আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাশ্রয়ী পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নৌপথের সংস্কার জরুরী



নৌ-পরিবহণ সবচেয়ে সাশ্রয়ী মাধ্যম। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নৌ-পরিবহণ খুবই জনপ্রিয় এবং প্রধান মাধ্যম। দেশে বহুকাল থেকে নৌ-পরিবহণ সুবিধা থাকলেও এটি এখন ধ্বংসের পথে। দেড় যুগ ধরে নৌপরিবহণ খাতটি যাত্রীসেবার পাশাপাশি লাভজনকভাবে চললেও এর উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন হয়নি। চার পাঁচ দশক আগে চলাচলের অযোগ্য ঘোষিত প্যাডেল স্টিমার দিয়ে এখনও কাজ চলছে।

প্রয়োজনের তুলনায় যার সংখ্যাও খুবই কম। কেবল ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বরিশাল নৌরুট নয়, দেশের সকল নৌপথেই সরকারি-বেসরকারি খাতের উন্নয়ন-বিকাশ প্রয়োজন। আমাদের শত সীমাবদ্ধতা কটিয়ে নৌ-পরিবহণের উন্নয়নে কাজ করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে নদ-নদীর নাব্যতার জন্য খনন ও নদীর প্রশস্থতা ঠিক রাখতে হবে। এছাড়া বেসরকারিখাতে নৌযান পরিচালনায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধান জরুরী।

নদী মাতৃক বাংলাদেশে সত্তর দশক পর্যনত্দ নৌপথ ছিলো যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণের প্রধান মাধ্যম। তখন এদেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৮ হাজার কিলোমিটার। যা বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে ৬ হাজার ৮শত কিলোমিটার এবং শুকনা মৌসুমে ৩ হাজার ৮শত কিলোমিটারে কমে এসেছে। শুষ্ক মৌসুমে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় বড় আকারের নৌযান নয়, ছোট ছোট নৌকা-ট্রলারও নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে না। প্রধান রুটগুলিতেও নৌযান চলতে গিয়ে প্রায়ই চরে আটকে ক্ষতিগ্রস্থ ও যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হয়।

এখনও যতটুকু নৌপথ অবশিষ্ট রয়েছে তা সচল রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। নৌপথ সচল থাকলে যাত্রী ও মালামাল পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ সাশ্রয়ী এবং ভ্রমণ আরামদায়ক। নৌপথের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে সড়কপথের উপর নির্ভরশীলতা কমবে। যা সড়ক নির্মাণ ও সংরক্ষণ ব্যয় হ্রাস করবে।

এছাড়া প্রতিবছর সড়ক নির্মাণের জন্য ফসলি জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন পড়বে না। পরিকল্পিত ডেজিংয়ের মাধ্যমে নদ-নদীর নাব্যতা ঠিক থাকলে নৌপথ পরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। মৎস সম্পদের উন্নয়নেও নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। সেক্ষেত্রে নদ-নদীর নাব্যতা রক্ষায় নিয়মিত ড্রেজিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে। বাঁধ ও ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে নদীর নাব্যতায় বিরূপ প্রভাব ফেলবে কিনা এবং নৌযান নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে পূর্বেই গবেষণা করা জরুরী।

এছাড়া ঢাকা শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে নৌপরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা গেলে সুফল পাওয়া যাবে। ঢাকা শহরে একসময় প্রচুর খাল-নালা ছিল। যার বেশিরভাগ সংস্কারের অভাবে শুকিয়ে গেছে অথবা দখল করে ভরাট করা হয়েছে। এসব খাল উদ্ধার করে সংস্কারের মাধ্যমে নৌপরিবহণ চালু করা গেলে মানুষ যানজট এড়িয়ে চলচলের আরেকটি সহজ মাধ্যম ফিরে পাবে। এছাড়া নৌপথে মানুষের চলাচল খরচ সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি মালামালও সসত্দায় পরিবহণ করা যাবে।

খালগুলি পুনরুদ্ধার করা গেলে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যাও দূর হবে। সেক্ষেত্রে ঢাকার খালগুলি অতিসত্ত্বর সংস্কার করে নৌপরিবহণ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.