তিনি সাকলে হাঁটতে বের হয়েছিলেন রোগমুক্তভাবে একটু বেশিদিন বাঁচার আশায়। কিন্তু ঘাতক প্রাইভেট কারের ধাক্কায় শুধু আশাভঙ্গ করেনি, দুই সনত্দান ও স্বামীর কান্না হয়ে রইলেন। এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক পরিমল সাহার স্ত্রী প্রয়াত অনিমা রানী সাহা। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার আবাসিক এলাকায় জগন্নাথ হলের দেয়াল ঘেষে হাঁটছিলেন অনিমা রানী সাহা। এমন সময় একটি প্রাইভেট কার পেছন থেকে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা দেয়।
এতে দেয়ালে বাড়ি খেয়ে তাঁর মাথা ফেটে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। দূর্ঘটনার সময় প্রাইভেট কারের চালক ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩য় বর্ষের ছাত্র ফাহিম হায়দার। চালককে আটক করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কথা স্বীকার করেছে।
ইতিপুর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অনেকবারই দূর্ঘটনা ঘটেছে। ততক্ষণাৎ শুরু হয়েছে কিছু আন্দোলন। সেখান থেকে পেশ করা হয়েছে কিছু দাবি দাওয়া। যার কিছু কিছু বাসত্দবায়নও হয়েছে। কিন্তু এর শেষ কোথায়? আর কত সনত্দান তার মাকে হারাবে, কত বাবা-মা তার সনত্দানকে হারাবে।
এটি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ঢাকা শহরের প্রায় সর্বত্রই আমাদেরকে আশঙ্কায় থাকতে হয়। কয়েক বছর ধরে শুরু হলেও ইদানিং কিছু ধনীর দুলালকে রেসিং কার অথবা মোটর সাইকেল নিয়ে বিকট শব্দে হর্ণ বাজাতে বাজাতে ঢাকার সড়কগুলিতে বেপরোয়াভাবে ছুটতে দেখা যায়। যা দূর্ঘটনার কারণ ছাড়াও অতিরিক্ত শব্দে মানুষের মাঝে চরম বিরক্তি উৎপাদন করে চলেছে। যেন ঢাকা শহরের সড়কগুলি তাদের রেসিং ট্র্যাক। এসব ঘটছে আমাদের প্যারালাইসড্ প্রশাসনের সামনেই।
আর শুনেন, দুলাল সাহেবদের বাবা-মায়েরাতো পয়দা করেই খালাস। এরপর তারা শুধুমাত্র অর্থের পেছনে ছোটা আর অদুরে এবং সোহাগীদের বায়না পূরণ করতে দিয়ে যান অফুরনত্দ যোগান। কখনও খেয়াল করবার ফুরসৎ নেই তাদের সোণামুনিরা কি করেন। আর খেলাচ্ছলে কতজনের সর্বনাশ করে চলেছেন।
আমাদের প্রশাসন আর ধনীগোত্র আপনাদের কবে বোধোদয় ঘটবে।
কবে সমাজের এইসব ননসেন্সদের একটু বোঝার সুযোগ করে দেবেন। দূর্ঘটনা ঘটার পর! যেমনটি হয়েছে ফাহিম হায়দারের বেলায়। সেওতো মেধাবী একজন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পড়ছে, ভবিষ্যতে দেশের মানুষ তার কাছে অনেক কিছু আশা করে। আর অধ্যাপক পরিমল সাহার পরিবার প্রতিটি সন্ধ্যায় অনুভব করবে প্রিয় মানুষটির অভাব।
আমরা আর কান্না চাই না, তাই অবিলম্বে ঢাকা শহরে প্রাইভেট কার ও মোটর সাইকেল এর বেপরোয়া গতি রোধে যার যার নিজের অবস্থান থেকে উদ্যোগ নিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।