আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
যতই আশা করি ততই FOOL হইয়া যাই। নিজেরে মাঝে মধ্যে আশরাফুলের মতো মদন মনে হয়। দুঃখ রাখার পকেটও নাই ইদানিং, কারন এখনকার শার্টে বুক পকেট হয় না। বেশী কিছু তো চাই নাই, একটু নীচে নামুম, ঘাড়ের ব্যায়াম একটু আকটু করুম, চক্ষু জুড়ানোর জন্য কিছু মিছু দেখুম তার পর একটা কলা খাইয়া আসুম।
কিন্তু ঘাড় ঘুড়ানোর সাথে সাথে মোবাইলটা কাউ কাউ কইরা উঠো। মাঝে মধ্যে মনে হয় মোবাইলটা আমার সাথে দুই সতীনের মতো আচরন করতাছে। কথায় আছে অভাগা যেইখানে তাকায় আটলান্টিক ইনস্ট্যান্ট শুকায়।
মিটিং এর কল পেয়ে ডায়েরী নিয়ে উপরে উঠতেই শুনি আমাকে বস বান্দরখোজা খুজতেছে। আমি কি করুম বুঝতে না পাইরা সীটে হেডফোন লাগাইয়া গান শুনার ভান কইরা বইসা রইলাম।
কিছুক্ষণ পর একজন এসে বললো, আপনে এইখানে কেন? তাড়াতাড়ি মিটিং এ যান!
এই হলো আমার অবস্হা, মিটিং এর মধ্যে সিটিং কইরা চিপা খাইতাছি। সকালে আইসাই একটা মেইল দেইখা মনটা কামরুখ কামাখ্যা চইলা গেলো। সকাল ৮:৪৫ মিনিটের মধ্যে এখন থেকে রিপোর্টিং করতে হবে নাইলে পার্ফরমেন্সে এটা প্রভাব পড়ায় দেবে। আমি প্রমাদ গুণি কারন আমার কারনেই সবাইকে এ মেইল দেয়া হইছে এই বিষয়ে সন্দেহ নাই। অফিসে এতদিন আসতাম নিজের ইচ্ছায় আর যাইতাম বসের ইচ্ছায়।
কিন্তু বস আর আমার ইচ্ছার উপযুক্ত মূল্য দিতে চাচ্ছেন না।
তবু আশা ছাড়ি নাই, কারন আমার পকেটে কোনো আশাও নাই (আশা আইছিলো কবে এইডাও জানি না)। কিছুক্ষন আগে আমার এক কলিগ যাইয়া বসেরে সরাসরি জিগায়," এখন কি করবো, বইসা থাকতে থাকতে আর্থ্রাইটিস হইয়া গেলো কোমড়ে!" বসের মনে হয় রসিকতা পছন্দ হয় নাই। কারন সেই যে সীটে ৩ টা থেকে উনি আইসা বসলো এখনো উঠার নাম নাই। ভয় হচ্ছে আজন্ম এখানেই না উনি বসে থাকেন! বস আরেকটা কাজ করছে সবাই কি কাজ করবে, রেসপন্সিবিলিটি কি সেটা পাঠিয়ে দিয়েছে।
আমি অন্য কারো খবর জানি না, আমি আমার টা দেখে মনে হলো এই টার্ম গুলো শিওর এ্যালিয়েনরা দিয়ে গেছে। বাপের জন্মে এসব দেখি নাই শুনি নাই, কিন্তু আমি এটার উপর কাজ করছি সেটাও আমি কেবল জানলাম। এমুন কনফিডিন্সিয়াল জিনিস মনে হইলো এগুলারে যে আমি যেই কাজ করছি সেইটা যে এগুলাই সেটাও জানতাম না। জানুম কেমনে , আমিতো আর জাননে ওয়ালা কেউ না।
নিজেরে নিয়া আজ বড়ই হতাশ।
কোন জায়গার কোন বোলগার আমারে জিজ্ঞাস করলো ফোন দিয়া বিয়ার দাওয়াত কেনো দেই না, আমার বৌ বুয়েটের কোন ব্যাচ, কোন জায়গায় জব করে ইত্যাদি। আমি একটা ধমক দিয়া কইলাম," আগে এইডা কও, আমার বৌ এর চেহারা কেমুন? সুন্দর হইলে কিছু কমু না, অসুন্দর হইলে তুমার খবর আছে?"
