এই স্কুলে আমি কখনই বাথরুমে যাইনি। (তাই বলে আবার মনে করবেন না ইউনিফর্ম পরেই কাজ সারতাম)। বাথরুমে যাতে না যেতে হয় সেজন্য পানি খুব কম খেতাম। শুধু টিফিন পিরিয়ডে এক চুমুক খেয়ে নিতাম। এর কারণ ছিল কয়েকটা পাজী টাইপের মেয়ে স্কুলের বাথরুম নিয়ে উল্টাপাল্টা গুজব ছড়িয়ে ছিল।
দুইটা বাথরুম ছিল, তারা বলত একটাতে গেলে একটা সাদা রঙের হাত বের হয়ে আসে, আর একটাতে সোনালী রঙের হাত আসে। আমিও বোকার মত সব বিশ্বাস করতাম। আমি এখনও জানিনা ঐ স্কুলের বাথরুম দুইটা কোথায় ছিল।
স্কুলের অংক স্যার আমাকে খুব স্নেহ করতেন। কারণ ক্লাসে সব সময় আমি ঠিকমত অংক করতে পারতাম।
আমার পুরো অংক খাতা জুড়ে সেই স্যারের দেয়া বিভিন্ন ডিজাইনের very good লেখা ছিল। একবার পরীক্ষায় অংকে ১০০ পাওয়ার পর উনি ক্লাসেই আমাকে কোলে তুলে নিয়েছিলেন।
বছর শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আমার একটা একক নৃত্য ছিল। আমার ছোট বোনও নাচত। রিহার্সেলের সময় ওর নাচ দেখে হেডস্যার আম্মাকে বলে জোর করে ওকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে নিয়েছিলেন, যাতে অনুষ্ঠানে সেও নাচতে পারে।
আমি লাল শাড়ি পরে "ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে" গানের সাথে নেচেছিলাম। আর আমার ছোট বোন গোলাপী ফ্রক পরে "মোমের পুতুল" গানের সাথে নেচেছিল। স্টেজে কার্পেট পাতা ছিল যেটার এক জায়গায় ছেঁড়া ছিল। নাচতে নাচতে সেখানে পা আটকে সে ধপাস করে পড়ে গিয়েছিল। সবাই হায় হায় করে উঠল, কিন্তু পরক্ষণেই আবার সাবাস সাবাস বলতে থাকল, কারণ সে এক সেকেন্ডও দেরী না করে উঠে দাঁড়িয়েই আবার নাচতে শুরু করে দিয়েছিল।
অনুষ্ঠান শেষে আমাদের দুজনের জন্যই একটা সারপ্রাইজ ছিল। আমাদের প্রিয় ছোট মামা কখন এসে অনুষ্ঠান দেখছিলেন আমরা জানিইনা। তাকে দেখে আমরা দুজন মামা মামা করতে করতে তার কোলে উঠলাম।
আমার নাম আর আমাদের ক্লাসের ফার্স্ট গার্লের নাম একই ছিল। সেই মেয়ের বাবা আমাকে একদিন বলেছিলেন, দেখি এরপর কে ফার্স্ট হয়।
পরে আমরা কেউই হতে পারিনি, আমি হয়েছিলাম থার্ড, আর সেই মেয়ে অনেক পেছনে চলে গিয়েছিল। পরের ক্লাসে বেশীদিন ক্লাস করতে পারিনি, আম্মা আমাকে আরও অনেক বড় স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। সেই গল্প আরেক দিন।
আগের পর্বগুলো...
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।