আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদ্রোহ ১৯৭৭ এর টুকরো চিত্র ও BDR বিদ্রোহের পর ইতিহাস জিয়া ও হাসিনাকে কিভাবে মুল্যায়ন করবে?

ব্যস্ত শহর ঠাঁস বুনটের ভিরে আজো কিছু মানুষ স্বপ্ন খুজে ফিরে........

বিডি আর বিদ্রোহ কি,কিভাবে হয়েছে,আর সমাপ্তি কিভাবে তা সবারই জানা তাই সেই দিকে গেলাম না। কিন্তু ৭৭ সালের বিদ্রোহ অধিকাংশের কাছেই অজানা কিংবা অসচ্ছ। তাই এটা নিয়ে জানা তথ্য কিছুটা ভুমিকাতে শেয়ার করে নিচ্ছি। ৭৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাপানি রেড আর্মি একটি ডিসি-৮ বিমান ছিনতাই করে। আর সেটিকে জোর করে অবতরন করায় ঢাকার পুরাতন তেজগাঁও এর বিমান বন্দরে।

সেই বিমানে ১৫৬ যাত্রি ও ক্রো ছিল। মুক্তিপন হিসাবে তারা জাপান সরকার কাছে অর্থ ও তাদের আটক সদস্যদের মুক্তি দাবি করে। টানা ৪ দিন তারা হাইজাক করা বিমান নিয়ে ঢাকা অবস্থান করে। বাংলাদেশ বিমান বাহীনি,সরকার এর মধ্যস্ততায় জাপান সরকারের বিমান মন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাদের দাবি মেনে নেয়া সাপেক্ষে সেই হাইজাক নাটকের অবসান হয়। কিন্তু সেই দিনই অর্থাৎ ২ অক্টোবর এই হাইজাক নাটকের অবসানের মিনিট খানেক পর বাংলাদেশ বিমান বাহীনিতে আকস্মিক ভাবে ছড়িয়ে পরে এক বিদ্রোহ!!সেনারা লাইনে দাড় করিয়ে হত্যা করতে থাকে কর্মকর্তাদের,অল্পের জন্য বেঁচে জান বিমান বাহীনির প্রধান।

যদিও তার আগে ৩০ সেপ্টেম্বর ছোট খাটো একটি বিদ্রোহের সুচনা হয় বিমান বাহিনীতে বগুড়ায়। সেটি সাথে সাথে দমন করা গেলেও ঢাকার বিদ্রোহ প্রকট হয়ে যায়। তারা অল্প কিছু সময়ের জন্য রেডিও স্টেশন পর্যন্ত দখল করে। ব্যার্থ হামলা চালায় জিয়ার বাসায়। সেই বিদ্রোহ দমন হবার পর,সাথে সাথে গঠিত হয় বিশেষ ট্রাইবুনাল।

তাতে ১৪ শ বিমান,সেনা সদস্য ও নন কমিশন্ড কর্মকর্তা,শত শত অফিসার ও সাধারন সৈনিকদের ফাঁসি ও ফায়ারিং স্কোয়াডে পাঠানোর আদেশ হয়। বিদ্রোহের ৭ দিনের মাথায় শুরু হয় ফাঁসির কার্য্যক্রম,যা চলে প্রায় ৩ মাস ধরে। জিয়া সে সময় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের অপ্সারন সহ ৩ চিফ অফ দ্যা জেনারেল স্টাফ কে বদলি করেন। তাদের একজন মেজর জেনারেল মনজুরের নেত্রিত্বে ৮১ সালে জিয়া নিহত হন। জিয়া যে কাজটি করেছেন মাত্র ৭ দিনে ১৪শ জনের ফাঁসি সেটিও কতটা যৌক্তিক?একজন করে আসামির বক্তব্য শুনলেও ১ মাস লাগার কথা! সেখানে ৭ দিনে মাঝে এত গুলি মানুষিকে ফাঁসি!!!!কে জানে এদের মাঝে কত জন সম্পুর্ণ নির্দোশ ছিল!!!যদি ১ জনও নির্দোশ অফিসার ফাসিতে ঝুলে তার দায় কিভাবে এড়াবে তখনকার সরকার? সামরিক শাসক জিয়া সকল মানবিকতা ও মানবাধিকার কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে বলা যায় নির্বিচারে ফাঁসি দিয়েছেন।

এদিকে হাসিনার গনতান্ত্রিক সরকারের সময় ২০০৯ সালের বিদ্রোহের আড়াই মাস পার হলেও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ হয়নি!যদিও প্রথমে মাত্র ৭ দিনের মাঝে সেটি দিতে বলা হয়েছিল!সেটি কয়েক দফা বাড়ালেও আজো আলো দেখেনি! বিচারে এমন বিলম্ব হলে সেটি কি সত্যিকারের কোন ফল বয়ে আনবে?নাকি ক্ষোভের সঞ্চারে আবারো এমন ঘটনার জন্ম দিবে? আমরা কিন্তু ৭৭ সালের সেই বিদ্রোহ দমনের যে অদূরদর্শি পন্থা ও তার পরের যে পদক্ষেপ ছিল তার ফলাফল দেখেছি। ইতিহাস সামনের দিন গুলিতে আমাদের হয়ত বলে দিবে হাসিনার ভুমিকা কতটা সঠিক হচ্ছে আর এর ফলাফলটাই বা কি হবে!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।