সাবধান!! এখানে সিআইএ-র গোপন ক্যামেরা আছে
আজ দুপুর দু`টার দিকে ধানমন্ডির সাতাশ নাম্বার রোডে নন্দন মেগাশপের সামনে দাঁড়িয়ে এক বন্ধুর অপেক্ষা করছিলাম। কথা হয়েছে দু`জন একত্রে লাঞ্চ করবো। ঐ শালার আবার কাণ্ডজ্ঞান একটু কম। বলবে পাঁচ মিনিট কিন্তু অপেক্ষা করিয়ে রাখবে ত্রিশ মিনিটেরও বেশি। খানিকপর একটি রিকশা নন্দনের গেটে থামে।
হুডতোলা রিকশার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে একজন ঝলমলে নারী। পশ্চিমা ঢংয়ে পোশাক পরা নারীটির চোখে বর্গাকার সানগ্লাস। তার জন্য সময় কিছুটা থমকে দাঁড়ায়।
হঠাৎ সেই নারীর উচ্চকন্ঠ শুনতে পাই। গলা সপ্তমে চড়িয়ে বলছে "তোকে একটা চড় মারা উচিত''।
বেচারী রিকশাওয়ালা মিনমিনে গলায় বলছে " আফা,ভাড়া পনর ট্যাকাতো আমি আফনেরে আগেই কইছি। অহন দশ ট্যাকা দিবেন কেন"? বুঝলাম ভাড়া নিয়ে লেগে গেছে। নারীটি তার বাজখাই গলায় চেঁচিয়েই যাচ্ছেন। দেখতে দেখতে কিছু নাট্যপ্রিয় জনতার ভিড় জমে গেল। রিকশাওয়ালা চলে যেতে চাচ্ছেন কিন্তু বীরাঙ্গনা তাকে রিকশাসহ টেনে ধরছেন।
যেইমাত্র রিকশাওয়ালা একটু জোরে টানলেন অমনি বীরাঙ্গনা ঠাস ঠাস করে চড় লাগিয়ে দিলেন। শশ্রুমন্ডিত রিকশাওয়ালাটি ঘটনার আকস্মিতায় একেবারে বাকরুদ্ধ গেলেন। সেই বীরাঙ্গনার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। উপুর্যপুরি আঘাত করেই চলেছেন। সেইসাথে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ।
কখনো ধীর লয়ে,কখনো দ্রুত লয়ে আবার কখনো রক মিউজিকের মতো তার গালিবৃষ্টি ঝরতে লাগল। ওই অসহায় বৃদ্ধ দু`হাত জোর করে শুধু ক্ষমাই চেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মুক্তি মিলছেনা। অন্য কয়েকজন রিকশাওয়ালা এসে অগ্নিকন্যাকে শান্ত করার চেষ্টা করে। কিছুটা শান্ত হয় বটে কিন্তু ক্ষ্যাপা ষাড়ের (গাভী) ন্যায় ঘড়ঘড় করতেই থাকে।
আর বীণার ঝংকার ছড়ানো গালির সুর টেনেই যাচ্ছেন। বৃদ্ধ রিকশাওয়ালা ক্ষোভে,তীব্র অপমানে দু`হাতে মুখ ঢেকে বসে পড়ে। যেন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে মিশে যেতে চাইছে নশ্বর ধুলোয়। বেচারী অবশেষে ভাড়া না নিয়েই চলে যায়। অগ্নিকন্যা শীতল হতে হতে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে।
এতক্ষণ বীরত্ব দেখানোর পর এই মহীয়সী রমণীর ক্রন্দন আমাকে অবাক করে।
আমরা এতগুলো মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই ভয়ংকর দৃশ্যটা দেখলাম। কেউই কোনো প্রতিবাদ করলাম না। আমাদের নির্লিপ্ততা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।