান্ড বাংলা সম্পর্কে উক্তি করেছিলে যে, বাংলা, ইংলিশ ভাই বলতে কিছুই নেই এবং এটা মিডিয়ার সৃষ্টি।

এরপর জেএমবি ৬৪টি জেলায় একযোগে সিরিজ বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। ঐ আমলে ২৬ সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়। এর বেশির ভাগই হয়েছিল দলীয় কিংবা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। তাদের মধ্যে জেএমবির সদস্য থাকাটা স্বাভাবিক। তাদের প্রত্যেকের গোপনীয় প্রতিবেদন জরম্নরি ভিত্তিতে যাচাই করে দেখা উচিত বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা অভিমত পোষণ করেছেন।

বিগত সরকারের আমলে জেএমবির মদদদাতা ও তাদের সঙ্গে সরাসরি কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার সম্পর্ক থাকার তথ্য প্রমাণ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নিকট রয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশের আইজি নূর মোহাম্মদ বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে। এদের মধ্যে যাদের সন্দেহ হবে। তাদের বিষয়ে অতি গোপনে যাচাই করে দেখা হবে। এছাড়া বিভিন্ন শিড়্গা প্রতিষ্ঠানে গোয়েন্দা নজরদারি রাখা শুরম্ন হচ্ছে বলে আইজিপি জানান।

২০০৫ সালে জাতীয় সংসদ ভবন থেকে জেএমবির কমান্ডার ও সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাবুল আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ সময় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সচিবালয়সহ সরকারি অফিস আদালতে বিগত সরকারের আমলে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে জেএমবির সদস্য থাকার আশংকা করলে একটি বিশেষ মহলের চাপের মুখে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরকারি অফিসে মনিটরিং কার্যক্রম চালাতে পারেনি বলে জানা যায়। বিগত সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে পুনরায় পুলিশ ভেরিভিশন সংগ্রহ করা জরম্নরি বলে শীর্ষ স্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, ২০০৫ সালে সিরিজ বোমা হামলার পর থেকে জেএমবির শীর্ষ স্থানীয় নেতা-কর্মী গ্রেফতার হতে শুরম্ন করে। তারা জিজ্ঞাসাবাদে দেশব্যাপী জেএমবির মহিলাসহ দশ সহস্রাধিক শুধু সাইসাইডাল স্কোয়াডের সদস্য রয়েছে।

তাদের মধ্যে এই পর্যনত্ম অর্ধশতাধিক সুইসাইডাল স্কোয়াড সদস্য গ্রেফতার হলেও বাকিরা কোথায় রয়েছে জানিয়েছিল। এই বিষয়টি গুরম্নত্বপূর্ণ দিক বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান। সুইসাইডাল স্কোয়াড সদস্যরা সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন বিভাগে কেহ কেহ চাকরি পেয়েছে। এমন অভিযোগে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তদনত্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। জেএমবি সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ প্রয়োজন জেএমবি যে স্টাইলে ধর্মের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে, তা ইসলামসহ সকল ধর্মের বিরোধী।

এ বিষয়ে মসজিদে মসজিদে ইমাম সাহেবগণ খুতবার সময় একথা বলে থাকেন। এই বিষয়টি দেশব্যাপী সকল মসজিদে প্রতি জুমার নামাজের খুতবার সময় ইমামগণ মানুষ হত্যা মহাপাপ এবং এ সম্পর্কে ধর্মপ্রাণ মানুষের উদ্দেশ্যে বয়ান করলে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। এই প্রচারণা চালানো আইন-শৃঙ্খলা রড়্গাকারী বাহিনীর একার পড়্গে সম্ভব নয়। জনপ্রতিনিধিসহ সকল রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন পেশাজীবী ও সুশীল সমাজকে তৃণমূল পর্যায় গিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার কার্যক্রম দেশের বৃহত্তর স্বার্থে শুরম্ন করা জরম্নরি প্রয়োজন। তাহলে জেএমবি তৎপরতাসহ ইসলামের নামে যে কোন ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম সহজে রোধ করা সম্ভব বলে অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তারা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

র‌্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, জেএমবির কার্যক্রম তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শিড়্গা প্রতিষ্ঠানসহ সম্ভাব্য স্থানে র‌্যাবের মনটরিং কার্যক্রম চলছে। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে নিহত ও র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের জেএমবি সম্পর্কে রেখে যাওয়া তথ্যবহুল গাইড লাইন বর্তমানে যথেষ্ট কাজে দিচ্ছে। জেএমবির কার্যক্রম প্রতিরোধে র‌্যাব সদস্যরা নিরলস কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ডিজি জানান আবুল খায়ের

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.