ময়মনসিংহের ত্রিশালে ফিল্মি স্টাইলে পুলিশের প্রিজন ভ্যান থামিয়ে গুলি করে তিন জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে আনোয়ার হোসেন ওরফে ফারুক ওরফে সাখাওয়াত। তিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-জেএমবির একাংশের স্বঘোষিত আমির। ছিনিয়ে নেওয়া তিন জঙ্গির একজন সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীনের হাত ধরেই তার জঙ্গিজীবন শুরু। এরপর তিনি পর্যায়ক্রমে জেএমবির শুরা সদস্য মনোনীত হন। ২০০৭ সালে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি জেএমবির ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
টানা পাঁচ বছর কারাবন্দী থাকার পর ২০১২ সালে ছয় মাসের জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। এর পর থেকে পলাতক অবস্থায় জেএমবির দায়িত্ব পালন করছেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশাল থেকে ফারুকসহ অন্যরা তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেন। র্যাব কর্মকর্তারা জানান, ফারুক নিজেকে জেএমবির স্বঘোষিত আমির দাবি করেন। মূলত তার পরিকল্পনাতেই ত্রিশালের জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
তাকে গ্রেফতার করা হলে এ ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। ২০০৭ সালের ১০ জুলাই মিরপুরের নিউ সি ব্লকের একটি বাসায় অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি র্যাবের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই প্রতিবেদনে ফারুক উল্লেখ করেন- ১৯৭৯ সালে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কাজাইকাটা গ্রামে তার জন্ম। তার বাবার নাম হামিদুর রহমান। তিনি ত্রিশাল নজরুল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
বাবার চাকরিসূত্রে ফারুক ত্রিশালেই থাকতেন। ত্রিশালের একাধিক স্কুল ও মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। '৯২ থেকে '৯৫ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ রেলস্টেশন হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে তিনি হাফেজি পাস করেন। '৯৭ সালে ময়মনসিংহের গোলপুকুর পাড় কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ২০০০ সাল পর্যন্ত সেখানে পড়াশোনা করেন। ওই বছরই ময়মনসিংহ কৃষ্টপুর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে স্থানীয় কাতলা সেল কাদেরিয়া মাদ্রাসায় আলিমে ভর্তি হন।
এ সময় মাকসুর নামে এক তরুণের মাধ্যমে তিনি প্রথম জেএমবির দাওয়াতি কাজে অংশ নেন। পরে ছিনতাই হওয়া তিন জঙ্গির একজন সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীনের মাধ্যমেই মূলত তিনি জেএমবির শীর্ষ নেতাদের কাছাকাছি চলে আসেন।
২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি মোয়াজ নামে এক জেএমবি সদস্যের মাধ্যমে আবদুল্লাহ আল তাসনিম ওরফে বিপ্লব ও কারাবন্দী মাওলানা সাইদুর রহমানের সঙ্গে ময়মনসিংহের চরপাড়ায় একাধিকবার বৈঠক করেন। এ সময় তার সঙ্গে আরও কয়েক জঙ্গি উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত জোবায়ের ওরফে রফিকুল ওরফে রাসেলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে জোবায়েরের বোন শাহিদাকে বিয়ে করেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।