সে কয়," মানে? তুমার নাকি গত শুক্রবার বিয়া হইছে, বিয়ার অনুষ্ঠান মিরপুর ১১ নম্বর হইছে, ৪০০ জনের মতো লোক আসছিলো, এইসব আমার কাছে লুকাইলা কেন?"
আমার মেজাজ চইড়া আরো সপ্তমে উঠলো, আজকা সকালে কার চেহারা দেইখা উঠছিলাম সেইডা মনে করার চেস্টা করলাম। মেজাজটারে শান্ত কইরা কইলাম," ঐ বিয়ায় আমারে দাওয়াত দিছিলো? আমারে দাওয়াত দেয়া হইলো না আমার বিয়ায় হেইডাই আমার মাথায় ঢুকতাছে না, তুমি কেমনে বুঝবা ঘটনা কি?"
: মানে?
: মানে হইলো গুলশানে এখন নৌকা চলে, আমি নৌকায় না উইঠা উঠছি ট্রলারে, এখন ট্রলারের নীচে তিমি মাছ বাইজ্জা গেছে, এখন আমার ট্রলার ডুবে। ফের যদি এমুন শয়তানী করো শেওড়া গাছে বাইন্ধা পিডামু! ফুট!
এইডা কইয়া ফোন রাইখা দিলাম। আমার সাথে শয়তানী করার সুযোগ পাইলে এলাকার পিচকি পাচকা পর্যন্ত চান্স মিস করে না, আর এরা কোন ছাড়!
তবে শুভ্র আমারে ফোন দিয়া আমার মেজাজের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকলো।
: হ্যালো, তুমি কৈ?
: আবার কৈ? খাটের তলে বইসা ডুগডুগী বাজাইতাছি!
: মেজাজ গরম কেন? অফিস থিকা বাইর হবা কখন?
: আমি জানি না, দরকার হইলে বসের নম্বর লও, তারে জিগাও রনি বাইর হইবো কখন?
: ও আচ্ছা, শুনো তুমার লগে দেখা করতে মন চাইতেছে?
: কোন সুখে?
: আরে সুখের কি আছে, তুমার সাথে অনেক দিন দেখা হয় না। চলো আজকে দেখা করি।
: শুনো, কালকা রাইতে ঘুমানোর আগে আমি পোলা ছিলাম, ঘুম থিকা উইঠা পোলা হিসাবেই আছি, আগের সেই কালা কিম্ভূত চেহারাডারও কোনো চেন্জ্ঞ হয় নাই। আর জাদুঘরের মতো দর্শনীয় কোনো জিনিসও না আমি। কি কাম খুইলা কও, নাইলে ফোন রাখলাম!
: আরে ধুর, চেতো কেন? ওয়েট, আমার গাড়ীতে উইঠা লই!
: ঐ মিয়া গাড়ী কিনলা কবে?
: আরে ধুর, কইতে পারো নিজেরই, অফিসের গাড়ীতে লিফট লইতাছি।
আইচ্ছা শোনো তোমার কথা আমি শুনতে চাই। তুমার কি অবস্হা সেইডা আমারে জানাও!
: (মেজাজ সপ্তমে চড়ার পর যদি অস্টমে চড়ার এক্সেস থাকে তাইলে সেইটাতে চইড়া গেলো) আমি কি এখন আমার কথা কইতাছি নাকি লেডী ডায়ানার কথা কইতাছি?
: চলো না দেখা করি?
: শোন নেক্সট টাইম দেখা করলে ক্যামেরা লইয়া আইবা আমার ছবি তুইলা ওয়াশ কইরা বুকে একখান লইবা আর একখান তুমার শুওনের ঘরে ঝুলাইবা। পরান ভইরা আমারে দেখবা আর ঘুমাইবা। অখন রাখি। আইজকার মধ্যে আর জ্বালাইবা না!
ফোন রাইখা চারিদিকে তাকাইয়া দেখি আমারে সবাই দেখতাছে।
চিন্তা করলাম নিজে নিজে ভালগার কিছু কইছি কিনা। পরে অনুভব করলাম রাগের জায়গায় একটু লজ্জা লাগতাছে!
যাই হোউক, আজকার দিনটা আমার পুরা ক্যাড়ফা!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।